বসবাসের জন্য বিশ্বে যে শহরগুলো সবচেয়ে ব্যয়বহুল
বিশ্বজুড়ে বাড়ছে জীবন চলার খরচ। এমনকি সাংহাই এবং হংকং-এর মতো বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরগুলোতে যারা বিলাসী জীবনযাপন করেন, বিলাসবহুল পণ্যের ক্রমবর্ধমান ব্যয় তাদের ক্রয় ক্ষমতার ওপরেও প্রভাব ফেলেছে কিছুটা।
অন্যদিকে, লন্ডন ও নিউইয়র্কে বসবাসকারী ধনীক শ্রেণির জন্য ডিজাইনার হ্যান্ডব্যাগ, জুতা, স্যুট এবং উচ্চ মূল্যের ঘড়িও সেদেশের সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতির হারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
সম্প্রতি বিলাসবহুল পণ্যের দামবৃদ্ধি এবং এরসঙ্গে আর্থিক নীতির বৈশ্বিক ভিন্নতা উঠে এসেছে জুলিয়াস বেয়ার গ্রুপ লিমিটেডের ২০২২ সালের প্রতিবেদনে। সংস্থাটির 'গ্লোবাল ওয়েলথ অ্যান্ড লাইফস্টাইল' প্রতিবেদনে আবাসিক সম্পদ, গাড়ি, বিমান ভাড়া, বিজনেস স্কুল এবং অন্যান্য খরচ বিশ্লেষণ করে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরগুলোর একটি তালিকা বানানো হয়েছে। সে তালিকায় গতবারের মতো এবারও শীর্ষস্থান দখল করে নিয়েছে চীনের সাংহাই। টোকিওর কাছ থেকে লন্ডন ছিনিয়ে নিয়েছে দ্বিতীয় স্থান। আর টোকিও নেমেছে ৮ম স্থানে। এদিকে, নিউইয়র্ক রয়েছে গত বছরের জরিপের তুলনায় এক ধাপ নিচে, ১১তম স্থানে।
এ জরিপের মাধ্যমে বোঝা গেল, ধনীরাও মুদ্রাস্ফীতির প্রকোপের বাইরে নন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির হার ৮.৬ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যে ৯ শতাংশে পৌঁছেছে। এসব দেশে বসবাসকারী সাধারণ জনগণ মুদ্রাস্ফীতির প্রকোপে যতটা ভুগছেন, অতি ধনীক শ্রেণি ততটা না ভুগলেও তাদের ওপরেও এর প্রভাব পড়েছে। কিছুটা হলেও কমেছে তাদের ক্রয়ক্ষমতা।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে, বিশ্বের ৫০০ জন ধনী ব্যক্তি সম্মিলিতভাবে এ বছর ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার সম্পদ হারিয়েছেন।
বুধবার জুলিয়াস বেয়ার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, "যদিও অনেক ধনী ব্যক্তির আর্থিক পরিস্থিতি গত বছরের তুলনায় উন্নত হয়েছে, তবে আমাদের লাইফস্টাইল ইন্ডেক্স (জীবনযাত্রার সূচক) তৈরি করে এমন পণ্য ও পরিষেবার মূল্যবৃদ্ধির অর্থ হলো আগের বছরগুলোর 'অর্থ বিভ্রম' এখনও কাটেনি।"
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, "তবুও আমাদের সমীক্ষা মহামারি পরবর্তী আশাবাদ প্রকাশ করে। ধনীরা আবারও স্বাভাবিকভাবে খরচ করতে শুরু করছেন।"
ল্যাপটপ এবং স্মার্টফোনের মতো প্রযুক্তিগত পণ্যের দাম বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি, ৪১ শতাংশ বেড়েছে। মূলত মহামারিজনিত লকডাউনের কারণে 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' বা বাড়ি থেকে কাজ করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব ডিভাইসের চাহিদা বেড়েছে; আর এর সঙ্গে বেড়েছে দামও।
একজন আইনজীবী নিয়োগের ব্যয় আগের তুলনায় বেড়েছে ৩৩ শতাংশ, যেখানে বাইকের দাম ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এর বিপরীতে আবার অন্যান্য বিলাসী পণ্যের তুলনায় ওয়াইনের দাম কমেছে ২৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনটি গত নভেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে দুই ধাপে সংগৃহীত ডেটা ওপর ভিত্তি করে, ২৪ টি শহরে প্রায় ২০টি পণ্য ও পরিষেবার মূল্য বিশ্লেষণ করে তৈরি করা হয়েছে। এ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে রাশিয়ার মস্কোকে।
- সূত্র: ব্লুমবার্গ