সুগন্ধা ট্রাজেডি: ভেসে উঠল আরও একজনের মরদেহ
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান ১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে নিহত আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা সংলগ্ন বিশখালি নদীতে মরদেহটি ভেসে ওঠে।
তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধারকৃত মরদেহের পরিচয় জানা যায়নি।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ সকাল ৮টার দিকে স্থানীয় লোকজন নদীতে মরদেহটি ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয়।
জানা গেছে, ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি দল স্থানীয় থানার সহায়তায় লাশটি উদ্ধারে ঘটনাস্থলে রয়েছে।
এ নিয়ে এ আগুনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪২ জনে।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে ঝালকাঠি জেলার সুগন্ধা নদীতে চলন্ত লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
ওসি খলিলুর জানিয়েছেন, নৌপথে স্মরণকালের ভয়াবহতম এ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৪২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তবে ঝালকাঠিতে অবস্থিত বাংলাদেশ রেড-ক্রিসেন্ট অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এখনো ৫৪ জন নিখোঁজ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, অগ্নিকাণ্ডের সময় লঞ্চটিতে প্রায় হাজারখানেক যাত্রী ছিলো।
আগুনের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের মতে, লঞ্চের ক্যান্টিন ও ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় এবং তা ঘণ্টাব্যাপী চলতে থাকে। পাঁচ থেকে দশ মিনিটের মধ্যে আগুন পুরো লঞ্চটিকে গ্রাস করে নেয়।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটিও প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানিয়েছে, এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের ইঞ্জিনে ত্রুটি ছিল।
তদন্ত দলের প্রধান নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো তোফায়েল ইসলাম বলেন, "আমরা মনে করছি আগুনের সূত্রপাত ইঞ্জিন রুম থেকেই হতে পারে এবং কোনো বাধা না পাওয়ায়, পরে তা সমস্ত লঞ্চে ছড়িয়ে গেছে।"
তোফায়েল ইসলাম বলেন, "যদি গ্যাস সিলিন্ডার ব্লাস্ট হত তাহলে বিকট শব্দ হত এবং রান্নাঘর ও আশেপাশে ধ্বংস হয়ে যেত। কিন্তু তেমন কিছু হয়নি। তাই সিলিন্ডার দ্বারা কোন ক্ষতি হয়নি বলেই মনে হচ্ছে।"
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, লঞ্চটিতে অগ্নি নির্বাপণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় এই বিপুল সংখ্যক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।