‘হাউ টু মার্ডার ইয়োর হাজব্যান্ড’ বইয়ের লেখকের স্বামীকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
'কীভাবে আপনার স্বামীকে খুন করবেন' (হাউ টু মার্ডার ইয়োর হাজব্যান্ড) বইয়ের লেখক ন্যান্সি ক্র্যাম্পটন ব্রফিকে স্বামী হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন রাজ্যের একটি আদালত। গুলি করে স্বামী ড্যানিয়েল ব্রফিকে খুন করেন তিনি।
রোম্যান্সধর্মী লেখক ন্যান্সির বিরুদ্ধে গেল মে'র ২৫ তারিখ সেকেন্ড ডিগ্রি খুনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। অপরাধ প্রমাণ হওয়ার পরেও জনাকীর্ণ আদালতে ন্যান্সির মধ্যে কোনো ভাবান্তর দেখা যায়নি।
২০১৮ সালের ২ জুন ৬৩ বছর বয়সী ড্যানিয়েলকে খুন করেন ন্যান্সি। প্রয়াত স্বামী ড্যানিয়েল ব্রফি ওরেগন কিউলিনারি ইনস্টিটিউটের একজন শেফ এবং প্রশিক্ষক ছিলেন। বছর চারেক আগে তাকে ইনস্টিটিউটের রান্নাঘরে দুবার গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
মূলত জীবন বীমার দেড় মিলিয়ন ডলার অর্থের লোভেই নিজের স্বামীকে ন্যান্সি খুন করেছেন বলে উল্লেখ করেন বিচারকদের একটি দল। তবে ন্যান্সি এ অভিযোগ অস্বীকার করেন।
স্বামীকে খুন করার আগেই, ২০১১ সালে ন্যান্সির 'হাউ টু মার্ডার ইয়োর হাজব্যান্ড' বইটি প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি ধরা না পড়ে কীভাবে খুন করতে হয় তার নানা উপায় বিস্তারিতভাবে লিখেছিলেন। খুনের মোটিভ হিসেবে তিনি বর্ণনা করেছেন—আর্থিক, মিথ্যাবাদী, প্রতারক, অ্যাবিউজার ইত্যাদি বিষয়কে।
সেইসঙ্গে খুন করার অনেকগুলো পদ্ধতিরও বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। ছুরি দিয়ে মারলে সেটি হবে ব্যক্তিগত ও কাছাকাছি থেকে খুন, প্রচুর রক্ত ছড়াবে চারপাশে; বিষ হচ্ছে নারীর অস্ত্র, খুব সহজে খুঁজে বের করা যায়; বন্দুক অনেক শব্দ করে, ঝামেলাপূর্ণ, আর চালাতে একটু দক্ষতা লাগে—এসবই লেখা আছে তার ওই বইয়ে।
আলোচিত বইটি ছাড়াও রোমান্স এবং সাসপেন্সধর্মী 'দ্য রং হাজব্যান্ড' এবং 'দ্য রং লাভার'-এর মতো উপন্যাসগুলো তিনি লিখেছেন স্বামীহত্যার আগেই।
প্রসিকিউটরদের দাবি, ন্যান্সি একটি ঘোস্ট গান কিনে সেটির সঙ্গে দোকান থেকে কেনা পিস্তলের যন্ত্রাংশ বদল করে এ খুন করেছেন।
গোস্ট গানগুলো ঘরে বসেই থ্রিডি প্রিন্টিং মেশিনে তৈরি করা যায় অথবা অনলাইনে আলাদা আলাদা করে এগুলোর বিভিন্ন অংশ কেনা যায়। কেউ চাইলে এ অংশগুলো জুড়ে দিয়ে একটি সম্পূর্ণ বন্দুক তৈরি করে ফেলতে পারেন। এই বন্দুকগুলোর কোনো সিরিয়াল নাম্বার থাকে না বলে এগুলোকে ট্রেস করা যায় না।
- সূত্র: বিবিসি