ভালোবাসার প্রমাণ দিতে পরস্পর শিকলবদ্ধ প্রেমিক যুগল!
ভালোবাসার প্রমাণ দিতে মানুষ কত কিছুই না করে! তবে এবার সব ছাড়িয়ে তরুণ ইউক্রেনিয়ান যুগল সম্পর্কের পরীক্ষা নিতে নতুন এক কাণ্ড করে বসেছে।
তিন মাসের জন্য শিকলে নিজেদের হাত বেঁধে নিয়েছেন তারা।
ইউক্রেনের তরুণ যুগল আলেক্সান্দার কুদলে ও ভিক্তোরিয়া পুস্তোভিতোভা। এ বছর তারা ভালোবাসা দিবস ব্যতিক্রমী উপায়ে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি এই যুগল কিয়েভে ভ্রমণ করেন। সেখানে দেশটির জাতীয় রেকর্ড রেজিস্টারের এক প্রতিনিধির মাধ্যমে নিজেদের হাতে শিকল পরিয়ে নেন। শিকলটি সিলগালাও করে দেওয়া হয়।
আগামী তিন মাস এক মুহূর্তের জন্যও পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছেন না এই প্রেমিক-প্রেমিকা। ঘুমানো থেকে শুরু করে গোসল করা, এমনকি শৌচকর্ম পর্যন্ত একসঙ্গেই সারবেন তারা।
'আমরা রেকর্ড গড়তে যাচ্ছি,' ইউক্রেনিয়ান প্রতিবেদকদের বলেন আলেকজান্ডার। 'আমাদের মধ্যে এখন শিকল আছে এবং সবগুলো সংযোগই ঝালাই করা। শেষ সংযোগটি জাতীয় রেকর্ড রেজিস্টারের চিহ্নসহ সিল করা আছে।'
আগামী তিন মাস একত্রে থাকার বিষয়ে পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের দাবি করেন এই প্রেমিক যুগল। তবে তারা চাইলে এই শিকল থেকে মুক্ত হতে পারেন।
ইউক্রেন জাতীয় রেকর্ড রেজিস্টারের কর্মকর্তা ভিটালি জোরিন বলেন, 'লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই যদি তারা শিকলটি খুলতে চান, তাহলে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে তা কাটার জন্য তৃতীয় কারও সাহায্যের প্রয়োজন পড়বে।'
জোরিন আরও জানান, তত্ত্বাবধানে রাজি হওয়ার আগেই তিনি আলেক্সান্দার ও ভিক্তোরিয়ার মানসিক সুস্থতার প্রমাণ নেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি সত্যিকারের ঝালাইকারীর মাধ্যমেই তারা নিজেদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধতার নিদর্শন হিসেবে কিয়েভের স্ট্যাচু অব ইউনিটির সামনে হাতে শিকল পরে নেন।
আগামী তিন মাস তাদের একত্রে থাকার মুহূর্ত ধারণ করে আলেক্সান্দার ও ভিক্তোরিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রচার করবেন। তবে একসঙ্গে থাকার ক্ষেত্রে তাদের প্রথম বাধা হয়ে দাঁড়ায় পাবলিক টয়লেট। হাতে শিকল বেঁধে বাড়ি ফেরার পথে বাথরুমের জন্য সময় নিতে হয় তাদের। কিন্তু যাবেন কোথায়? পুরুষ না কি নারীদের টয়লেটে? শেষ পর্যন্ত রাস্তার ধারে এক রেস্তোরাঁর লেডিস টয়লেটে গেলেও নারী পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হন তারা।
গত কয়েকদিন ধরে এই প্রেমিক যুগল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ছবি ও ক্লিপ আপলোড করে আসছেন। একসঙ্গে বিভিন্ন কাজ করতে গিয়ে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন তারা, সেসবই উঠে আসছে এসব পোস্টে। দুজনকেই একাধিক চেইনযুক্ত বিশেষ ধরনের পোশাক পরতে হচ্ছে। পালাবদল করে সারতে হচ্ছে গোসল। এছাড়াও প্রতিটি কাজ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য আগে থেকেই ঠিকমতো পরিকল্পনা করে নেওয়ার প্রয়োজন পড়ছে।
নিজেরা আগামী তিন মাস শিকলবদ্ধ হয়ে থাকার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী হলেও খুব কম মানুষই এই যুগলকে সমর্থন করছেন। এমনকি তিন মাস তারা একত্রে থাকতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে বাজিও ধরেছেন।
- সূত্র: অডিটি সেন্ট্রাল