খরা-পোকায় কাঁচা মরিচের ফলন কম, আমদানিতেও কমছে না দাম
আমদানির শুরু হওয়ার পরও কাঁচা মরিচের দামে স্বস্তি ফিরছে না। ও গত জুনের বন্যা, খরার কারণে মরিচের খেত নষ্ট হওয়া ও পোকার আক্রমণের কারণে স্থানীয় উৎপাদন কমে যাওয়ায় আশানুরূপ দাম কমছে না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ফিল্ড সার্ভিস উইংয়ের পরিচালক (রুটিন চার্জ) হাবিবুর রহমান চৌধুরী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'এই সময়টাতে কাচা মরিচের চাষ কম হয়। তবে যা হয় তাতেও সংকট হয় না। কিন্তু বৃষ্টি ও খরায় এবার কিছু জমি নষ্ট হয়েছে, যে কারণে উৎপাদন কিছুটা কমে গেছে। এর প্রভাবেই মূলত দাম বেড়েছে।'
'রবি মৌসুমের (এই মৌসুমে সবচেয়ে বেশি মরিচের আবাদ হয়) কাচা মরিচের ফলন পেতে নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।'
ঢাকার কারওয়ানবাজার, রামপুরা, বাড্ডা, মিরপুর, সেগুণবাগিচা সহ কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি বাজারে মরিচের কেজি মানভেদে ১৩০-১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা খুচরা বাজারে ২০০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, 'আমদানি হয়ে আসা মরিচও আমাদের ১৩০-১৩ টাকা দিয়ে আমাদের কিনতে হচ্ছে। স্থানীয় মরিচের উৎপাদনও কিছুটা কম। যে কারণে দামটা এখনো চড়া।'
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য মতে, কয়েক বছর ধরে কাঁচা মরিচের সবচেয়ে বেশি দাম থাকে আগস্ট থেকে অক্টোবরের এই সময়। ২০২১ সালের আগস্টে প্রতি কেজি মরিচের গড় দাম ছিল ৯২ টাকা, যা ২০২০ সালে ছিল ১৭৭ টাকা।
মূলত গত বছর কৃষক পর্যায়ে মরিচের উৎপাদন খুব বেশি হলেও কৃষক খুব বেশি সুবিধা পায় না। ভালো দাম না পাওয়ায় কৃষকও আবাদ কমিয়ে দিয়েছেন।
যারা আবাদ করেছেন, খরা, বৃষ্টি, পোকার আক্রমণে তাঁদের উৎপাদন কম হচ্ছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে মরিচের উৎপাদন ছিল ৪ লাখ ৯৩ হাজার টন, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল মাত্র ১ লাখ ৫৮ হাজার টন। ২০২১-২২ এ এর উৎপাদন ২ লাখ টনের কিছু বেশি হয়েছে।
মরিচের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয় শীতে। মরিচের বেশির ভাগ উৎপাদন হয় পাবনা, গাইবান্ধা, কুমিল্লা, দিনাজপুর, বগুড়া, যশোর, মাগুরা ও মেহেরপুরে। এসব এলাকায় খরার কারণে ক্ষেত পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি পোকার আক্রমণে মরিচের উৎপাদন ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কম হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।