শ্রীলঙ্কার ঋণ পরিশোধ সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করতে পারে বাংলাদেশ, জ্বালানি খাতে সহায়তা দেবে ভারত
শ্রীলঙ্কাকে চলমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে উদ্ধারে পাশে দাঁড়িয়েছে প্রতিবেশীগুলো। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ৪৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করতে আগ্রহী। সেইসঙ্গে, জ্বালানি কিনতে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্থ সহায়তা দেবে ভারত। সম্প্রতি ইকনোমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
এদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সহায়তা পেতে প্রায় ছয় মাস সময় লাগবে বলে জানা গেছে। সেই সহায়তাও দেওয়া হবে ধাপে ধাপে। তাই এই মুহূর্তে প্রতিবেশী দেশগুলোর পক্ষে যতটুকু সম্ভব, ততটুকু নিয়েই শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়াচ্ছে তারা।
ভারতীয় গণমাধ্যমকে শ্রীলঙ্কার এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, "জনগণকে প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করতে অন্তর্বর্তীকালীন এই সময়ের মধ্যে তহবিল খুঁজে বের করতে হবে আমাদের।"
এছাড়া, চরম এই অর্থনৈতিক সংকটে শ্রীলঙ্কাকে জরুরী সহায়তা প্রদান এবং দেশের সবচেয়ে দুর্বল খাতগুলোকে রক্ষা করার আশ্বাস দিয়েছে আইএমএফ।
এ পর্যন্ত ভারত দেশটিতে প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলার সহায়তা বাড়িয়েছে।
অন্যদিকে চীন জানিয়েছে, কলম্বোকে 'জরুরি মানবিক সহায়তা' দেবে তারা। তবে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা পুনঃনির্ধারণের বিষয়ে নীরব রয়েছে দেশটি।
চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির মুখপাত্র জু ওয়েই জানিয়েছেন, বর্তমান সংকট মোকাবেলায় শ্রীলঙ্কাকে সাহায্য করতে জরুরি মানবিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন সরকার।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সিনহুয়াকে জু ওয়েন আরও বলেন, চীন শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট সম্পর্কে অবগত; এবং ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে চীন সরকার শ্রীলঙ্কার বর্তমান সমস্যা মোকাবেলায় জরুরি মানবিক সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বুধবার, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনেও একই কথা পুনরাবৃত্তি করেন।
ওয়াং বলেন, "শ্রীলঙ্কায় জরুরি মানবিক সহায়তা পাঠাবে চীন সরকার।"
"আমরা শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করতে এবং জনগণের জীবনযাত্রা উন্নয়নে সাহায্য করতে আমাদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখবো", যোগ করেন তিনি।
১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার পর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটের মোকাবেলা করছে শ্রীলঙ্কা। রাজাপাকসে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনবিক্ষোভ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা দেশটি শেষরক্ষা হিসেবে আইএমএফসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছের সহায়তার আবেদন জানিয়েছে।