‘হুড়মুড়িয়ে উইকেট হারানো মেনে নেওয়ার মতো না’
সব ঠিকঠাক চলছে, স্কোরকার্ডে জমা হচ্ছে রান। কিন্তু একজন ব্যটসম্যান আউট হতেই উল্টো পথে হাঁটা শুরু। চোখের পলকেই নেই আরও কয়েক উইকেট। মুহূর্তের ব্যবধানেই স্কোরকার্ডের ছন্নছাড়া চেহারা। বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসে এমন দৃশ্য অনেক দেখা গেছে। সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ব্যাটিং নিয়ে ভুগেছে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টেও বিধ্বস্ত অবস্থা ছিল বাংলাদেশের। টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম ইনিংসের শুরুতে রীতিমতো আসা যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ২৪ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। এতদিন পরও হুড়মুড়িয়ে এভাবে উইকেট হারানোর ব্যাপারটি সহজভাবে নিচ্ছেন না বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স।
অস্ট্রেলিয়ান এই কোচের মতো হঠাৎ অনেকগুলো উইকেট হারিয়ে ফেলার ব্যাপারটি মেনে নেওয়ার মতো নয়। মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শুরুর আগে ধারাভাষ্যকারদের সঙ্গে আলাপকালে সিডন্স বলেন, 'আমার মনে হয় আমাদের এখনও একসঙ্গে উইকেট হারানোর প্রবণতা রয়ে গেছে। এই দিকটায় কোনো বদল আসেনি। আমাদের এটা দ্রুত বদলাতে হবে। এটা মেনে নেওয়ার মতো না।'
এটা কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারেও অবশ্য আশাবাদী বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ, 'এই ম্যাচেই যেমন অল্প রানে পাঁচ উইকেট গেছে। দক্ষিণ আফ্রিকাতেও এমন হয়েছে। আমাদের এটা দ্রুত বদলাতে হবে। আমার মনে হয় না এটা থেকে বেশি দূরে আছি। কিছু কৌশলগত ও মানসিক পরিবর্তন আনলেই আমরা দ্রুত পরিবর্তন দেখতে পাব। তবে এখন লম্বা সময় ব্যাট করার সামর্থ্যটা দুর্দান্ত। মুশফিক, লিটন, প্রথম টেস্টে তামিম; এগুলো তখন (২০১১ সালে) খুব একটা দেখা যেত না। তো এই পরিবর্তনটা এসেছে।'
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মাঝে খুব একটা পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছেন না সিডন্স। তবে পেশাদারিত্ব বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি। সিডন্সের চোখে সিনিয়র ক্রিকেটাররা এখনও দলের সেরা পারফর্মার, 'সত্যি বলতে পারফরম্যান্স ও আচরণের দিক থেকে খুব বেশি পরিবর্তন দেখিনি। তবে তারা এখন অনেক বেশি পেশাদার। সিনিয়ররা এখনও সেরা খেলোয়াড় লিটনকে বাদ দিলে হয়তো; সে এখন সিনিয়র খেলোয়াড় হওয়ার পথে। সবচেয়ে বড় বদলটা এসেছে পেস বোলারদের দিক থেকে, বাংলাদেশের এখন দুর্দান্ত কিছু পেসার আছে। এটা বাংলাদেশকে আরও শক্তিশালী দল হিসেবে গড়ে তুলবে।'
১৭৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলা মুশফিকুর রহিমে মুগ্ধ সিডন্স। তার মতে এটা মুশফিকের টেস্ট ক্যরিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস, 'মুশফিক অসাধারণ খেলোয়াড়। তার ঘুরে দাঁড়াতে খুব বেশি কিছুর দরকার পড়ে না। আমরা তার প্রস্তুতিতে ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন এনেছি, তার পা নিয়ে কিছু কাজ করেছি। যা যথেষ্ট মনে হয়েছে। চট্টগ্রামে সে নিজেই পথ খুঁজে নিয়েছে, দারুণ ব্যাটিং করেছে। আমি মনে করি, এই ম্যাচের সেঞ্চুরিটি তার অন্যতম সেরা ইনিংস। সে আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেয়েছে।'
দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের কাছ থেকে শেষবেলায় সেরা পারফরম্যান্স চান সিডন্স। তার ভাষায়, 'সিনিয়র খেলোয়াড়দের জন্য আমার কাজটা হলো তাদের পথ সহজ করা। তাদের ক্যারিয়ারের শেষ ৩-৪ বছর অবশ্যই সেরা ফর্মে কাটানো উচিত। গ্রাফটা নিম্নমুখী হলে চলবে না। সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবে তাদের ছোটখাটো কিছু এডজাস্টমেন্ট প্রয়োজন। আমরা সেগুলো নিয়েই কাজ করছি।'