'পূর্ণ স্বাধীনতা অবশেষে...', শেষ আমেরিকান সৈন্য আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ায় তালেবানের বিজয় উদযাপন
দীর্ঘ ২০ বছরের আফগান যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে রাজধানী কাবুল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ ফ্লাইটটি ছেড়ে যাওয়ার পরই আনন্দ-উদযাপন করতে দেখা গেছে তালেবান সদস্যদের।
মধ্যরাতে কাবুল বিমানবন্দর ত্যাগ করে আমেরিকান সেনাদের সর্বশেষ ফ্লাইটটি।
ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি বিবিসিকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে সঙ্গে করে সর্বশেষ সি-১৭ বিমান কাবুল ছেড়েছে। তিনি আরও জানান, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে যারা এখনো কাবুল ত্যাগ করতে পারেননি, তাদের সহায়তা করার কূটনৈতিক মিশনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের পরপরই তালেবান নেতারা কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়েতে হেঁটে প্রতীকী উদযাপন করেছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এপি।
হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একমাত্র রানওয়ের উত্তর দিক দিয়ে তালেবানের যানবাহনগুলো এগিয়ে চলছিল। ভোর হওয়ার আগেই, সশস্ত্র তালেবান যোদ্ধারা বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গারের মধ্য দিয়ে হেঁটে যায়। এসময় স্টেট ডিপার্টমেন্টের অপসারণ কাজে ব্যবহৃত সাতটি সিএইচ-৪৬ হেলিকপ্টার অতিক্রম করে তারা।
তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ তাদের পোস্ট করা একটি লাইভ স্ট্রিমে বলেন, "বিশ্বের সকলের শিক্ষা নেওয়া উচিত। এটি বিজয়ের এক আনন্দদায়ক মুহূর্ত।
এরপর তালেবানদের বিশেষ বাহিনীর কয়েকজন সদস্য নিজেদের মোবাইল ফোনে খালি হয়ে যাওয়া এয়ারফিল্ডের চিত্র ধারণ করেন।
আরেকজন তালেবান মুখপাত্র বলেন, "এই বিজয় আমাদের সকলের"।
১৪ আগস্টের পর থেকে আফগানিস্তান তালেবানের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কাবুল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। কিন্তু শেষ মার্কিন বিমানটি রানওয়ে ছেড়ে যাওয়ার পর মঙ্গলবার কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণও চলে গেল তালেবানদের দখলে।
আমেরিকানরা সেনা প্রত্যাহার সম্পন্নের পরই সোমবার রাতে তালেবান বাহিনীর সদস্যরা আকাশে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে উদযাপন করে। সেনা সরিয়ে নেওয়ার একদিন না পেরোতেই বিমানবন্দরে প্রহরীরা নিজেদের কাজে ফিরেছেন। কেউ যাতে কোনো বিমানে চড়ে আর দেশত্যাগ করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখছেন তারা।
কালাশনিকভ রাইফেল হাতে লোগার প্রদেশ থেকে আসা বিমানবন্দরের তালেবান সমর্থিত প্রহরী মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, "২০ বছর পর আমরা আমেরিকানদের পরাজিত করেছি। তারা চলে যাওয়ায় অবশেষে আমাদের দেশ এখন স্বাধীন।"
"আমরা প্রকৃতপক্ষে কী চাই সেটি পরিষ্কার। আমরা শরীয়াহ (ইসলামী আইন), শান্তি এবং স্থিতিশীলতা চাই," যোগ করেন তিনি।