মার্চে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন বেড়েছে ১৮%, ই-কমার্স ২৯%
ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে ডিজিটাল লেনদেন বেড়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড এ লেনদেন যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে গ্রাহক সংখ্যাও। অন্যদিকে পস (পয়েন্ট অফ সেল) মেশিনে লেনদেনের পরিমাণ এবং ই-কমার্স ট্রানজেকশনও বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
এতে দেখা যায়, ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চ মাসে ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ যথাক্রমে ১৮ ও ২১ শতাংশ বেড়েছে। এদিকে মার্চে ক্রেডিট কার্ড এর সংখ্যা বেড়েছে ২৩,২৩০টি এবং ডেবিট কার্ড এর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪ লাখ। মার্চে ফেব্রুয়ারির তুলনায় ই-কমার্স ট্রানজেকশন বেড়েছে প্রায় ২৯ শতাংশ এবং পস মেশিনে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মো. শিরিন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'ফেব্রুয়ারির চেয়ে মার্চ মাস তিন দিন বেশি হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ট্রানজেকশন কিছু বেশি দেখাচ্ছে। এছাড়াও মার্চে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় অনেকে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে অনলাইন কেনাকাটা বাড়িয়ে দিয়ে থাকতে পারেন'।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের ডিজিটাল ফাইন্যান্স সার্ভিসের প্রধান নাম প্রকাশ না করে বলেন, মার্চ মাসে ফেব্র্রুয়ারির চেয়ে তিন দিন বেশি হওয়ায় ট্রানজেকশন বেশি দেখাচ্ছে। এছাড়া গেল বছরের শেষ দিকে থেকে কোভিডের প্রথম ধাপ পরবর্তী অর্থনীতি যে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল, মার্চে এসে তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল।
এরপর আবার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় এপ্রিল, মে সময়ে লেনদেন অতটা বাড়বে না বলে তার ধারণা। তবে এপ্রিল থেকে লকডাউন শুরু হওয়ায় ই-কমার্স ট্রানজেকশন অনেক বেড়েছে বলে জানান তিনি।
মাস্টার কার্ড এর কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, মার্চে যে লেনদেন হয়েছে তা মূলত করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আগে আগে -নিত্যপণ্য কেনা, ফুড ডেলিভারি এবং কিছু ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক পণ্যও ছিল এসব লেনদেনে।
'অন্যদিকে মার্চের শেষে এসে পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে কিছু বিক্রি বাড়লেও এপ্রিলে লকডাউনের কারণে তা কমে গেছে। এতে এপ্রিল মাসের তথ্য পেলে হয়তো দেখা যাবে, মার্চের তুলনায় পরিস্থিতি অতটা ভালো হবে না'।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেন দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। আসছে বাজেটকে সামনে রেখে সব পক্ষ থেকেই এই লেনদেনের উপর যে করারোপ করা হয় তা ৫ শতাংশ কমানোর দাবি করা হয়েছে। এই দাবি মানা হলে, ট্রানজেকশন খরচ যেমন কমবে তেমনি নতুন লেনদেন সংখ্যাও অনেক বাড়বে'।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, 'কোভিডের কারণে সার্বিকভাবে গেল বছর থেকেই ডিজিটাল ট্রানজেকশন বাড়ছে, তারই ধারাবাহিকতা চলছে। তিনি বলেন, আয় বেড়েছে বলে ট্রানজেকশন বেড়েছে এমন ভাবনা সঠিক নয় বরং বাস্তব প্রয়োজেনেই বাড়ছে। এছাড়া সার্ভিস প্রোভাইডাররাও নানা ধরনের অফার দেয়ায় আগ্রহ বাড়ছে গ্রাহকদের'।