শুধু চকলেট খাওয়ার জন্য বছরে বেতন ৭৮,০০০ ডলার!
চকলেট ছেলেবুড়ো সবারই ভীষণ প্রিয় খাবার। প্রিয় চকলেট হাতে পেলে নিমিষেই মন ভালো হয়ে যায় অনেকের। কিন্তু কখনো ভেবেছেন কী এমনও চাকরি থাকতে পারে যেখানে কাজই হচ্ছে শুধু চকলেট খাওয়া, তাও আবার বিনামূল্যে! 'ক্যান্ডি ফানহাউজ' নামক একটি কানাডিয়ান কোম্পানি নিয়ে এসেছে এমনই একটি সুযোগ। বার্ষিক ৭৮,০০০ ডলার বেতনে প্রধান ক্যান্ডি অফিসারের পদে কর্মী নিয়োগ দিতে আগ্রহী এই প্রতিষ্ঠানটি। আর সেই কর্মীর কাজ হবে প্রতিষ্ঠানের তৈরি বিভিন্ন চকলেট চেখে দেখা।
শুধু তাই নয়, প্রধান ক্যান্ডি অফিসারের চাকরিটি হবে ওয়ার্ক ফ্রম হোম, অর্থাৎ ঘরে বসেই এই দায়িত্ব পালন করা যাবে। এই পদে যোগদান করলে যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে তা হলো- চকলেটের ব্যাপারে বোর্ড মিটিং পরিচালনা করা, সব ধরনের চকলেট চেখে দেখার মূল দায়িত্ব পালন করা এবং আরও অনেক মজার মজার কাজ।
অবাক করা ব্যাপার হলো- প্রধান ক্যান্ডি অফিসারের পদের জন্য আবেদন করতে পারবে সর্বোচ্চ ৫ বছর বয়সী শিশুরা! সাথে তাদের মা-বাবার সম্মতিপত্রও থাকতে হবে। বহু বাবা-মা তাদের সন্তানদের ফরম পূরণের ভিডিও করে অনলাইনে পোস্ট করতে দেখা গেছে।
তবে এর মধ্যে আকর্ষণও আছে উল্লেখ করে হেজাজি বলেন, "চকলেট নিয়ে আপনার সেরা স্মৃতির কথা ভাবুন... সেই প্রিয় জিনিসই যখন আপনি প্রতিদিন খেতে পারছেন, ব্যাপারটা কি চমৎকার!"
গেল জুলাইয়ে লিংকডইনে এই চাকরির অফার পোস্ট করতেই হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন আগ্রহীরা। ইতোমধ্যেই হাজার হাজার আবেদন জমা পড়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা জামাল হেজাজি। আবেদনকারীর সংখ্যা এবং ভিডিওবার্তার মাধ্যমে পরিবারগুলোর আগ্রহ প্রকাশের ধরন দেখে বিস্মিত তিনি।
টরন্টোর বাইরে অবস্থিত 'ক্যান্ডি ফানহাউজ' এর প্রতিষ্ঠাতা দুই ভাই সেই অঞ্চলেই বেড়ে উঠেছেন। তাদের বাবা-মায়ের ডোনাট শপ এবং রেস্টুরেন্ট ছিল। হেজাজি বলেন, "আমার ভাই মো খুবই চকলেটপাগল মানুষ। সে ২০১৮ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি দাঁড় করায়। আমার মা ছিলেন তখন এখানকার দ্বিতীয় কর্মী।" পরে তার ছোট বোন ও ভাই এই প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন বলে জানান তিনি।
কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে অনলাইন-অফলাইনের অন্যান্য সফল প্রতিষ্ঠানের চাইতে নিজেদের আলাদা করে দেখতে চায় এই পরিবারটি। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে রয়েছে মার্স, হার্শেইস ও আমাজন। কিন্তু ক্যান্ডি ফানহাউজ বলছে, তাদের কাছে 'সর্বনিম্ন অর্ডার' বলে কোনো নিয়ম নেই। 'আমরা শুধুমাত্র একটা ললিপপও বিক্রি করি'- এই বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের প্রচারণা চালাচ্ছে তারা।
২০২১ সালে তাদের মোট বিক্রি ছিল ১৫ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি! সেসময় তাদের চকলেটের রমরমা ব্যবসার পেছনে মহামারির ভূমিকা ছিল।
ইনস্টাগ্রামে বর্তমানে ৩৪০,০০০ এবং টিকটকে তিন মিলিয়ন অনুসারী রয়েছে ক্যান্ডি ফানহাউজ এর। এমনকি কার্দাশিয়ান পরিবারের একজনও তাদের অনুসরণ করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আপাতত হ্যালোইনের প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বছরের এই সময়ে তাদের বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি। হেজাজি জানান, এই মুহূর্তে তাদের স্টকের ৪০ শতাংশ চকলেট বাকি আছে। গত সপ্তাহে ক্যান্ডি জায়ান্ট হার্শেইস জানিয়েছে, এবছর হ্যালোইনের সময় চকলেটের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হবে তাদের।
হেজাজি আরও জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানের ক্যান্ডি অফিসারকে মাসে ৩৫০০ পিস চকলেট খেতে হেব বলে প্রচার করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তার মানে দাঁড়ায় দৈনিক ১১৭টি চকলেট। কিন্তু হেজাজি জানান, এত পরিমাণ চকলেট খাওয়া একজন শিশুর পক্ষে সম্ভব না।
সূত্র: সিএনএন