উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা, হল না ছাড়ার ঘোষণা
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) ফরিদ উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করেছে শিক্ষার্থীদের একাংশ।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার পর তাদের সর্বশেষ দাবি তুলে ধরতে সোমবার সকাল ৮টা থেকেই শত শত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হয় এবং মিছিল বের করে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, উপাচার্জই পুলিশকে শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালানো ও লাঠিচার্জের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ক্যাম্পাসের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় উপাচার্জ এবং প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলনে নেমেছে তারা।
ইতিমধ্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আবাসিক হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
আবাসিক হল ত্যাগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশের বিষয়ে জানতে চাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি না মানা পর্যন্ত তারা ক্যাম্পাস ছাড়বেন না।
তবে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত মেনে আজ (১৭ জানুয়ারি) সকালে নিজ নিজ হল ছেড়ে যেতে দেখা গেছে।
এদিকে গতকাল শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার তদন্তে অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদারকে প্রধান করে ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রোববার শিক্ষার্থী এবং পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের পর শাবিপ্রবি প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে।
আজ দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ হল ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
অসদাচরণের অভিযোগে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্টকে বরখাস্তের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকেই বিক্ষোভ করে আসছিল শিক্ষার্থীরা।
সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন এবং নতুন প্রভোস্ট হিসেবে অধ্যাপক নাজিয়া চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে সাত দিনের সময় চেয়েছিলেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তারপর গতকাল বিকেল ৩টার দিকে উপাচার্য নিজের অফিস থেকে বের হলে শিক্ষার্থীরা তার পেছন পেছন হাঁটতে থাকেন।
বিক্ষোভের মধ্যে ফরিদ উদ্দিন আহমেদ আইসিটি ভবনে আশ্রয় নেন। শিক্ষার্থীরা সেখানে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
উপাচার্যকে মুক্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম ও ছাত্র কল্যাণ সভাপতি রাশেদ তালুকদার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের কথা মানেননি।
একপর্যায়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে ও লাঠিচার্জ করে উপাচার্যকে মুক্ত করে তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, কোষাধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম এবং সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার আজবাহার আলি শেখসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।