আন্দোলনকারীদের সহায়তা করায় সাস্টের সাবেক দুই শিক্ষার্থীকে ‘তুলে নিল’ সিআইডি
উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সহায়তা করায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাস্ট) দুই প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে ঢাকার উত্তরা থেকে সাস্টের আর্কিটেকচার বিভাগের সাবেক ছাত্র রেজা নূর মুঈন এবং সিএসই বিভাগের সাবেক ছাত্র হাবিবুর রহমানকে আটক করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) একটি দল তাদের সিলেটে নিয়ে যাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সূত্রটি জানায়, সিলেটে দায়েরকৃত মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
আটক হাবিবুর রহমানের স্থানীয় অভিভাবক ও রুমমেট শাহ রেজা সিদ্দিকী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, গতরাতে সাদা পোশাকের লোকেরা দুজনকে তুলে নিয়ে যায়।
"সিআইডির স্টিকার লাগানো একটি গাড়িতে করে তারা আসে। সাদা পোশাকের আগত ব্যক্তিরা সিলেটে চলমান শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কথা জানিয়ে হাবিবুর ও মুঈনকে তুলে নিয়ে যায়," বলেন তিনি।
"তারা জানায় আন্দোলনকারীদের আর্থিক সহায়তা করায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। বিস্তারিত যোগাযোগের জন্য তারা আমাদের সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল ইসলাম তালুকদারের একটি ভিজিটিং কার্ড দিয়ে যায়," বলেন সাস্টের সাবেক শিক্ষার্থী রেজা।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি হাবিবুর জার্মানির একটি সফটওয়্যার ফার্মে চাকরি পান এবং চলতি সপ্তাহেই তিনি ভিসা পেয়েছেন।
তবে বারবার চেষ্টা করেও রেজা নূর মুঈনের স্ত্রী জাকওয়ান সালওয়া তাকরিমের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে টিবিএস সিআইডির কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তারা কোনো বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত থাকে।
সাস্টে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি আন্দোলনের ব্যয় বহনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনুদান চায়।
গত ১৩ জানুয়ারি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন লিজার বিরুদ্ধে খাবারের খারাপ মান, অব্যবস্থাপনা ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ এনে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে।
১৬ জানুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও হামলায় কমপক্ষে ৩০ জন বিক্ষোভকারী গুরুতর আহত হওয়ার পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দ্রুত উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়।
দাবি মানায় বাধ্য করতে সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ওয়াজেদ মিয়া আইসিটি ভবনের ভেতর উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীরা। তাকে মুক্ত করতে উপাচার্যের নির্দেশে পুলিশ এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে।
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ চেয়ে ১৯ জানুয়ারি থেকে অনশনে বসেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ২৪ জন শিক্ষার্থী।
ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের অনশনের ১৪০ ঘণ্টার বেশি সময় পার হয়েছে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত অনশনরত শিক্ষার্থীদের ১৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।