লেখকের মৃত্যু ও জ্যাক হিট নামের গোস্টরাইটারের বয়ান
অলস গ্রীষ্মের শেষ। ১৯৯৪ সালের কথা। আমার স্ত্রী প্রথম সন্তানসম্ভবা। এক ডাকসাইটে প্রকাশকের কাছ থেকে ফোন পেলাম। চরম গোপনীয়তা বজায় রেখে কথা বলতে চান তিনি। আমাকে বলা হলো বিখ্যাত লেখকের এক মাল্টি মিলিয়ন দামি নন-ফিকশন বই মাত্র তার দপ্তরে পৌঁছেছে। কিন্তু বইটা দুর্বোধ্য। এককালে দীর্ঘ, প্যাঁচালো নিবন্ধ মেরামতের জন্যে নামকরা সাময়িকীর সম্পাদক ছিলাম আমি, তাই আমাকেই বইয়ের ডাক্তার হতে বলা হলো।
তো বিখ্যাত এই লেখকের সাথে চুক্তিবদ্ধ হলাম। পকেটের খুচরো পয়সায় একটা গোটা আইনি প্রতিষ্ঠান কাজে লাগানোর তাগদ ছিল তার। তিনি আমাকে একটা বা দুটো নয়, তিন তিনটা ভিন্ন উদ্ভট বুলির গোপনীয়তার চুক্তি সই করার তাগিদ দিয়েছেন (এটাই ছিল আমার লাগাতার অনীহা...এবং ভয়ের কারণ)। কয়েক দিন পর লেক-তীরের একটা চমৎকার হোটেলে হাজির হলাম। সারাক্ষণ সুমাত্রা থেকে আমদানি করা তরতাজা কফি ভর্তি থার্মোসহ পাণ্ডুলিপি হাতে একটা ডেস্কে দুটি মাস কাটাতে হবে এখানে।
অচিরেই জানা গেল সরাসরি বিখ্যাত মানুষটির সাথে কাজ করতে হবে না, কারণ, 'লেখকে'র খাটুনি ভাগাভাগি করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। বিমানে পড়া পাণ্ডুলিপিটি এক সাবেক সাংবাদিকের, যার মানে, গোস্ট রাইটারের করা খসড়া। তারপর জানা গেলো বইয়ের 'আইডিয়া' এসেছে তৃতীয় একজনের কাছ থেকে, তার মানে গোস্ট-থিংকার। একদিন বিকেলে সৈকতে অবসর কাটাতে গিয়ে আমার সাথে জনপ্রিয় লেখকের প্যাঁচানো দূরত্বের কথা ভাবতে গিয়ে বুঝলাম, সত্যি বলতে আমি হলাম গোস্ট-গোস্ট-গোস্ট-রাইটার।
লেক-তীরে গ্রীষ্মকাল কাটানোর পর মাত্র কয়েক মৌসুম পরই আমাকে নীরবে ভাড়া করার সাথে সম্পর্কিত অল্প কিছু দ্বিধা উবে গেছে। এবারের শীতে ওয়াশিংটনের আইনজীবি বব বার্নেট জর্জ স্টেফানোপোলাস এবং লিটল, ব্রাউনের ভেতর ২.৭৫ মিলিয়ন ডলারের বই চুক্তি সম্পাদনে সফল হওয়ার পরপরই বার্নেট লেখকের হদিস করাই হবে পরের ধাপ বলে ঘোষণা দেন। এখন চলতি গুঞ্জন হচ্ছে বার্নেট বাজারের সবচেয়ে বড় নামটি—লি আইওকোকা, অলিভার নর্থ, সিগনি বিডল এবং ম্যাজিক জনসনের নেপথ্যের গোস্টরাইটার উইলিয়াম নোভাক ঝোলায় পুরেছেন।
বার্নেটের অবহেলায় স্বয়ং স্টেফানোপোলাস বই লিখছেন না, এ কথা ফাঁস করা নয়, বরং ধারাটি লাফ দিয়ে কতটা গ্লানির অন্য পাশে গেছে, সেটাই এই ক্ষণিক প্রকাশনা মুহূর্তের কৌতূহলোদ্দীপক দিক ছিল: নিজের বই লেখার জন্য উইলিয়াম নোভাককে পাওয়া স্টেফানোপোলাসের জন্য ছিল এককথায় অভ্যুত্থান। অনেকটা মর্যাদার প্রতীক, রূপসী স্ত্রী নিয়ে শহরে ঘুরে বেড়ানো বা গণমাধ্যমে আপনার গ্রামের বাগানবাড়িকে 'চৌহদ্দী' হিসেবে উল্লেখ করার মতো।
কিন্তু বই লেখা এখন আর কিছু লেখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার না হওয়াটা সাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠাও নতুন ঘটনা। স্টেফানোপোলাস ইতিমধ্যে চুক্তির মূল উপকরণের জোগান দিয়েছেন—তার নাম এবং তার কাহিনি। আসলে খোদ স্টেফানোপোলাস বই লেখার সিদ্ধান্ত নিলে সেটাকে ব্যাপকভাবে একাধারে মরিয়া এবং করুণ কাজ ভাবা হতো। নিজেকে 'লেখক' ঘোষণা করা নির্বোধে পরিণত করত তাকে।
নোভাককে 'গোস্টরাইটার' বলাও প্রচল অভ্যাসমাত্র। কথাটা এখন নিখাঁদ সেকেলে হয়ে গেছে। বেশির ভাগ ভূত এখন চিলেকোঠা ছেড়ে 'সহযোগী' বা 'সহলেখক' নাম নিতেই পছন্দ করছেন। তারা নিয়মিতভাবে বিরাট অঙ্কের অগ্রিম দাবি করার পাশাপাশি বইয়ের প্রচ্ছদে নিজেদের নামও জুড়ে দিচ্ছেন (যদিও অনেক সময় কষ্টকরভাবে: ম্যাথু উইঙ্কলারের অমূল্য সহযোগিতায় সদ্য প্রকাশিত মাইকেল ব্লুমবার্গের আত্মজীবনী 'ব্লুমবার্গ অন ব্লুমবার্গ' দেখুন)। যেকোনো সপ্তাহে বেস্ট সেলার তালিকার অর্ধেক নন-ফিকশন গ্রন্থই বইয়ের প্রচ্ছদে দেওয়া নামের বাইরে কারও লেখা। এর সাথে লেখকের নাম কৃতজ্ঞতা স্বীকার অংশে লুকিয়ে রাখতে যথেষ্ট সুপ্ত অস্বস্তিতে ভোগা লেখকদের নাম যোগ করুন। জনৈক এজেন্টের মতে এর হার প্রায় ৮০ শতাংশ। ফিকশন তালিকার রাস্তার উল্টো দিকেও গোস্টরাইটাররা ক্রমবর্ধমান হারে লিখছেন।
লেখালেখির শিল্পের এতটা অবনতির মানে কী? কি-বোর্ডের সামনে যারা বসেন, তারা বইয়ের ক্ষেত্রে চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যকারদের মতো হয়ে যাচ্ছেন, নিজেদের শিল্পেই গৌণ? তবে কি একদিন নিউইয়র্কে প্রকাশনায় এগিয়ে যেতে এসে লেখকের সাথে ঘুমোনো সেই নারীর কৌতুকই সত্যি হয়ে উঠবে?
হলিউডি তুলনা কেবল বিদ্রুপ নয়। যাদের নাম বইয়ের মতো পণ্য বিপণনে কাজে আসতে পারে, কিন্তু যারা নিজেরা লিখতে পারেন না, এমনি জনপ্রিয় তারকাদের লেখা বইয়ের চাহিদা বাড়াতেই গোস্টরাইটারদের চাহিদা দেখা দিয়েছে। প্রকাশনার ক্ষেত্রে এই ধরনের বই সিনেমার টম ক্রুজ বা ব্রুস উইলিসের মতো। তারা হয়তো নিশ্চয়তা দিতে পারবেন না, কিন্তু আপনার দৌড় ওই পর্যন্ত।
গোস্টরাইটারের লেখা জনপ্রিয় কারও বই বিকোনার কায়দা প্রকাশনাজগতের ভালো এবং মন্দ উভয়ের ক্ষেত্রে এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে যে শুধু এর জোরেই এখন কেবল অন্যান্য গোস্টরাইটারের বই নয়, প্রচলিত বইয়ের বিপণনের জায়গাও দখল করে নিয়েছে। এখন সব লেখককেই প্রকাশনাশিল্পকে বই প্রকাশে আগ্রহী এবং সাধারণকে সেই বই কিনতে আকৃষ্ট করতে নিজেদের একধরনের জনপ্রিয় ভাব জোগাতে লেখক হিসেবে নিজের কাছ থেকে এক কদম সরে যেতে হবে। আসছে সপ্তাহে শিকাগোয় শিল্পের নেপথ্যচারীরা বার্ষিক আমেরিকান বুকসেলারস অ্যাসোসিয়েশনের সভায় (ভয়ংকরভাবে 'বুকএক্সপো' নাম রাখা হয়েছে) মিলিত হওয়ার মুহূর্তে কে সাড়া ফেলবেন, সেটাই ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে: মন্টি রবার্টস নামের পশু প্রশিক্ষক, চলতি আগস্টে যার পরের বই 'দ্য ম্যান হু লিসেনস টু হর্স' প্রকাশনা উপলক্ষ্যে সফরে ঘোড়া হবে সঙ্গী; নাকি বোকা র্যাটনের বেকার মাংসমোড়ককারী। র্যাটনের প্রথম উপন্যাস 'মেগ' প্রাগৈহাসিক হাঙর নিয়ে লেখা।
লেখকেরা ক্রমবর্ধমানহারে চুক্তি স্বাক্ষরের আগে লেখকের চেহারা সাহিত্যিক লটারি জেতায় কাজে আসবে কি না, দেখতে লেখককে চাক্ষুষ দেখার ওপর জোর দেওয়া প্রকাশনা নির্বাহীদের গল্প শুনছেন (হয়তো আরবান লেজেন্ডের বইয়ের সমতুল)...:'অপরাহ'য় একবার হাজিরা। লেখকের যত গুণই থাকুক, আকর্ষণীয় ব্যক্তিগত কাহিনিসহ 'লেখকে'র ধারণা গুরুত্বপূর্ণ বিপণন উপকরণে পরিণত হচ্ছে। বইয়ের বিষয়বস্তু নির্বাচন থেকে শুরু করে লেখকের যুতসই প্রফুল্ল বা গম্ভীর অভিব্যক্তি বাছাই পর্যন্ত ছোট-বড় সব সিদ্ধান্তই যেন এই সরল বিপণন শক্তিতে প্রভাবিত হচ্ছে। একঅর্থে সমস্ত চৌকষ লেখককেই গোস্টরাইটারে পরিণত হতে হবে।
এমনকি কেবল সহজসরল গল্প বলতে নির্ভার লিখে চলা লেখককেও প্রচারণা যন্ত্রের ভেতর দিয়ে চালান করা হয়...আবিষ্কারের মতোই উত্তেজনাকর, জনপ্রিয়দের জন্য লালায়িত কিন্তু শ্রান্ত পাঠকদের আনন্দ জোগাতে হয়তো কোনো বিচিত্র দূরদেশ (আয়ারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ক্যানসাস) থেকে হাজির করা বুনোশিশু। ফ্র্যাঙ্ক ম্যাককোর্ট ওরফে অমায়িক মিস্টার চিপ্সের চমৎকার গ্রন্থ 'অ্যাঞ্জেলা'স অ্যাশেস' এই মৌসুমের নজির, যার কৃতজ্ঞ ভৃত্যরা তার গল্পগুলোকে লিখতে মিনতি করেছে।
সত্যি বলতে, গোস্টরাইটারের উত্থান এবং সস্তা লেখক (১৯৮৪ সালে আইওকোকার জন্যে ৮০ হাজার ডলার) থেকে থেকে উইলিয়াম নোভাকের মিলিয়ন ডলারের ওয়ার্ড প্রসেসরে রূপান্তর একটি ধারা নয়, বরং বই বাণিজ্যে কি ঘটেছে তারই লক্ষণ। গোস্টরাইটিং এখন আর প্রকাশনায় উপশাখা নয়। গোটা প্রকাশনাশিল্পেরই উপমা।
এই নিবন্ধটি লেখার মুহূর্তে আমেরিকার এক নম্বর লেখক মার্ক ফাহরম্যান। লস অ্যাঞ্জেলেসের এই ডিটেক্টিভের জনপ্রিয়তার উৎস অগুনতিবার 'নিগার' শব্দটি উচ্চারণ। এজেন্ট লুসিয়ানে গোল্ডবার্গ তার ধারণাকে বাজারজাত করতে গেলে নামীদামি সমস্ত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল।
'অবশেষে রিজেনারির কাছে বিক্রি করি ওটা,' বলেছেন গোল্ডবার্গ, 'শেষ আশ্রয়, বলতে পারি। কিন্তু সপ্তাহে ৩০ হাজার কপি বিক্রি হয়ে যায়, রিজেনারি ধনী হয়ে যায়।' পরেরবার এমনকি নফ-ও নাক সিঁটকাবে, এমনটি ভাববেন না।
যেকোনো উদীয়মান সম্পাদকের কাছে জনপ্রিয় তারকাদের বই সম্পাদনার আকর্ষণ অপ্রতিরোধ্য। বিল কসবি প্রথম 'ফাদারহুড' বের করলে ইতিহাসের অন্য যেকোনো হার্ডকভার বইয়ের চেয়ে দ্রুত বিক্রি হয়। এ বই থেকে আনুমানিক ১৬ মিলিয়ন ডলার আয় হয়। মন্দ না। (কসবি অবশ্যই তার বই 'লিখেছেন, কিন্তু তার সিক্যুয়েল 'চাইল্ডহুডের' সতর্ক পাঠক কৃতজ্ঞতা স্বীকার অংশে রাল্ফ শোয়েন্সটাইনের নাম দেখবেন। তিনিই বিস্ময়করভাবে একই জাতের বই 'ইয়েস, মাই ডার্লিং ডটার্স'-এরও লেখক। কসবির কথা বেশ শিল্পসম্পন্ন: 'আমার উষ্ণ ধন্যবাদ রাল্ফ শোয়েনস্টাইনকে, যার কণ্ঠস্বর আবারও আমার কণ্ঠের সাথে মিশে গেছে।')
শিল্পের সাম্প্রতিক পরিবর্তন—অল্প কিছু প্রতিষ্ঠানে প্রকাশনা শক্তির কেন্দ্রীকরণ থেকে মেগাসেলারের দ্রুত বিক্রির লক্ষ্যে বিভিন্ন সুপারস্টোরের বিপুল ক্ষিধে...প্রতি মৌসুমে কেবল বড় বইয়ের ওপর নির্ভরতা আরও বাড়িয়েছে। যেহেতু অল্প কিছু সম্পাদকই একই প্রতিষ্ঠানে বছর দুয়েকের বেশি অবস্থান করবেন বলে বিশ্বাস করেন, তাই মুনাফাজনক ও অব্যাহত পাঠকের নাগাল পাওয়ার আগে গুটিকয় মন্থর গতির বই এবং কিঞ্চিৎ অহম ব্যবস্থাপনার চাহিদাসম্পন্ন লেখককে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ।
সেই সাথে বড় বড় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো বাজেটে কাটছাঁট করে প্রায় সব কাজেই—সম্পাদনা, প্রুফ রিডিং, বিপণন প্রচারণা—সাবকন্ট্রাক্টের আশ্রয় নিয়েছে। 'বই মোড়কীকরণের'র অদ্ভুত নয়া শিল্প (হলিউডি বুলি লক্ষ করুন) আবিশ্যিকভাবেই এসব ফ্রিল্যান্স কর্মকাণ্ডকে এক ছাদের নিচে নিয়ে এসেছে। মোড়ককারী এরপর সম্পূর্ণ বইটি বিক্রি বড় প্রকাশনার কাছে বিক্রি করছেন—একটা ধারণা, একজন গোস্টরাইটার এবং বিপণন নীতি। সেটি আবার আলাদা অনুমতি এবং কয়েকটা ট্রাকের অতিরিক্ত কিছুর জোগান দিচ্ছে।
গোস্টরাইটিংয়ের সর্বব্যাপী এমনি সংহতকরণেরই ধারাবাহিকতা। বই প্রক্রিয়াকরণের সংক্ষিপ্ত উৎপাদন ধারায় লেখকের বিদ্যাদেবীর আরাধনা এবং শুদ্ধতা ও সৌন্দর্যমণ্ডিত অনুপ্রাণিত লেখার কাজটিকে অপেক্ষাকৃত সস্তা এবং বাইরের জোগানদারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
গত গ্রীষ্মে হুপি গোল্ডবার্গ 'পেনসেস' লেখার জন্যে ৬ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি সাক্ষর করেছেন বলে গুজব রটেছিল। জোর গলায় গোস্টরাইটার কাজে না লাগানোর কথাও বলেছেন তিনি। কিন্তু হাতের কাছে এই অঙ্কের টাকার প্রশ্নে তার সম্পাদক কেবল হুপির টাইপরাইটার থেকে বেরিয়ে আসা মালমসলাকে ছাড় দেবেন, এমনটা মনে হয় না। এই গ্রীষ্মে বইটির বেরোনোর কথা। বেরোনোর পর কৃতজ্ঞতা স্বীকার অংশটুকু ভালো করে খেয়াল করবেন।
ঢাউস আকারের বইয়ের কৃতজ্ঞতা স্বীকারের ধাঁধা উদ্ধারের কায়দা জানা থাকলে সেটা নিগূঢ় আনন্দের ব্যাপার। যেমন জোয়ান রিভার্সের নতুন বইয়ের পাঠকেরা হয়তো বিশেষ করে তিনিও 'সাহিত্যিক সহায়তার জন্যে রাল্ফ শোয়েন্সটাইনকে' ধন্যবাদ জানিয়েছেন দেখে তার লেখার ধরনে বিল কসবির স্টাইলের গন্ধ পাবেন।
অন্য পথে আছেন বেস্ট সেলিং লেখক টিম এলেন। ডেভিড রেনসিনকে এভাবে ধন্যবাদ দিচ্ছেন তিনি: 'আমরা একসাথে সত্যি, আলো এবং রসবোধের খোঁজ করেছি। চমৎকার সঙ্গী ছিলেন তিনি।' পেশাদার বনেদি লেখক আরও জাঁকালভাবে লিখেছেন: 'এই প্রকল্পে তার ঢেলে দেওয়া মেধা ও প্রয়াসের বিনিময়ে ডেভিড রেনসিনকে ধন্যবাদ জানানোর মতো যথেষ্ট ভাষা আমার নেই। তাকে ছাড়া, বই নয়, আপনি হয়তো একটা প্যামফ্লেট পড়তেন।'
বিরাট মিথ্যা সম্পর্কে অন্তত সামান্য সত্যি প্রকাশের একধরনের বিচিত্র তাগিদে সাংবাদিকদের তরফ থেকে কপটতাহীনতার কাছাকাছি কিছু বেরিয়ে এসেছে। টেড কোপেলের বই 'নাইটলাইন: হিস্ট্রি ইন দ্য মেকিং' এবং 'দ্য মেকিং অব টেলিভিশন' সহযোগী কাইল গিবসনের লেখা। অদ্ভুত ভূমিকায় কোপেল বলছেন তিনি বইয়ে 'প্রভাব' রাখলেও স্বীকার করেছেন, 'শেষ বিচারে কাইলই লিখেছেন এটা।' সব মিলিয়ে ফ্যাবিও আপানর ভেতর সমীহ জাগিয়ে তোলেন। তিনি প্রকাশ্যে তার উপন্যাস 'পাইরেট', 'কোমাঞ্চি', এবং 'রোগ'-এর জন্য ইউজিনিয়া রাইলিকে কৃতিত্ব দিয়েছেন।
গোস্টরাইটাররা সব সময় আশপাশে ছিলেন অবশ্যই। হ্যারল্ড ব্লুমের মতে, বুক অব জেনেসিসের বেলায় ঈশ্বরের একজন গোস্টরাইটার ছিলেন। তিনি '৭০ দশকের ছদ্মনাম 'জে' নামে পরিচিত এক নারী। মার্ক টোয়াইন ইউলিসিস এস গ্র্যান্টের স্মৃতিকথার গোস্টরাইটার ছিলেন বলে রটনা আছে। সম্ভবত সমসাময়িক সবচেয়ে বিখ্যাত গোস্টরাইটার হচ্ছেন থিওডোর সোরেনসেন, সাধারণভাবে জন এফ কেনেডির পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী বই 'প্রোফাইলস ইন কারিজ'-এর শব্দশ্রমিক বলে কথিত। সোরেনসেন অস্বীকার করে গেছেন। এবং ৬০-এর দশকের গোড়ার দিকে কলামিস্ট ড্রিউ পিয়ারসন এবিসিতে অভিযোগ আনলে সোরেনসেন নেটওয়ার্কের কাছ থেকে প্রত্যাহার দাবি করে সফল হন। এর সবটাই একটু অদ্ভুত, কারণ, ১৯৬৮ সালে বিল অ্যাডলার তার ভাষায় প্রথমবারের মতো কাহিনির 'গোস্টরাইটারে'র কাজের দূতিয়ালি করেন। সেটি ছিল জেরল্ড গ্রিনের রাজনৈতিক বেস্টসেলিং উপন্যাস 'দ্য সিনেটর'। কিন্তু প্রচ্ছদে বইটির লেখকের নাম ছিল...বিখ্যাত কলামিস্ট ড্রিউ পিয়ারসন।
কিন্তু গত কয়েক বছরে বহু শ্রেণি এবং ঘরানা নিয়ে গোস্টরাইটিং খোদ লেখালেখির মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্পষ্টতই নোভাক এবং জোসেফ পারসিকোই (কলিন পাওয়েলের 'মাই আমেরিকান জার্নি'...কিন্তু 'আমার' বই নয়) আছেন সবার সামনের কাতারে। এবং বেশ স্বাস্থ্যবান শক্তিমান মারকুটেরাও আছেন...পিটার পিট্রে এবং টম ডিফ্র্যাঙ্কের মতো নাম। এরপর আছেন বিশেষায়িত ভূত। জেরি জেনকিন্স খেলাধুলার বেলায় সেরা। বিল যেহমি বিনোদন চরিত্রের বেলায়। এবং এমনকি নিচুতলার অপ্রত্যাশিত লোকজনও আছেন। কেন্টাকির অবসরপ্রাপ্ত যাজক সেসিল মার্ফি চিক-ফিল-এ চেইনের উদ্যোক্তার কাহিনি এবং গায়ক বি জে টমাসের জীবনী লিখেছেন। (শিরোনাম খুঁজে বের করতে পারিনি, তবে 'রেইনড্রপস' হবে বলেই আমার বিশ্বাস।)
অনেক সময় নতুন এই লেখকদের ভেতর সবচেয়ে অদ্ভুত যারা, তারা ম্যাক্সওয়েল পার্কিন্স আদি সম্পাদক এবং এফ স্কট ফিটজেরল্ড আদি-লেখক থাকার আমলের অতিরিক্ত রোমান্টিনাইজড কালের কল্পিত 'লেখক'দের মতো বুলি না আওড়ে থাকতে পারেন না। ক্যাট্রিনা নামে এক চেক নারীকে নিয়ে উপন্যাস লেখার জন্যে ক্যামিলি মাচেট্টাকে ৩,৫০,০০০ ডলার মেটানোর পর ইভানা ট্রাম্প হেঁয়ালি চালিয়ে গেছেন। 'আমি অবাক হয়ে দেখলাম, বিপুল অনুপ্রেরণা পাচ্ছি,' বলেছেন ট্রাম্প। 'নিজেকে শেকস্পিয়ার দাবি করছি না,' ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে ভ্যানিটি ফেয়ারকে বলেছেন লেখক, 'কিন্তু এটা কেবল সুন্দর মানুষ, জাঁকাল ইয়াট, চোখধাঁধানো বাড়ি আর প্রচুর যৌনতার ব্যাপার নয়। আরও বেশি অনুভূতি জোগানোর চেষ্টা করেছি আমি।'
এই ধরনের বইয়ের এজেন্টের দায়িত্ব পালনকারী এবং লেখক লুসিয়ানে গোল্ডবার্গ লেখকের এমনি স্মৃতিকাতরতাকে বিশেষভাবে বিরক্তিকর মনে করেন।
মরিন ডিনের 'ওয়াশিংটন ওয়াইফস' লিখেছি আমি, অনেক বিক্রি হয়েছে ওটা, বলেছেন গোল্ডবার্গ। কিন্তু মরিনের ছবি দেখতে একদিন দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের স্টাইল সেকশন খুলেছিলাম। দেখতে ভালোই তিনি। লস অ্যাঞ্জেলেসে নিজ বাড়ির বারান্দায় বসে কাজের বর্ণনা দিচ্ছেন। রোজ সকালে, বলছেন তিনি, 'চোখা করা নাম্বার টু পেন্সিল আমার লাগবেই। আমার হাউসকিপারই ওগুলো চোখা করে দেয়। তারপর একতাড়া লিগ্যাল কাগজ নিয়ে ক্লান্ত বোধ না করা পর্যন্ত লিখি।' এটা পড়ে ভাবছিলাম, তিনটা বিশাল ফ্ল্যানেলের নাইটগাউন গায়ে আপার ওয়েস্ট সাইড অ্যাপার্টমেন্টে চারপাশে বাচ্চাদের হট্টগোল আর ব্যাসেট হাউন্ডের গর্জনের ভেতর কম্পিউটারের সামনে বসে আছি আমি আর তিনি সাংবাদিকদের পেন্সিল আর ফুলস্কেপ কাগজের কথা বলছেন!
কেবল লেখকেরাই লেখালেখি ও প্রকাশনার পুরোনো ভাষা আঁকড়ে থাকেন না। গত বছর টেলিভিশনের অন্যতম বিচিত্র ১৫ মিনিট ছিল আমেরিকার সবচেয়ে চালু সম্পাদক রব ভাইসবাখের সাথে চর্লি রবের সাক্ষাৎকার। সাহিত্যিক উদ্ভাবনের কল্যাণে দুহাতে টাকা কামিয়েছেন তিনি। এত বেশি যে উইলিয়াম মরো ৩০ বছর বয়সী ভাইসবাখকে তার নিজস্ব ইম্প্রিন্ট রব ভাইসবাখ বুকস বরাদ্দ দিয়েছে। ভাইসবাখ বলেছেন, নতুন ও প্রতিভাবান লেখকদের খুঁজে পাওয়ার কারণ তিনি 'মনের কথা শোনেন।' এরপর যোগ করেছেন, 'বাজার কোনটা নেবে বুঝতে যাই না।' তিনি বলেছেন, লেখক আমেরিকার 'সবচেয়ে কল্পনাশক্তিধারী গল্প বলিয়ে' বলেই তার বই কিনেছেন। ডেভিড ফস্টার ওয়ালেস? ফ্র্যাঙ্ক ম্যাককোর্ট?
এলেন ডিগেনারেসের কথা ধরুন। 'লেখালেখির জগতে শক্তিশালী কণ্ঠস্বর' থাকা আর কোন তিনজনকে তিনি আবিষ্কার করেছেন? জেরি সিনফিল্ড, পল রেইজার এবং হুপি গোল্ডবার্গ।
এসব মানুষের সাথে বইয়ের চড়া চুক্তি করায় অসম্মানের কিছু নেই। আমি রেইজারের বই পড়েছি। মজার। আশা করি তিনিই লিখেছেন। তবে অল্প কিছু সম্পাদকের এখন কেবল লেখালেখির জন্যে একজন লেখকের বেলায় গর্ব অনুভব করতে চাইবেন বা চাইতে পারেন। লেখকেরাও সেটা জানেন।
এটা কি নেহাত কাকতাল যে বেশির ভাগ প্রতিভাবান লেখক ইদানীং বদনাম কুড়োনো বিষয় বেছে নিচ্ছেন? মার্গারেট অ্যাটউডের নতুন উপন্যাস এক সন্দেহজনক 'রক্তপিপাসু কুহকীনি'কে নিয়ে লেখা।
এই ধরনের বই লেখায় লেখকদের ভক্তরা ভাবতে পারেন, অন্যান্য ধারণা কি বাতিল করা হয়েছে। লেখক, প্রকাশক এবং পাঠকের বেলায়ও বিপণনের জন্য হুতাশ এক লাগাতার গুঞ্জনে পরিণত হয়েছে, একধরনের গভীর অন্তস্থ শ্বেত-শব্দ যাকে উপেক্ষা করা অসম্ভব। এই মুহূর্তে আমার কাছে তিনটা ভিন্ন বইয়ের জন্য নোটে ঠাসা তিনটা বাক্স রয়েছে। এগুলোর একটার বিষয়বস্তুতে ট্যাবলয়েডের গন্ধ ভকভক করছে। বলতে পারি, ধারণাটুকু সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ। কথাটা সত্যি। এও বলতে পারি, এই বইটি যুগপৎ ভালো এবং খারাপ হওয়ায় লিখতে আগ্রহী। এটাও সত্যি। কিন্তু কানের ভেতর গুঞ্জন শুনিনি বললে কম সততার পরিচয় দেওয়া হবে।
এসব কিছুর ভিন্ন পক্ষটি পাঠক। বইয়ের ক্রেতা এবং লেখকের মৌলিক বিনিময়ের ব্যাপারটা সময়ের ধারায় পাল্টে গেছে। পার্কিন্স-ফিটজেরল্ডের আমলের আমেরিকান পাঠকেরা আত্মবিকাশের দিকে ঝুঁকে ছিলেন। সেটা ছিল প্রফুল্ল অগ্রগতির যুগ। বাকি সব ললিতকলার মতো আমেরিকান স্বপ্নের সাধারণ উন্নত ধারায় গতি সঞ্চার করতে ব্যক্তি চরিত্রের বিকাশ ঘটাবে বলেই আপনি পড়তেন। সুলিখিত বই পড়া ছিল শব্দটির সবচেয়ে সেরা অর্থে আরও শিক্ষার জন্যে সংস্কৃতিব্যাপী প্রয়াস। হোরেস তার 'আর্সপোয়েটিকা'য় লিখেছিলেন, ভালো লেখাকে অবশ্যই 'অটপ্রোডেসিউটডেলেকটেয়ারে', অর্থাৎ 'একধারে শিক্ষা ও বিনোদনমূলক' হতে হবে। বিভিন্ন সুপারস্টোরে গিজগিজ করা মানুষ পরিষ্কার করে দিয়েছে যে ভারসাম্যপূর্ণ নয়, বরং হোরেসের সমীকরণের একটা দিক আমাদের কালের পছন্দ। এই বাস্তবতা নির্মমভাবে মূল রাজনীতিতে সুস্পষ্ট, যখন আমরা স্কুলের তহবিল কমিয়ে ন্যাশনাল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনকে ছেঁটে দিচ্ছি।
ও জে সিম্পসনের সাবেক বান্ধবী পলা বারবেরি লেখক হতে ৩ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি সাক্ষর করেছেন বলে শোনা গেছে। 'আমাদের কী বলার আছে তার?' জিজ্ঞেস করেছেন গোল্ডবার্গ। 'ও জে সিম্পসনের সাথে বিছানায় যেতে কেমন লাগে, সেই বয়ানই করবে সে। সেটাই ভালো। এর বেশি কিছু তো বলার নেই তার।'
এমনি অবস্থায় সবই এখন গোস্টরাইটার, তারা কী লিখেছেন, তা নয়, বরং কী করেছেন, তার ভিত্তিতে কুখ্যাত এবং অদ্ভুত লেখকের কাতারে উঠে আসতে বিষয় খুঁজতে বা কৌশল ঠিক করতে উঠেপড়ে লেগেছেন।
অল্প কজন লেখক, যারা এই খেলা থেকে সরে আছেন—যেমন সেলিঙার এবং পিঞ্চন—তাদের এককালে দারুণ রোমান্টিক ভাবা হতো, লেখক হিসেবে লেখকের একধরনের ফিকে হয়ে আসা চেহারা আঁকড়ে আছেন। এখন শিল্প এবং এর বাইরে ব্যাপারটা বুঝতে ব্যর্থ বিচিত্র খ্যাপা ভাবা হচ্ছে তাদের।
প্রকাশনা ক্ষেত্রে সাম্প্রতিককালের করুণতম মুহূর্ত ছিল 'প্রাইমারি কালার্স' ঘিরে ঘটনাপ্রবাহ। জো ক্লেইন ভেবেছিলেন প্রচ্ছদে জনপ্রিয় তারকার নাম থাকলে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই নিজের উপন্যাসই গোস্টরাইট করেন তিনি এবং ১৯৯৬ সালের সবচেয়ে চমকপ্রদ লেখক 'অ্যানোনিমাস'-কে সৃষ্টি করেন। শেষতক, নামের নেপথ্যের মানুষ হিসেবে নিজের নাম প্রকাশ করার পর ক্লেইনের দিকে ছুড়ে দেওয়া মানুষের ক্রোধের মাত্রা বিশেষভাবে বিভ্রান্তিকর ছিল। মানুষ বলাবলি করেছে যে এর কারণ তার বন্ধুবান্ধব এবং পাঠকদের অনৈতিক প্রতারণা। কিন্তু নৈতিকতার সাথে এর সম্পর্ক আছে বলে আমার মনে হয় না। বরং 'প্রাইমারি কালার্সে'র লেখক আসলে মোটেই বিখ্যাত কেউ না হওয়ার গভীর হতাশা ছিল ব্যাপারটা। তিনি সামান্য লেখকমাত্র।
[মার্চ ২৫ ১৯৯৭]
- পাদটীকা:
আমাদের বাংলাদেশেও গোস্টরাইটারের চল শুরু হয়েছে বেশ আগে, সাবেক পাকিস্তানি আমলে, সেবা প্রকাশনীর হাত ধরে। এখন সবাই জানেন কাজী আনোয়ার হোসেনের সৃষ্টি সবার প্রিয় কুয়াশা এবং মাসুদ রানা সিরিজের বইগুলো একাধিক গোস্টরাইটারের লেখা। তাদের ভেতর আছেন শেখ আব্দুল হাকিম, হাসান উৎপল ওরফে শাহাদৎ চৌধুরী, খন্দকার আলী আশরাফ ওরফে ইউসুফ ফারুক, রাহাত খান ওরফে সাগর চৌধুরী, কাজী মাহবুব হোসেন নিয়াজ মোর্শেদ এবং ইফতেখার আমিনসহ আরও অনেকে। বিদ্যুৎ মিত্র কাজীদার সূচনাকালীন ছদ্মনাম হলেও পরে অন্যের লেখা অনেক বই এ নামে বেরিয়েছে। কাজীদার আরেকটি ছদ্মনাম বা সিন্ডিকেটেড লেখক শামসুদ্দিন নওয়াব নামের আড়ালেও সেবার অন্য লেখকরাই কলকাঠি নেড়েছেন। সেবার সাগর চৌধুরী নামে বেশ কয়েকজন লেখক ভয়াল সিরিজের বইগুলো লিখেছেন। সব্যসাচী সেবার আরেক গোস্টরাইটারের নাম। এ ছাড়া এ দেশের একজন জনপ্রিয় বহুপ্রজ শিশু-সাহিত্যিকের বেশির ভাগ রচনাই আরেকজন ছড়াকার-সম্পাদকের লেখা। বাংলাদেশের মিডিয়া জগতের একজন প্রথিতযশা ব্যক্তিত্বের নামে বেরোনো গোয়েন্দা সিরিজের বইগুলো তারই টিভি চ্যানেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আরেক ছড়াকারের লেখা বলে শোনা যায়, সত্যি-মিথ্যা জানা যায়নি। বেশ কয়েক বছর আগে দেশের প্রকাশনা জগতে নিশাত চৌধুরী নামের এক লেখকের আবির্ভাব ঘটেছিল। হুমায়ুন আহমেদকে অনুকরণ করে জনপ্রিয়তা পাওয়ার কসরত করেছিলেন তিনি। এই লেখকের আয়ু ছিল বেশ সংক্ষিপ্ত। আসলে খোদ প্রকাশকই ছিলেন ওই নামের নেপথ্যে আর গল্পগুলো লিখে দিয়েছিলেন একটু আগে উল্লেখ করা সেই ছড়াকার-সম্পাদক। জনান্তিকে শোনা যায়, অনেক চলচ্চিত্র ও টিভি তারকাও ইদানীং গোস্টরাইটার মারফত লেখক হিসেবে পরিচিত হওয়ার শখ মেটাচ্ছেন।