‘বুফন কখনও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতেননি’- শিরোপা হাতে কোর্তোয়া
ইংলিশ জায়ান্ট লিভারপুলকে ১-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের ১৪তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা নিশ্চিত করেছে স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ। ভিনিসিউস জুনিয়রের একমাত্র গোলে লিভারপুলকে দুঃস্বপ্নের রাত উপহার দিলেও লস ব্লাঙ্কোসদের জয়ের আসল নায়ক ছিলেন গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। তার অসামান্য নৈপূণ্যেই প্যারিস থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা মুঠোবন্দী করে ঘরে ফেরে রিয়াল মাদ্রিদ।
ফাইনালর ৯০ মিনিটে মোট ৯টি গোল সেভ করেছেন বেলজিয়ান এই গোলরক্ষক। আর তাতেই লিভারপুলের ২০১৮ সালের হারের প্রতিশোধ নেওয়ার স্বপ্ন চুরমার হয়েছে। সেদিন গোলরক্ষক লরিস কারিউসের অত্যন্ত বাজে পারফরমেন্সের কারণে হার মেনে নিতে হয় লিভারপুলকে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের উত্তেজনাময় রাতে দুর্দান্ত পারফরমেন্সের কোর্তোয়া বলেন, 'আমার সন্তান জন্মের সময় যে রকম আনন্দ হয়েছিল, আজকের অনুভূতিটাও সে রকম সর্বোচ্চ আনন্দের।'
বেলজিয়ান এই তারকা আরও বলেন, 'বুফন হয়তো সর্বকালের শ্রেষ্ঠ গোলরক্ষক, কিন্তু তিনি কোনোদিন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতেননি। আমি চাইনি আমার সাথেও এমনটা হোক।'
ম্যাচজুড়ে সবার নজর কেড়েছেন কোর্তোয়া এবং তারই স্বীকৃতিস্বরূপ ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন তিনি। পুরস্কার গ্রহণের পর কথা বলতে গিয়ে নয়টি সেভের মধ্যে প্রিয় একটির কথা উল্লেখ করেন তিনি। কোর্তোয়া তার পুরনো দিনের স্মৃতিচারণা করেন। বেলজিয়ান এই গোলরক্ষক জানান, চেলসিতে কখনোই প্রাপ্য সম্মান পাননি তিনি।
'নয়টি সেভের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় ছিল মানের গোলটি আটকানো। মাত্র দুই মিটার জায়গার মধ্যে মুহূর্তের মধ্যে আমাকে ঘুরে সেই গোল আটকাতে হয়েছে।' এএফপিকে বলেন কোর্তোয়া।
আরও এক দশক আগে, ২০১১ সালে বেলজিয়ান লিগ জয়ের পরেই কোর্তোয়ার দক্ষতার পরিচয় পায় বিশ্ব। এরপর দেশের হয়ে একাধিকবার অসাধারণ পারফরমেন্স দেখিয়েছেন কোর্তোয়া। স্পেনে আতলেটিকো মাদ্রিদ, ইংল্যান্ডে চেলসি এবং রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে নিজের দ্যুতি ছড়িয়েছেন তিনি। সেই সাথে দিয়েগো সিমিওনের অধীনে ইউরোপা লিগ জয়ের স্বাদও পেয়েছেন ৩০ বছর বয়সী কোর্তোয়া।
স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে চার বছর কাটানোর পর দ্বিতীয়বারের মতো স্পেনে ফিরে আসেন কোর্তোয়া, রাজত্ব শুরু করেন জনপ্রিয় ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে। রিয়ালে এসে কেলর নাভাসকে সরিয়ে দিয়ে নিজের অবস্থান শক্ত করতে খুব বেশি সময় নেননি কোর্তোয়া।
ইংল্যান্ডে কাটানো সময় নিয়ে কোর্তোয়া বলেন, 'ইংল্যান্ডে একটা ম্যাগাজিন ছিল, যারা বিশ্বের সেরা ১০ গোলরক্ষকের মধ্যে আমাকে রাখেনি। তাদের মধ্যে সম্মানবোধের অভাব ছিল। আমি বলছি না যে আমাকে শীর্ষে রাখতে হবে, কিন্তু সেরা দশে আমাকে না রাখাটা অদ্ভুত ছিল! আমি চেলসির হয়ে দুবার প্রিমিয়ার লিগ জিতেছি। কিন্তু আমার মনে হয় না সেখানে কোনোদিন যোগ্য স্বীকৃতি পেয়েছি।'
তিনি আরও বলেন, 'রিয়াল মাদ্রিদে আমার প্রথম মৌসুমেও অনেকে আমাকে দেখে হেসেছিল, কিন্তু এখন আমি বিজয়ী আর এটা অসম্ভব সুন্দর একটা অনুভূতি।' প্যারিসে কোর্তোয়ার ৯টি সেভ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস