১৪ দলে আছি, কেবল দিবস পালনে, নীতিনির্ধারণে কোনো অংশ নয়: মেনন
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন তাদের ১৪ দলে থাকা শুধু দিবস পালনে সীমাবদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়া নীতিনির্ধারণে অংশ না নিয়েও সরকারের দায় বহন করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি।
তিনি বলেন, '১৪ দল গঠনের মধ্য দিয়ে আমরা বর্তমান পর্যায়ে এসেছি। নেতৃত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর ভিত্তি ছিল অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য। আমাদের জোট আছে, ১৪ দলে আছি। তবে কেবল দিবস পালনে। নীতিনির্ধারণে কোনো অংশ নয়।'
তিনি বলেন, 'সরকারের দায় আমাদেরও বহন করতে হয়। আওয়ামী লীগের কাছে ১৪ দলের অথবা অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক ঐক্যের প্রাসঙ্গিকতা আছে কি না জানি না।'
এদিকে আলোচনায় ঢাকা-৮ আসনের এই সাংসদ দেশে জামায়াতের পুনরুত্থান ঘটবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
মেনন বলেন, 'আমাদের দুর্ভাগ্য, যে ইসলাম আমাদের দেশের মানুষের প্রাণের ধর্ম, সেই ধর্মকে ব্যবহার করা হয় রাজনৈতিক প্রয়োজনে। তারা রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করেছে, সংবিধানকে চ্যালেঞ্জ করছে। জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকাকে চ্যালেঞ্জ করছে।'
তিনি বলেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের সঙ্গে যে আপস করেছিল, তারই ফলশ্রুতিতে তালেবানরা যখন কান্দাহার থেকে কাবুল রওনা হয় তখন তিন লাখ সরকারি সেনা আনুগত্য পরিবর্তন করেছে। আজ ধর্মবাদী রাজনীতির সঙ্গে আপস বাংলাদেশে জামায়াতের পুনরুত্থান ঘটাবে কি না বলা যায় না।'
মেনন আরও উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন বাংলাদেশ কোনো ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র হবে না। হবে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র।
তিনি বলেন, 'আমাদের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর গৌরবের, আবার অগৌরবের…এই পঞ্চাশ বছরে দেখেছি দুটি সামরিক শাসন এবং একটি সেনা শাসন। গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা যেমনি পর্যুদস্ত হয়েছে, তেমনি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিজয়ও হয়েছে। দেখেছি যুদ্ধাপরাধীদের রাজনৈতিক পুনর্বাসন এবং একইসঙ্গে পরবর্তীতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার।'
মেনন আরও বলেন, 'সমাজতন্ত্র আজ বিশ্বে পর্যুদস্ত। এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আমরা যে উদারনৈতিকভাবে উদারনৈতিক অর্থনীতি অনুসরণ করছি তাতে আমাদের উন্নয়ন অন্তর্ভুক্তিমূলক হচ্ছে না। আজ জন্ম নিচ্ছে তীব্র বৈষম্যের।'
আলোচনায় স্বাস্থ্য খাতের দুরবস্থার সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'স্বাস্থ্য খাত অব্যবস্থাপনায় নিমজ্জিত। …স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পুনর্গঠিত করতে হবে।'
শিক্ষা নিয়ে তিনি বলেন, 'কোভিডের কারণে শিক্ষা খাতে বেহাল অবস্থা। একমুখী শিক্ষার নামে বিএনপির আমলে যে ষড়যন্ত্র হয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বলে মনে হয়।'
এছাড়াও মেনন বলেন, 'দেশের সম্পদ মুষ্টিমেয় গোষ্ঠীর হাতে। কোভিডকালেও কোটিপতিদের সংখ্যা বেড়েছে। গড় জাতীয় আয় বাড়লেও জনগণের আয় কমেছে। কোটিপতিদের সংখ্যা বাড়লেও ৫ লাখ কৃষকের ব্যাংক হিসাব বন্ধ হয়ে গেছে।'