বাংলাদেশে ফোন উৎপাদন শুরু করল শাওমি
বাংলাদেশে ফোন উৎপাদন শুরু করেছে স্মার্টফোন জায়ান্ট শাওমি।
গাজীপুরে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ বা ফরেইন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই) নিয়ে 'মেইড ইন বাংলাদেশ' ব্র্যান্ডিংয়ের অধীনে এই উৎপাদন কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। কারখানাটির বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা ৩০ লাখ ইউনিট।
ভার্চুয়ালি কারখানাটির উদ্বোধনকালে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমাদের দেশে এখন ১৪টি মোবাইল কারখানা থেকে উৎপাদিত মোবাইল সেট দেশের মোট চাহিদার শতকরা ৬৫ ভাগের বেশি পূরণ করছে। চাহিদার শতকরা ৮০ ভাগ স্মার্টফোন দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, "বাংলাদেশের কারখানা থেকে উৎপাদিত ৫-জি মোবাইল সেট আমেরিকায় যাচ্ছে। আমরা সৌদি আরবে আইওটি ডিভাইস রপ্তানি করছি। বিশ্বের ৮০টি দেশে বাংলাদেশ থেকে সফটওয়্যার রপ্তানি হচ্ছে। সৌদি আরব ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথও রপ্তানি করছি আমরা। অথচ একসময় কাপড় কাচার সাবান থেকে প্রায় প্রতিটি পণ্য বিদেশ থেকে আমাদের আমদানি করতে হয়েছে।"
তিনি আরও যোগ করেন, "সরকারের গৃহীত বিনিয়োগ উপযোগী পরিবেশের পাশাপাশি আমাদের মেধাবী জনসম্পদ বিশ্বসেরা ব্র্যান্ডসমূহের মোবাইল উৎপাদন কারখানা স্থাপনেও বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করেছে।"
মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে শাওমির বাংলাদেশে উৎপাদিত স্মার্টফোন দেশের বাজারের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করাও সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্পখাত ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, স্মার্টফোন জায়ান্ট শাওমির সঙ্গে অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের তরুণদের জন্য আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
তিনি বলেন, "ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে শাওমির প্রথম উৎপাদন ইউনিট স্থাপনে আমরা অংশীদার হতে পেরে অনেক আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করি, এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে দেশের তরুণদের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বিশ্বমানের ইলেকট্রনিকস ম্যানুফ্যাকচারিং ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠা হবে।"
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, "এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সহায়তা করবে এবং এর মাধ্যমে 'মেইড ইন বাংলাদেশ' উদ্যোগ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো। আমার বিশ্বাস, এখন থেকে দেশের মানুষ একটি প্রতিযোগিতামূলক দামে, শাওমির বিশ্বমানের সর্বশেষ সব উদ্ভাবনী পণ্য উপভোগ করবে।"
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর জিয়াউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, এখন থেকে এ দেশেই তৈরি হবে বৈশ্বিক দুই নম্বর ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন।
২০১৮ সালে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করার মাত্র তিন বছরের মধ্যেই এখানে কারখানা স্থাপন করল শাওমি।
তবে বাংলাদেশে সেই ২০১৭ সাল থেকেই মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন শুরু হয়েছে ওয়ালটনের হাত ধরে। ওয়ালটন স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য তৈরি করছে।
এরপর সেলফোন জায়ান্ট স্যামসাং, সিম্ফনি এবং আরও কিছু ব্র্যান্ড বাংলাদেশে স্মার্টফোন উৎপাদন শুরু করে।
শাওমিসহ বর্তমানে অন্তত ১৩টি স্থানীয় ও বৈশ্বিক কোম্পানি বাংলাদেশে স্মার্টফোন উৎপাদিত করছে।