ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সামরিক ট্রাক
মিয়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভকারীদের ভিড়ের মধ্য দিয়ে একটি সামরিক ট্রাক চালানোয় এর ধাক্কায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা স্থানীয় মিডিয়াকে জানায়, সৈন্যরা তখন কিছু পলাতক বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালায় এবং অন্যদের মারধর করে।
ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে বিক্ষোভ চলাকালীন ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। বর্তমানে কারাবন্দী আছে হাজারো মানুষ।
দ্য ইরাওয়াডি এবং মিয়ানমার নাউ নামক দুটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সর্বশেষ এই বিক্ষোভে অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছেন। এদিকে সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, এই বিক্ষোভ থেকে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। এদের মধ্যে তিনজন আহত এবং একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তবে, বিক্ষোভকারীদের তাড়া করে ট্রাক চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি সামরিক বাহিনী। তবে তারা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করেছে বলে জানায়।
স্থানীয় বার্তা সংস্থা এমপিএ জানিয়েছে , বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে তাদের দুই সাংবাদিকও সেখানে ছিল। তাদের মধ্যে একজন আহত হয়েছেন বলে ধারণা তাদের। অন্যজনের সাথে কোনো যোগাযোগ সম্ভব হয়নি বলে জানায় তারা।
রোববার (৫ ডিসে্মবর) ইয়াঙ্গুনে অনুষ্ঠিত অন্তত তিনটি বিক্ষোভের মধ্যে সামরিক জান্তা বিরোধী বিক্ষোভ ছিল একটি। যেহেতু সামরিক বাহিনী অতীতে বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালিয়েছে, তাই হতাহতের সংখ্যা কমানোর জন্য প্রায়ই ছোট সংগঠিত গোষ্ঠীতে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
রয়টার্সকে এক বিক্ষোভকারী বলেন, "আমি ধাক্কা খেয়ে একটি ট্রাকের সামনে পড়ে যাই। তখনই এক সৈন্য তার রাইফেল দিয়ে আমাকে মারধর করে। কিন্তু আমি তাকে ঠেকিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হই। এমনকি আমি পালিয়ে যাওয়ার সময়ও সে আমার দিকে গুলি চালায়।"
এদিকে জাতিসংঘ বরাবরই বলে আসছে, মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ক্র্যাকডাউন মানবতাবিরোধী অপরাধের সমান। তবে, বেশ কয়েকবার চেষ্টার পরেও মিয়ানমারে প্রবেশাধিকার পায়নি তাদের দূত।
গত বছরের সাধারণ নির্বাচনের জালিয়াতির কথা উল্লেখ করে নিজেদের সামরিক অভ্যুত্থানকে ন্যায্যতা দিয়েছে দেশটির জান্তা। তবে, দেশটির স্বাধীন নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের মতে, নির্বাচনটি অবাধ এবং সুষ্ঠু ছিল। সু চির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে।
এদিকে, ঔপনিবেশিক যুগের সরকারী গোপনীয়তা আইন ভঙ্গ, দুর্নীতি এবং বেআইনি ওয়াকি-টকি রাখাসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হচ্ছে সু চির উপর। এসব কারণে তিনি আদালতে হাজির হলেও তার কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।
- সূত্র- বিবিসি ও দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস