ষাঁড়ের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে তিন হাজার মানুষ
গত ১৫ই আগস্ট ভারতের উত্তর প্রদেশের কুর্দি গ্রামে 'বাবুজি'র মৃত্যুতে পুরো সপ্তাহজুড়ে গ্রামটিতে চলেছে শোকের মাতম। না এই বাবুজি রক্ত-মাংসে গড়া কোন মানুষ নয়, বরং একটি ষাঁড়; ২০টি বছর গ্রামের মানুষগুলোর সাথে যার বাস ছিল।
গ্রামের মানুষেরা তাদের প্রিয় এই ষাঁড়টিকে তাদের পরিবারের বয়োজেষ্ঠ্য সদস্যের মর্যাদা দিতেন। তাইতো বাবুজির মৃত্যুতে গ্রামটিতে সম্পূর্ণ রীতি মেনে অনুষ্ঠিত হয়েছে শেষকৃত্য; সেই সঙ্গে আয়োজন করা হয়েছিলো এক মহাভোজের। টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন শ্মশানে।
আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শনিবার বাবুজির শেষকৃত্য উৎসবে প্রায় ৩ হাজার মানুষ অংশ নেয়। 'তেরাভি' নামের এই অনুষ্ঠানে পুরোহিতরা ষাঁড়টির আত্মার জন্য মন্ত্রপাঠ করেন। এছাড়া, তার ছবিতে নগদ টাকা ও ফুল দিয়েও সম্মান জানানো হয়।
গ্রামের মানুষেরা জানান, তারা ষাঁড়টিকে পরিবারের সদস্য হিসেবে দেখতেন এবং তাকে ভগবানের পক্ষ থেকে 'স্বর্গীয় উপহার' মনে করতেন।
ছোটবেলায় ষাঁড়টিকে গ্রামের একটি পবিত্র স্থানে ঘোরাফেরা করতে দেখা যেতো। ফলে অনেকেই তাকে হিন্দু দেবতা 'নন্দি'-এর নামে ডাকতেন।
হিন্দু পরিবারে বয়োজেষ্ঠ্য পুরুষ সদস্য মারা গেলে যে সকল নিয়ম ও রীতিনীতি মেনে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়, বাবুজির মৃত্যুতেও ঠিক সে সকল রীতির অনুসরণ হয়েছে।
ভারতের বিভিন্ন অংশে গরুকে পবিত্র মনে করা হয়। গরু জবাই এবং গরুর মাংস খাওয়াও কিছু রাজ্যে নিষিদ্ধ। এমনকি গরুর দেখাশোনা ও কল্যাণের জন্য দেশটির মধ্য প্রদেশে 'গো মন্ত্রীসভা'ও রয়েছে।
এ বছরের মে মাসে ভারতে অনেক মানুষকেই গোবর এবং গোমূত্র দিয়ে গোসল করতে দেখা যায়। তাদের বিশ্বাস এটা করোনার বিরুদ্ধে তাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তুলবে। তবে, ডাক্তাররা তখন থেকেই এই অভ্যাসের বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, করোনা প্রতিরোধে এ ধরণের কর্মকাণ্ডের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
- সূত্র- ইনসাইডার