রিংআইডির পরিচালক সাইফুল গ্রেপ্তার
শুক্রবার (২অক্টোবর) রিংআইডির পরিচালক সাইফুল ইসলামকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করেছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ইউনিট (সিআইডি)।
মানুষকে পনজি স্কিমের মাধ্যমে অনলাইনে আয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রলুব্ধ করে বিতর্কিত এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি এ বছরের মাত্র তিন মাসের মধ্যে ২০০ কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সিআইডি আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল স্বীকার করেছে, রিংআইডির ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে এ ধরনের আমানত সংগ্রহের জন্য অনুমোদন নেই।
মানুষকে অনলাইনে অর্থ উপার্জনের সুযোগ দেওয়ার কথা বলে প্ল্যাটফর্মটি মে মাসে ২৩.৯৪ কোটি টাকা, জুন মাসে ১০৯ কোটি টাকা এবং জুলাই মাসে ৭৯.৩৮ কোটি টাকা নিয়েছে।
প্ল্যাটফর্মের বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট অনুসারে, এটি একটি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) জালিয়াতি ছিল।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এবং অন্যান্য গণমাধ্যমে তাদের প্রতারণামূলক কর্মকান্ড উঠে আসার পর প্ল্যাটফর্মটি গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে তাদের সদস্যপদ বিক্রি এবং অর্থ লেনদেন বন্ধ করে দেয়।
বেশ কিছু আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গত এক মাস ধরে রিংআইডির ওপর নজর রাখছিল। এসব সংস্থাগুলো টিবিএসকে জানিয়েছে, প্রকৃত অর্থ আত্মসাতের পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে। অন্যান্য মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট এখনো যাচাই -বাছাই করা হচ্ছে।
৩ মাসেই ৩০২ কোটি টাকা আত্মসাৎ
এদিকে, রিংআইডির মালিক শরিফুল ইসলাম, তার স্ত্রী ইরিন ইসলাম ও ভাই সাইফুল ইসলামসহ মোট ২৫ জনের বিরুদ্ধে বিপুল অর্থ জালিয়াতির মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী।
এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) রিংআইডির ব্যাংক একাউন্টের বিবরণ চেয়েছে। রিংআইডি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড ও রিংআইডি বিডি লিমিটেডের সঙ্গে সম্পর্কিত কোন একাউন্ট থাকলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সে তথ্য প্রদাণেও নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট।
রিং-আইডি এর আগে এদেশে প্রতারণা করা অন্যান্য কয়েকটি কোম্পানির মতোই এমএলএম মডেলে চলে, কিন্তু কোম্পানিটি নিজেদের কমিউনিটি বিজনেস বলে প্রচার করে। এমএলএম- এর মতোই এখানে পুরোনো সদস্যদের মাধ্যমে নতুন সদস্য আনার চর্চা আছে। একজন নতুন সদস্য যোগ করলেই ১,৫০০-১,৭০০ টাকা লাভ দেওয়ার অফার দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া তারা ছাত্রদের অনলাইন বিজ্ঞাপন দেখা ও শেয়ার করার জন্য টাকা দিয়ে নতুন সদস্য আকৃষ্ট করার পর তাদের কাছে নিজেদের পণ্য ও কয়েন বিক্রি করে।
আকর্ষণীয় আয়ের এসব প্রস্তাবে প্রলুদ্ধ হয়ে পুরনো সদস্যরা নিজ পরিবারের সদস্য, বন্ধ-স্বজনদের এই প্ল্যাটফর্মের সদস্য বানাতে উৎসাহিত হন।