আকু’র বিল পরিশোধের পর আবারো ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে (আকু) ১.১ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বিল পরিশোধের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ আবারো ৩০ বিলিয়ন নিচে নেমে গেছে।
আঞ্চলিক আমদানির জন্য – আকুর এই পেমেন্ট ব্যবস্থার অধীনে – বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করা হয়। প্রতি দুই মাস পর পর আকুর বিল পরিশোধ করতে হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. জাকির হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, আকুর ১,০৯৬ মিলিয়ন ডলার বিল পরিশোধ করা হয়েছে। ফলে বর্তমানে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৯.৯৮ বিলিয়ন ডলারে।
রিজার্ভের পরিমাণ উদ্বেগজনক নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, কোনো দেশের কাছে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো মুদ্রা রিজার্ভ থাকলে- তার অবস্থানকে স্থিতিশীল হিসেবে বিবেচনা করা যায়।
তবে বর্তমান সময়ের মতো বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে অন্তত ছয় মাসের আমদানি ব্যয় নির্বাহ করার মতো রিজার্ভ থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন তারা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের গড় মাসিক আমদানি পেমেন্ট প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার।
গত ৫ জুলাই দেশের ফরেক্স রিজার্ভ ছিল ৩১.১৬ বিলিয়ন ডলার। এর আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ও ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে ৯২৫ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা পাওয়ায় গত ২৬ জুন দুই মাস পর ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায় রিজার্ভ।
এর আগে মে মাসে আকুর ১.১৮ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধ করে বাংলাদেশ ব্যাংক, এতে রিজার্ভ নেমে আসে ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।
২০২১ সালের আগস্টে দেশের ফরেক্স রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। তারপর থেকেই রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়ে পতনের সাথে সাথে আমদানির খরচ বাড়ায় রিজার্ভে ধারাবাহিক পতন দেখা দেয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই অবস্থার আরও অবনতিই হয়।
এই অবস্থায়, যথাযথ পরিমাণে রিজার্ভ ধরে রাখার লক্ষ্যে সরকার গত বছর বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়, এতে ঋণপত্র (এলসি) খোলার হার অনেকটাই কমে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই- মে) এলসি খোলার পরিমাণ ২৫ শতাংশের বেশি কমে ৬২.৬৪ বিলিয়ন ডলার হয়। আগের বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৮৩.৫৮ বিলিয়ন ডলার।