অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি বাড়লেও অর্থছাড় কমেছে
অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বড় অংকের প্রতিশ্রুতি আদায় করতে সক্ষম হয়েছে সরকার। তবে সরকারি সংস্থাগুলোর অর্থ ব্যয়ের সক্ষমতার অভাবে বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় কমেছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, জুলাই–সেপ্টেম্বর সময়ে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি বেড়েছে ৩৩১ শতাংশ।
এই সময়ে প্রতিশ্রুতি এসেছে ৪০৫.৪০ মিলিয়ন ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৯৪.০৩ মিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় ৩০ শতাংশ কমেছে। এ সময়ে অর্থছাড় হয়েছে ১.৩৪ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড় হয়েছিল ১.৯৩ বিলিয়ন ডলার।
ইআরডির সূত্র জানায়, গত অর্থবছরের চেয়ে এবার প্রতিশ্রুতি বাড়লেও বিশ্বব্যাংক ছাড়া বড় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছ থেকে এখনো কোনো প্রতিশ্রুতি আদায় হয়নি। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি), জাপান ও চীনের মতো প্রতিশ্রুতিশীল উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ থেকে কোনো প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এছাড়া ইউরোপ থেকে পাওয়া গেছে ১০৫.৪০ মিলিয়ন ডলার।
গত অর্থবছরে সরকার উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ৮.১৮ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেলেও চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৬.২ বিলিয়ন ডলার ধরা হয়েছে।
তবে বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে সরকার অন্যদিকে বিশ্ববাংক এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে বাজেট সহায়তা নিয়ে আলোচনা করছে। আশা করা হচ্ছে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বড় অংকের বাজেট সহায়তা পাওয়া যাবে। ফলে প্রতিশ্রুতি গত অর্থবছরের চেয়ে কমবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অর্থছাড় কমার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ইআরডির কর্মকর্তারা বলেন, প্রকল্প সহায়তার গত অর্থবছরের একই সময়ে তুলনায় এবার প্রায় ৩৯ শতাংশ বেশি ছাড় হয়েছে। যদিও সক্ষমতার অভাবে অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এখনো বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড়ে পিছিয়ে আছে।
অন্যদিকে গত অর্থবছরের একই সময়ে উন্নয়ন সহযোগীরা কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় বাজেট সহায়তা ও টিকা কেনার জন্য কিছু অর্থ ছাড় করেছিল। এ কারণে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় কিছুটা কম এসেছে।
অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে সব বেশি বৈদেশিক সহায়তা ছাড় করেছে জাপান। এই সংস্থাটি ছাড় করেছে ৪৫৯ মিলিয়ন ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭৪.৭৯ মিলিয়ন ডলার ছাড় করেছে চীন। এছাড়া বিশ্বব্যাংক ১৯২ মিলিয়ন ডলার এবং এডিবি ছাড় করেছে ১৬৭.৯৮ মিলিয়ন ডলার।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে সরকার সুদ ও আসল মিলিয়ে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো ৫২৫.৬১ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। গত অর্থবছরে একই সময়ে এ হার ছিল ৫৯৩.৮৬ মিলিয়ন ডলার।