সরকার কেন সরকারের জমি দখল করে নিচ্ছে!
বাঙালিদের নামে 'সরকার' নিয়মিতই দেখা যায়। কিন্তু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বাদে অন্যান্য রাজ্যে সরকার বলতে রাষ্ট্র/রাজ্যের সর্বোচ্চ নির্বাহী ক্ষমতা চর্চাকারী প্রতিষ্ঠানকেই বোঝে সাধারণত। আর তাতেই বিপদে পড়েছে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে দেশটির কর্ণাটক রাজ্যে পালিয়ে গিয়ে স্থায়ী হওয়ার ৭২৭ হিন্দু শরণার্থী। খবর টাইমস অভ ইন্ডিয়া-র।
৭০০-র বেশি শরণার্থীর পদবি 'সরকার' হওয়ায় তাদের জমি চলে গেছে সরকারি খাতায়। বলা হচ্ছে, সরকার পদবির সঙ্গে সরকারকে গুলিয়ে ফেলায় এই ঘটনা ঘটেছে।
এই ভুল বোঝাবুঝির চক্করে জমির হারানো একজন হলেন বিভূতি সরকার। কয়েক দশক ধরে তাদের মালিকানায় থাকা জমি হঠাৎ করেই সরকারি সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পরে জানা গেল, সরকারি কর্মকর্তারা জমির দলিলে মালিকের নামের সঙ্গে সরকার দেখে জমিটিকে সরকারি সম্পত্তি হিসেবে ধরে নেন।
ফলে কর্ণাটক সরকারের রেকর্ড পোর্টাল 'ভূমি'তে এই জমিগুলোকে 'সরকারি' (sarkari) হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এর জেরেই সরকার পদবির মানুষদের জমির মালিকানা চলে যায় সরকারের কাছে।
কর্ণাটকের রায়চুর জেলায় বিভূতি সরকারের পাঁচ একরের একটি জমি সরকারের মালিকানায় চলে যায়। পরে বিভূতির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দেখা যায়, তাদের নামের পদবিতে সরকার দেখে ভুলে জমিটি সরকারি খাতায় নিয়ে নেওয়া হয়। তিনি একা নন, আরও ৭২৬টি পরিবারের জমি এভাবে সরকারি মালিকানায় চলে যায়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তান ছেড়ে হাজারো হিন্দু ভারতে আশ্রয় নেয়। ওই সময় কর্ণাটকসহ বেশ সাতটি রাজ্যে বিশেষ ক্যাম্পে থাকতে আশ্রয় দেওয়া হয় শরণার্থীদের। সেইসঙ্গে প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ একর করে জমি দেওয়া হয়।
জমি হারানোর ফলে ৭২৭ কৃষক সরকারি কেন্দ্রে তাদের জমির জন্য এমএসপি ও জমির বন্ধকি ঋণ পাচ্ছেন না। এমনকি ফসলের বিমার জন্যও আবেদন করতে পারছেন না।