কৃষি খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা ব্যাপক: বিজনেস সামিটে স্টেকহোল্ডাররা
প্রসেসড ফুড ইন্ডাস্ট্রি, সাপ্লাই চেইনের কোল্ড স্টোরেজ মেকানাইজেশন ডেভেলপমেন্ট, হালাল ফুড উৎপাদন, এগ্রি মেশিনারিজ তৈরি সহ কৃষির কয়েকটি খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের বড় সুযোগ রয়েছে বলে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) আয়োজিত এক প্যানেল ডিসকাশনে আলোচকরা জানান।
এফবিসিসিআই আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস সামিট-২০২৩ এর দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় বিনিয়োগের এসব খাতের কথা বলা হয়। এ সময় কি-নোট পেপার উপস্থাপন করেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রবার্ট সিম্পসন।
নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দীপাল আবেউইক্রেমা বলেন, "প্রতিনিয়তই প্রসেসড ফুডের কনজাম্পশন বাড়ছে। এখানে বিনিয়োগের বড় সুযোগ রয়েছে। এছাড়া বিশ্বব্যাপী হালাল ফুডের বাজার এখনই ২.৪ বিলিয়ন ডলার, যেখানে বিপুল সুযোগ রয়েছে। রপ্তানির বড় বাজার থাকায় এখানেও বড় বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।"
এগ্রো-পেপসিকোর পরিচালক অনুকূল জোশি বলেন, "বাংলাদেশ ও ভারতের কৃষিপণ্যের পোস্ট প্রডাকশন লস সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। এ কারণে সাপ্লাই চেইন ও ভ্যালু চেইন ডেভেলপমেন্টে কাজ করার জায়গা রয়েছে। বাংলাদেশে কোল্ড স্টোরেজ সিস্টেম রয়েছে, কিন্তু এই মেকানিজমকে আরও আধুনিক করতে হলে বিনিয়োগের প্রয়োজন। এখানেও বিনিয়োগের ভালো সুযোগ রয়েছে। এছাড়া ভালো কৃষিপণ্য তৈরির জন্য উপযুক্ত ভ্যারাইটি, শিক্ষিত কৃষকের দরকার রয়েছে। তাহলে পণ্যের গুণগত মানও উন্নত হবে।"
অনুষ্ঠানে এগ্রি মেকানাইজেশন, ক্লাইমেট স্মার্ট ভ্যারাইটি এবং এগ্রি প্রসেসিংয়ে বিনিয়োগের নানা সুযোগ-সুবিধার কথা জানান এসিআই এগ্রো বিজনেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এফএইচ আনসারি।
কি-নোট পেপার উপস্থাপনায় বলা হয়, এদেশে রেলওয়ে, সড়ক ও নদীপথে যোগাযোগ এবং এশিয়ান হাইওয়ের মত কানেকটিভিটি তৈরি হয়েছে। প্রতি বছর ১ মিলিয়ন গ্র্যাজুয়েট যুবক এবং ১০ হাজার টেকনিক্যাল গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছে, যারা কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়।
আহসান খান চৌধুরী বলেন, দেশে ফুড এন্ড এগ্রিবিজনেস ইন্ডাস্ট্রির আকার ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের এবং এটা ক্রমশ বাড়ছে। এই স্থানীয় এবং বৈশ্বিক চাহিদা পূরণ করতে ফসল উৎপাদন, কৃষি কার্যক্রম এবং বাণিজ্যের আকার বাড়ানো অত্যবশ্যকীয়।
"এক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে লো কস্ট ওয়ার্কফোর্স, লার্জ ডোমেস্টিক মার্কেট ও এক্সপোর্ট মার্কেট, ইনভেস্টমেন্ট ইনসেনটিভ এর সুবিধা রয়েছে। লোকালি এগ্রো প্রসেসড ফুড এবং হালাল মাংস রপ্তানিতে ২০ শতাংশ এক্সপোর্ট সাবসিডি রয়েছে।"
অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ড. মো আব্দুর রাজ্জাক বলেন, "আমরা মডার্ন এগ্রিকালচার করার জন্য কাজ করছি, যেখানে মেকানাইজেশনে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এখন যখন কোয়ালিটি পণ্য উৎপাদন হবে তখন ফুড প্রসেসিং বাড়াতে হবে, একটা উন্নত ভ্যালু চেইন তৈরি করতে হবে। এই জায়গাগুলোতে বিনিয়োগের জন্য আমাদেরকে পরিবেশ তৈরি করে দিলেই বিনিয়োগ আসবে। কারণ আরব দেশগুলো সহ ইউরোপেও প্রসেসড ফুডের বড় বাজার রয়েছে।"