করোনা শঙ্কার মধ্যেই শুরু হচ্ছে প্রিমিয়ার লিগ
বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসকে মহামারি ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা সতর্কতায় বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেলা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, লা লিগা, সিরি এ'র খেলাসহ আরও অনেক টুর্নামেন্ট।
ক্রিকেট মাঠও এর ব্যতিক্রম নয়। সিরিজ শেষ না করেই অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরে গেছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল। ইংল্যান্ডের শ্রীলঙ্কা সফর স্থগিত হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এশিয়া একাদশ-বিশ্ব একাদশের মধ্যকার ম্যাচও অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
তবে এতো স্থগিতের মধ্যেই শুরু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের এবারের আসর।
বাংলাদেশে কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী নেই বলে শনিবার জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর)। এর আগে গত সপ্তাহে যে তিনজনের আক্রান্ত হওয়ার খবর দিয়েছিলো প্রতিষ্ঠানটি তারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন বলে আজ শনিবার জানানো হয়েছে।
এই সুসংবাদের মধ্যেও উন্নত অনেক দেশ আক্রান্ত হওয়ায় করোনা নিয়ে শঙ্কা বেড়েই চলছে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে স্থগিত করা হয়েছে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান, বাড়তি সতর্কতা মেনে চলতে বলা হয়েছে সবাইকে।
১৫ মার্চ থেকে শুরু হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্টেও সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা হবে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী। করোনা সতর্কতায় বিসিবির মেডিকেল টিম সব সময় প্রস্তুত থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের টাইটেল স্পন্সরশিপ ঘোষণা অনুষ্ঠানে এ নিয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী বলেন, 'করোনা ভাইরাসকে বিবেচনায় রেখে সরকার যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ও মেডিকেল অ্যাডভাইজরি দিচ্ছে, সেগুলো আমরা অনুসরণ করব। আমরা এরই মধ্যে ক্লাবগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং আজ একটি টিম মিটিং আছে।'
'বিসিবি থেকে এটা নিশ্চিত করা হবে, যদি কোনো খেলোয়াড় বা অফিসিয়াল সামন্যতম অসুস্থ বা লক্ষণ দেখা যায়, তাৎক্ষণিক যেন বিসিবির মেডিকেল টিম এবং ক্লাবকে জানায়। ক্লাব যেন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।'
মাঠে খেলোয়াড়রা হ্যান্ডসেক করে থাকেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় হ্যান্ডসেক না করার পরামর্শ দিচ্ছেন নিজাম উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, 'সাম্প্রতিক সবদিক বিবেচনা করে আমরা হ্যান্ডশেক না করার পরামর্শ দিব। এ রকম বিষয়গুলো ক্লাবগুলো যেন ফলো করে। এ ছাড়া দর্শকদের ব্যাপারে যেটা বলা হয়েছে, সেটা আমাদের আন্তর্জাতিক ম্যাচে বিবেচনার বিষয় ছিল। এ ম্যাচে হয়তো রেসট্রিকশনের প্রয়োজন হবে না। তারপরও আমরা বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখব।'
এ সময় বাংলাদেশের তৃতীয় দফার পাকিস্তান সফর নিয়েও কথা বলেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী। আপাতত পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নিজাম উদ্দিন চৌধুরী। তৃতীয় দফার পাকিস্তান সফরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গেলেও পিসিবি কী বলে, সেটা জেনেই সফরের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিসিবি।
তিনি বলেন, 'পাকিস্তান আয়োজক। সিদ্ধান্তটা পাকিস্তান নেবে। আমরা দেখি পাকিস্তান কী সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের ঘরোয়া যে লিগ (পিএসএল) হচ্ছে, সেখান থেকে ৯-১০ জন বিদেশি খেলোয়াড় চলে গেছে। আমরা পাকিস্তানের সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায় আছি। আমরা সফরকারী দল, আমরা যে কোনো সময়ই সিদ্ধান্ত নিতে পারি। আমরা প্রত্যাশা করছি, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড খুব শিগগিরিই তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে।'