সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি করতে হবে ভোজ্যতেল: টিপু মুনশি
ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কালো হাত রুখে দিতে যতদূর যাওয়া দরকার, সরকার ততদূর পর্যন্ত যাবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিসহ বুধবার (২ মার্চ) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, "আন্তর্জাতিক বাজার পর্যালোচনা করে সরকার ভোজ্যতেলের যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেই দামেই তা বিক্রি করতে হবে। এটাই ন্যায্য দাম।"
"কিন্তু দেখা গেছে, সরকার নির্ধারিত দামের সঙ্গে বাজারের দামের গড়মিল আছে। জানি, বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের অপচেষ্টা চলছে। কোনো কালো হাত যাতে বাজারে ঢুকতে না পারে, সেজন্য ডিজিএফআই, এনএসআই, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসকরা কাজ করছেন," বলেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "প্রধানমন্ত্রীও সরকার নির্ধারিত দাম মেইনটেইন করতে বলেছেন। আমরা তাই করবো। এজন্য যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, আমরা তা নেবো।"
তিনি বলেন, "কয়েকদিন আগে তেলের ব্যবসায়ীরা এসেছিল দাম বাড়াতে। আমরা তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছি।"
"কিন্তু আমাদের কাছে খবর আছে, বোতলজাত ভোজ্যতেলের দাম না বাড়াতে পেরে অসাধু ব্যবসায়ীরা খোলা তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে এবং বোতল কেটে তেল বের করে খোলা তেল হিসেবে বেশি দামে বিক্রি করছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ তেল মজুদ করছে বলেও আমাদের কাছে খবর আছে," যোগ করেন টিপু মুনশি।
"বাজারে কারসাজি হচ্ছে। আমরাও কারসাজির বিরুদ্ধে কাজ শুরু করেছি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা অভিযান শুরু করবে। প্রয়োজনে যৌথ অভিযানও পরিচালনা করা হবে," বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: দেশের ইতিহাসে ভোজ্যতেলের দাম সর্বোচ্চ
বিভিন্ন সময়ই ভোজ্যতেল মিল মালিকদের সংগঠন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে উল্লেখ করে সাংবাদিকরা প্রশ্ন রাখেন, ব্যবসায়ী নাকি সরকার, কার হাত বেশি শক্তিশালী?
"সব ব্যবসায়ী এ কাজ করেন না। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাজার অস্থিরতার সঙ্গে জড়িত। দেশের উন্নয়নে ব্যবসায়ীদের অবদান আছে। তবে এটা মনে রাখতে হবে যে, সরকারের হাত অনেক শক্তিশালী। সরকারের চেয়ে বড় হাত কারও নেই," জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
আগামী ৩১ মে থেকে বাজারে খোলা সয়াবিন বিক্রি নিষিদ্ধ হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, "আগামী ৩১ ডিসেম্বরের পর খোলা পামঅয়েল বিক্রি করা যাবে না। বোতলজাত অথবা পলিপ্যাকে ভোজ্যতেল বিক্রি করতে হবে। এজন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।"
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, রোজা সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা হবে, যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে।
রমজানে ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কোনো সংকট হবে না জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, "বিভিন্ন পণ্য যে পরিমাণ আমদানি হয়েছে, রমজান মাস শেষেও তা শেষ হবে না। ফলে রমজানে পণ্যের সরবরাহে কোনো ঘাটতির আশঙ্কা নেই।"
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি এর মাধ্যমে সরকার এক কোটি পরিবারকে রমজানে কম মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পণ্যের মজুদ অনেক বেশি থাকায় এক কোটি পরিবারের জন্য বিপুল পরিমাণ পণ্য সংগ্রহেও কোন সমস্যা হয়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি।