কালো টাকা সাদা করার ‘সুযোগ বাড়ানোয়’ অর্থমন্ত্রীর সমালোচনায় সিপিডি
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/06/30/cpd_debapriya_0.jpg)
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার ক্ষেত্রে করহ্রাসের মাধ্যমে যে বাড়তি সুবিধা অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দিয়েছেন তার সমালোচনা করেছেন সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রস্তাবনা ঘোষণার একদিন পর শুক্রবার (১৪ জুন) রাজধানীর লেকশোর হোটেলের সম্মেলন কক্ষে ‘সিপিডির বাজেট পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বাজেটের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন বর্ষীয়ান এই অর্থনীতিবিদ।
কালো টাকা সাদা করার প্রক্রিয়া একটি ‘চলতি ব্যাপারে’ পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কালো টাকা, অঘোষিত আয় এগুলো ইস্যু হচ্ছে। এপার্টমেন্ট ফ্ল্যাটের ভেতরে এই আয় বিনা প্রশ্নে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। তার মানে এটা অব্যাহত একটা চলতি ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। এটা কোন মৌসুমি ব্যাপার এখন আর নাই। এবং এটার সাথে স্পেশাল ইকোনমিক জোনে এবং হাইটেকে যদি এই টাকা বিনিয়োগ করেন তাহলে কোন সমস্যা হবে না।”
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার ক্ষেত্রে সরকার উদারতার পরিচয় দিয়েছে। করবহির্ভূত এই টাকা আয়ের উৎস উল্লেখ না করে মাত্র ১০ শতাংশ আয়কর পরিশোধের মাধ্যমে উৎপাদন নির্ভর অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইটেক পার্ক এবং আবাসনের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করার সুযোগ রাখা হয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরে কালো টাকার মালিকরা ৩০ শতাংশ আয়কর পরিশোধ করে বাকি টাকার ওপর ১০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে টাকা বৈধ করতে পারতেন।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেউ যদি করবহির্ভূত ১ কোটি টাকা বৈধ করতে চান তাহলে তাকে প্রথমে ৩০ লাখ টাকা আয়কর পরিশোধ করতে হবে। এরপর বাকী ৭০ লাখ টাকার ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৭ লক্ষ টাকা জরিমানা হিসেবে দিয়ে বাকী ৬৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে পারতেন। তবে নতুন এই নিয়মের ফলে কেউ করবহির্ভূত ১ কোটি টাকায় ১০ লাখ টাকা আয়কর দিয়ে বাকি ৯০ লাখ টাকা নির্দিষ্ট খাতে বিনিয়োগ করতে পারবেন। অর্থাৎ ৯০ লাখ টাকাই বৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
অনুষ্ঠানে অঘোষিত আয় আর বেআইনি আয়ের মধ্যে পার্থক্য নির্ধারণ করার দাবি জানিয়ে কালো টাকার বিষয়ে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেন সিপিডির ফেলো ড দেবপ্রিয়।
তিনি বলেন, “আমাদের প্রশ্ন হলো, অঘোষিত আয় আর বেআইনি আয় এইদুটোর মধ্যে পার্থক্য করার সময় এসেছে। অনেক অঘোষিত আয়, সেটা আইনি উপায়ে অর্জিত হয়েছে কিন্তু কর দেওয়া হয়নি, আর যারা বেআইনিভাবে বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে আয় উপার্জন করে, তাদের আয়ও যদি আপনি এই টাকার মাধ্যমে বৈধ করেন তাহলে তা শুধু নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিবন্ধী না এটা বাংলাদেশের সংবিধানেরও প্রতিবন্ধী। মানে মন্দ পন্থা অবলম্বন করা কতোখানি যুক্তিযুক্ত তা আমরা ঠিক মনে করি নাই কোনদিন, আজকেও মনে করছি না।”