ফেব্রুয়ারির মধ্যে রপ্তানি আয়ের জন্য উচ্চ ডলার রেট দিতে হবে ব্যাংকগুলোকে
এক্সপোর্ট ইনকাম দ্রুত দেশে নিয়ে আসতে পুরো ফেব্রুয়ারি জুড়ে বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে ডলারের রেট ১০৩ টাকা ৫০ পয়সা দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ফরেইন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)।
ব্যাংকগুলোকে পাঠানো এক মেসেজে বলা হয়েছে, বাফেদা ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে যেসব এক্সপোর্ট হয়েছে, সেসব পেমেন্ট আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিয়ে আসা হলে এক্সপোর্ট প্রসিডের এসব ডলারের বিপরীতে ৫০ পয়সা বেশি রেট দেওয়া হবে।
ব্যাংকগুলোর আনঅফিশিয়ালি নেওয়া এই সিদ্ধান্তটি দ্রুত বাস্তবায়নে মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছে বাফেদা। সাধারণত এক্সপোর্ট প্রসিডের ডলারের বিপরীতে ১০৩ টাকা রেট দেওয়া হয়।
এর আগে, নভেম্বর ও ডিসেম্বরের এক্সপোর্ট প্রসিড ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিয়ে আসলে একইভাবে ৫০ পয়সা বেশি রেট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাফেদা।
ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বাফেদা এক্সপোর্ট প্রসিডের বাড়তি রেট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। তবে সেটি যে পরিমাণ বাড়বে বলে মনে হয়েছিল, সেরকম হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বেসরকারি ব্যাংকের এমডি টিবিএসকে বলেন, "কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছে, আমরা সেভাবে রেট দিচ্ছি। আমার নিজের ব্যাংকের কথা যদি বলি, রেট বাড়ানোর কারণে আমাদের এক্সপোর্ট প্রসিড আসায় তেমন কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করিনি।"
এভাবে রেট অল্প বাড়ালে এক্সপোর্ট প্রসিড আসা খুব বেশি বাড়বে না বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি টিবিএসকে বলেন, "এভাবে টুকটাক রেট বাড়ালে এক্সপোর্ট প্রসিড বাড়বে না। তার বদলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এক্সপোর্ট প্রসিড নিয়ে আসা না হলে ডলারের রেট কম পাবে, এমন নির্দেশনা দিলে বরং প্রসিড কিছুটা দ্রুত আসতে পারে।"
ডলারের রেট ৫০ পয়সা কেন, ৫ টাকা বাড়ালেও এক্সপোর্ট প্রসিড দ্রুত নিয়ে আসায় বাংলাদেশি এক্সপোর্টারদের খুব বেশি ভূমিকা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শহীদুল্লাহ আজিম।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, "ইউরোপ-আমেরিকার অনেক দেশে অর্থনীতি সংকুচিত হচ্ছে। তাই, অনেক ক্ষেত্রে বায়াররা আমাদের প্রোডাক্ট রিসিভ করতে দেরি করছেন। একই কারণে তারা পেমেন্ট ডেফার করছেন।"
"ফ্যাক্টরি বাঁচানোর কথা চিন্তা করে এগুলো আমাদের মেনে নিতে হয়। তবুও আমরা তাদের বোঝাচ্ছি যেন তারা যত দ্রুত সম্ভব আমাদের পেমেন্ট করে দেয়," যোগ করেন তিনি।
গত ৩১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় এবিবি ও বাফেদা এক অনলাইন সভায় এক্সপোর্টারদের ডলারের রেট ১ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ব্যাংকগুলো এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে।
সভায় দেশের সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের এমডিরা অংশ নেন। জানুয়ারির শুরুতে ১০২ টাকা রেট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবিবি ও বাফেদা।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর এক সভায় এক্সপোর্ট প্রসিডে ডলারের দাম ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০১ টাকা করা হয়েছিল, যেটি ৪ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়।