ধর্ষণ মামলায় ১৬ বছর কারাভোগ নির্দোষ ব্যক্তির, ক্ষমা চাইলেন অ্যালিস সেবোল্ড
দীর্ঘ ৩৯ বছর পর নিজের ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত একজন নির্দোষ ব্যক্তির কাছে ক্ষমা চাইলেন আমেরিকান লেখক অ্যালিস সেবোল্ড। ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগে ১৬ বছর কারাভোগের পর ১৯৯৮ সালে মুক্তি পান অ্যান্থনি ব্রডওয়াটার নামক সেই ব্যক্তি। গত সপ্তাহে আদালতে সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণিত হন তিনি।
১৯৯৯ সালে প্রকাশিত নিজের আত্মজীবনীতে ১৯৮১ সালে ধর্ষিত হওয়ার বর্ণনা দেন অ্যালিস। 'লাকি' নামক সেই বইয়ে অ্যালিস লিখেন, রাস্তায় দেখা একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিই তার আক্রমণকারী।
অ্যান্থনির আইনজীবীদের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, অ্যালিস ক্ষমা চাওয়ায় 'স্বস্তি' পেয়েছেন তিনি।
এদিকে, অ্যালিস সেবোল্ড এক বিবৃতিতে বলেন, "আপনি এই সময়ে যে জীবন কাটাতে পারতেন তা আপনার থেকে অন্যায়ভাবে কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে আমি সবচেয়ে বেশি দুঃখিত। আমি জানি যে কোনো ক্ষমাই আপনার সাথে যা ঘটেছে তা পরিবর্তন করতে পারে না এবং কখনও পারবে না।"
নিউইয়র্কের সিরাকিউজ ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় অ্যালিসকে আক্রমণ করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে বইটিতে। সেসময় তার বয়স ছিল ১৮ বছর।
এর কয়েক মাস পরে তিনি রাস্তায় একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে দেখে তাকে নিজের আক্রমনণকারী ভাবেন। সেসময় পুলিশকে জানানো হলে তারা অ্যান্থনি ব্রডওয়াটারকে আটক করে।
গ্রেপ্তারের পর অ্যালিস সেবোল্ড অন্য আরেকজনকে অভিযুক্ত করলেও ছাড়া পাননি অ্যান্থনি। মাইক্রোস্কোপিক চুলের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাকে। অবশেষে ১৯৯৮ সালে জেল থেকে ছাড়া পেলেও তিনি ছিলেন যৌন অপরাধীদের তালিকায়।
চলতি বছর মামলাটির পুনঃপরীক্ষার পর ২২ নভেম্বর তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং তিনি সম্পূর্ণভাবে নির্দোষ প্রমাণিত হন।
এ বিষয়ে অ্যালিস সেবোল্ড বলেন, 'এমন একটি ঘটনা ঠিক কীভাবে ঘটলো' তা তিনি গত আট দিন যাবত বোঝার চেষ্টা করছেন। "আমি বুঝতে পারছি যে, আমার আসল ধর্ষকের পরিচয় এই জীবদ্দশায় কখনোই জানা যাবে না। হয়তো সে অন্য নারীদেরকেও ধর্ষণ করেছে। অ্যান্থনি ব্রডওয়াটার যেভাবে কারাগারে আটক ছিলেন তা আসল ধর্ষকের সাথে ঘটবে না," বলেন তিনি।
ভ্যারাইটি ম্যাগাজিন অনুসারে, তার আত্মজীবনী 'লাকি'র এক মিলিয়নেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে। এই বইটির মাধ্যমেই লেখক হিসেবে অ্যালিস সেবোল্ডের ক্যারিয়ার শুরু হয়। মুলত 'দ্য লাভলি বোনস' বইয়ের জন্য সুপরিচিত তিনি। এই বইয়ের উপর ভিত্তি করে পিটার জ্যাকসনের তৈরি মুভিটি অস্কার-মনোনীত হিসেবে সমাদৃত।
- সূত্র- বিবিসি