আফগান অর্থনীতির শেষ ভরসাস্থল মুদ্রা ব্যবসায়ীরা
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে গত ১৫ আগস্ট বিকেল ৩টায় প্রবেশ করে তালেবান। আর সাড়ে ৫টা নাগাদ দেশটির কেন্দ্রীয় মুদ্রা বিনিময় বাজার- সরাই শাহজাদার নিয়ন্ত্রণ নেয়। এই বাজারটি আফগানিস্তানের আর্থিক প্রাণকেন্দ্র। প্রতিদিন এখানে কয়েক মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের মুদ্রার লেনদেন হয়। স্বাভাবিক কোন সময়ে এই বাজারকে দেখে ব্যস্ত পুঁজিবাজার বলেই মনে হতো, বিদেশি মুদ্রার প্রতিযোগী মূল্য হাঁকা ব্যবসায়ীদের শোরগোলে সরগরম থাকতো চারপাশ।
দুই দশকে তালেবান আর্থিক শক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে ভালোই সচেতন হয়েছে। কাবুল দখলের সময়ও তাদের চিন্তা ছিল আর্থিক দিকটি নিয়ে। তাই মুদ্রাবাজারকে প্রথমদিকেই নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়।
কিন্তু, দেশটির সামগ্রিক অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক হিসেবে তালেবানের উদয় হওয়ার পরপরই আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ডিএবি) ৯৫০ কোটি ডলার সম্পদ ফ্রিজ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ডিএবি'র এসব সম্পদ মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভে জমা ছিল।
প্রতিশ্রুত শত শত মিলিয়ন ডলার ঋণ ও ত্রাণ সহযোগিতা স্থগিত করেছে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মতো দাতাগোষ্ঠী। গত দুই দশকেও প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতির ভিত্তি মজবুত না হওয়ায় বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল ছিল আফগানিস্তান। ৭৫ শতাংশ সরকারি ব্যয় নির্বাহ হতো বিদেশি অর্থায়নে। সাহায্যের সেই প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়ায় আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে নতুন শাসকগোষ্ঠীসহ আফগান জনগণ।
সংকট যেন বিপর্যয়ে রূপ না নেয় তা নিশ্চিতকরণে দেশটির শেষ রক্ষাকবচ হতে পারে কেন্দ্রীয় মুদ্রা বিনিময় বাজার। গত দুই শতকে জাতীয় সকল সংকটের মধ্যেও আফগান অর্থনীতিকে সমর্থন দিয়েছেন মুদ্রা বিনিময়কারীরা।
এবার যদি আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই মুদ্রা ব্যবসায়ীদের সমর্থন দেয়, তারা দেশটিতে ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখাসহ মুদ্রা সঞ্চালন গতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।
স্থানীয়ভাবে মুদ্রা ব্যবসায়ীদের বলা হয়- সাররাফ, এরা অনেকটাই এক ব্যক্তি কেন্দ্রিক আর্থিক সমিতির মতো কাজ করেন। মুদ্রা বিনিময়ের বাইরে তারা অন্যান্য আর্থিক সেবাও দেন। যেমন: তাদের কাছে নিরাপদে অর্থ রাখা যায়, আবার আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে বা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানির বাণিজ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর পক্ষে বিল পরিশোধ করার দায়িত্বও পালন করেন। অপ্রাতিষ্ঠানিক এই লেনদেন ব্যবস্থাকে 'হাওয়ালা' বলা হয়।
পশ্চিমা সমর্থিত সরকারের সময়েও সিংহভাগ দেশবাসীর দারিদ্র্য ও মুদ্রা ব্যবসায়ীদের সেবাদানের প্রতিযোগী সক্ষমতার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংকিং খাতের খুব একটা বিস্তার ঘটতে পারেনি।
১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রথম আফগান ব্যাংক- ব্যাংক মিল্লি সরকারের কর্মকর্তাদের সঞ্চয়ী হিসাব খোলার মতো প্রাথমিক কিছু সেবা দিত। এরপর ১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক –ডা আফগান ব্যাংক। ১৯৭০ সাল নাগাদ দেশটিতে ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছিল।
তবে ১৯৭৮ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত কমিউনিস্ট সরকারের অধীনে ব্যাংক সেবা প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। সে সময় বৈদেশিক বাণিজ্যের ভার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করায় বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাংকিং সেবার চাহিদা হ্রাস পায়।
১৯৯০ এর দশকের গৃহযুদ্ধকালীন সময়ে ব্যাংকিং খাত নিঃশেষিত হয়ে পড়ে। ২০০২ সালে এসে বিশ্বব্যাংক ঘোষণা করে যে, দেশটির ব্যাংকিং খাত 'সম্পূর্ণ ধ্বংস' হয়ে গেছে আর মান্ধাতার আমলের আর্থিক ব্যবস্থার কারণে অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
তবে ব্যাংকিং ধসের এ সময়ে পরিবর্তিত নানান শাসকগোষ্ঠীর সাথে তাল মিলিয়ে বিকশিত হতে থাকে মুদ্রা বিনিময় বাজার। তালেবান শাসনামলে হাজারা সম্প্রদায়ভুক্ত কিছু মুদ্রা বিনিময়কারীকে শাস্তি দেওয়া হলেও, প্রতিষ্ঠান হিসেবে মুদ্রা বিনিময় বাজার কখনো নিশ্চল হয়নি।
আজ যেখানে কেন্দ্রীয় মুদ্রা বাজার অবস্থিত ১৯৫৭ সালে সেখানে প্রথম এই ব্যবসা শুরু করেন চার জন আফগান ইহুদি। ১৯৭৩ সাল নাগাদ এখানে ৩৫টি ভিন্ন দোকান গড়ে ওঠে। বেশিরভাগ দোকান মালিক ছিল আফগান হিন্দু ও শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ। ইতঃপূর্বের সমাজতন্ত্রী সরকার মুদ্রা বিনিময় ব্যবসায়ীদের প্রদত্ত সেবার চাহিদা সংকুচিত করলেও, তাদের নেটওয়ার্ক সরকারি হস্তক্ষেপ মোকাবিলা করেও টিকে ছিল। বরং সরকারের রোষানলে পড়া আফগানরা বিপদের দিনে মুদ্রা ব্যবসায়ীদের সাহায্য নিয়ে দেশ ছেড়ে পালান।
১৯৯০ এর দশকে মুদ্রা বিনিময় বাজারে প্রধানত দুই ধরনের পরিবর্তন ঘটে। প্রথমত, তালেবানের নির্যাতনে বেশিরভাগ আফগান হিন্দু ও শিখ ভারতে অভিবাসন করলে, দোকানগুলোর মুসলিম কর্মীরাই মালিক হয়ে ওঠে। দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার ফলে মুদ্রা বাজারের ব্যবসায়ীক কর্মকাণ্ডের পরিধি বিস্তৃত হতে থাকে।
এভাবে ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের প্রথম দফা শাসনামলে সরাই শাহজাদা হয়ে ওঠে দেশটিতে অর্থ বিষয়ক সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র। সবসময় এখানে এত ভিড় লেগে থাকতো যে দু-চারজনকে কনুইয়ের গুঁতো না দিয়ে কারো পক্ষেই এখানে যাতায়াত করা সম্ভব ছিল না।
২০০১ সালের শেষদিকে তালেবান শাসন অবসানের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আফগানিস্তান পুনর্গঠন চেষ্টার অংশ হিসেবে আবার একটি সচল ব্যাংকিং ব্যবস্থা স্থাপনকে গুরুত্ব দেয়। নবগঠিত ব্যাংকিং খাতকে সহায়তায় এগিয়ে আসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। মূলধন সহযোগিতার পাশাপাশি খাতটির সংস্কার ও কার্যক্রমকে গত দুই দশকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে দাতা সংস্থাটি, দিয়েছে অতি-দরকারি পরামর্শক সহযোগিতা।
তারপরও বড় শহরগুলোর বাইরে ব্যাংকিং ব্যবস্থার সীমিত সক্ষমতার কারণে মুদ্রা বিনিময়কারীদের ভূমিকা আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় তাদের নিষিদ্ধ করা বা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা দিয়ে প্রতিস্থাপন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই একমাত্র বিকল্প ও সেরা উপায় হিসেবে মুদ্রা ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি-নির্ধারকরা।
তাছাড়া, বেসরকারি ব্যাংকিং খাতও দুর্নীতির বাইরে ছিল না। যেমন, ২০১০ সাল নাগাদ মোট ১৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংক আফগানিস্তানে কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। ২০০৪ সালে তাদের মোট সম্পদ ছিল ২৬ কোটি ডলার, যা ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময়ে ৪২৬ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। কিন্তু, ওই বছরেই কাবুল ব্যাংক নামের একটি বেসরকারি ব্যাংক নিজ নির্বাহীসহ আফগান সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে বিপুল অর্থ পাচার করার কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়ে যায়।
এই ঘটনা ছিল দেশটির বাণিজ্যিক ব্যাংকের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুর্বল নজরদারির ফসল, যা একইসঙ্গে পুরো ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর জনগণের দৌদুল্যমান আস্থাকে শূন্যের কোঠায় নিয়ে যায়। এরপর থেকে বেসরকারি ব্যাংক ঋণ কার্যক্রমে আগের তুলনায় কঠোর হলেও, হারিয়ে যাওয়া আস্থা আর ফিরে আসেনি। তবে ঋণদানে কড়াকড়ির কারণে গত দশকে দেশটির জিডিপির তুলনায় প্রদত্ত ব্যাংক ঋণ বিশ্বের মধ্যে অন্যতম নিম্ন পর্যায়ের বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
অন্যদিকে, তালেবান সরকার পতনের পর মুদ্রা বাজারেও পরিবর্তনের নতুন জোয়ার আসে। এখাতের ব্যবসায়ীরা একমাত্র সচল আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থার সুবিধা দিয়েছেন ২০০১ পরবর্তী সময়ে। কারণ তখনও ব্যাংকিং খাতের সংস্কার চলমান ছিল। বিদেশি সংস্থাগুলোও আফগানিস্তানে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে এখাতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
এসময় নজিরবিহীন পরিমাণ বিদেশি অর্থের স্রোত বয়ে যায় বিনিময় বাজারটিতে। ফলে তালেবান আমলের ২০০ দোকান থেকে বাজারে মোট দোকান সংখ্যা ৪০০টিতে উন্নীত হয়। নতুন রাষ্ট্রীয় আইনের ঝামেলা এড়াতে একজোট হয়ে একটি ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তোলেন মুদ্রা ব্যবসায়ীরা। এমনকি তাদের এ ইউনিয়নের বিরোধ নিরসনের নিজস্ব বিচার ব্যবস্থাও রয়েছে।
খাতটি অবশ্য ঝুঁকি ও সমালোচনার আওতামুক্ত নয়। মুদ্রা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আফগান আফিম পাচারের ব্যবসায় সম্পৃক্ততাঁর অভিযোগ অনেক পুরোনো। তালেবান সরকারে থাকা অবস্থায় এবং পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময়েও আফিম পাচার থেকে অর্জিত রাজস্বে সংগঠন চালিয়েছে। অবৈধ এ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণে কদাচিৎ মার্কিন ও আফগান কর্মকর্তাদের তৎপরতা দেখাও যায়। তবে দিনশেষে এ অভিযোগ সরাই শাহজাদা বাজারের সিংহভাগ ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে সত্য নয়। বেশিরভাগই নিয়মিত দৈনিক লেনদেনের ব্যবসা করেন।
তালেবানের ক্ষমতা দখল নিঃসন্দেহে আফগান অর্থনীতিকে অকল্পনীয় চাপের মধ্যে ফেলেছে। এটি মুদ্রা বাজারকেও প্রধানত দুভাবে প্রভাবিত করবে। প্রথমত, নিরাপত্তার অভাবে অনেক ব্যবসায়ী দেশ ছেড়ে চলে যাবেন। ইতোমধ্যেই অনেকে পরিবার-পরিজনসহ চলে গেছেন। নিরাপত্তার অভাবে বাজারে নতুন বিনিয়োগও হ্রাস পাবে, কিন্তু তাঁর ধাক্কা এসে লাগবে জন-সাধারণের বেসরকারি উদ্যোগে। অদূর ভবিষ্যতে নিঃসন্দেহে মুদ্রা লেনদেনর পরিমাণও কমে যাবে।
দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা না পেলে স্থানীয় মুদ্রা- আফগানির দর ধরে রাখতে পারবে না তালেবান। এ বাস্তবতায় মার্কিন ডলারের সরবরাহ বঞ্চিত হবেন মুদ্রা ব্যবসায়ীরা। এটি তাদের প্রধান বিনিময় মাধ্যম হওয়ায়, ডলার সংকটের ফলে পুরো অর্থনীতিতে পর্যায়ক্রমে ধস দেখা দেবে।
তবে মানবিক দিকটিও উপেক্ষা করার মতো নয়। আফগানিস্তানে অর্থনৈতিক দৈন্যতায় পুনরায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে সমগ্র বিশ্বের নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে। দেশটিকে কেন্দ্র করে বিশ্বের নানান প্রান্তে পশ্চিমা স্বার্থে আঘাত হানবে আইএস-কে'র মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।
আবার দেশ ছেড়ে যাওয়া অনেক আফগানই হাওয়ালা ব্যবস্থার মাধ্যমে বিদেশে বসে টাকাকড়ি আনতে পেরেছেন। প্রবাসী আফগানরাও স্বজনদের কাছে এই ব্যবস্থার মাধ্যমে টাকা পাঠান। দুর্ভিক্ষ থেকে আফগানিস্তানকে রক্ষায় তাই এই নেটওয়ার্কটিতে সীমিত পরিসরে হলেও বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের সমর্থন দরকার।
আফগান মুদ্রা ব্যবসায়ীরাও বহু দুর্দশার সাক্ষী। তাদের একজন সম্প্রতি আমাকে বলেছেন, "সব রকম প্রতিকূলতার মধ্যেই আমরা ব্যবসা চালিয়ে যাব। এখন শুধু পরিস্থিতির উন্নতির অপেক্ষা করছি।"
বলাই বাহুল্য আগামীদিনেও সিংহভাগ মুদ্রা ব্যবসায়ীকে বৈদেশিক লেনদেনে উপেক্ষা করার সুযোগ কম। তাছাড়া, নিকট ভবিষ্যতে অনেক ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাবে। তখন একমাত্র মুদ্রা ব্যবসায়ীদের বৈশ্বিক আর্থিক নেটওয়ার্কই হবে বিকল্প ব্যবস্থা। অনিশ্চিত অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিবেশে প্রয়োজন অনুসারে পরিকল্পিত ঝুঁকি নিয়ে তারা মন্দা কবলিত অর্থনীতির মাঝেও মৌলিক কিছু আর্থিক সেবা দিয়ে আফগানদের জীবন-জীবিকা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।
- লেখক: নাফে চৌধুরী ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হেওর্থ গবেষণা ফেলো। তিনি আফগান ইনস্টিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ গবেষক।