দাম কমাতে ৪ প্রতিষ্ঠানকে ডিম আমদানির অনুমতি দিল সরকার
স্থানীয় বাজারে দাম কমাতে ৪ প্রতিষ্ঠানকে ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার।
কোম্পানি ৪টি হল– মেসার্স মিম এন্টারপ্রাইজ, টাইগার এন্টারপ্রাইজ, প্রাইম এনার্জি এবং অর্নব ট্রেডিং। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোম্পানিগুলো কেবল বার্ড-ফ্লু এবং ইনফ্লুয়েঞ্জামুক্ত দেশ থেকেই ডিম আমদানি করতে পারবে।
কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই সরকার-নির্ধারিত শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হবে এবং যে দেশ থেকে তারা ডিম আমদানি করবে, সে দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রতিটি ডিমের চালানের জন্য ইস্যুকৃত বার্ড-ফ্লু এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা-মুক্ত শংসাপত্র দাখিল করতে হবে।
এর আগে আগস্টে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, দ্রুত দাম না কমলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে।
কয়েক মাস আগে ডিমের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বাজার মনিটরিংয়ের ঘোষণা দেওয়ার পর আবারও কমতে শুরু করে এই নিত্যপণ্যের দাম। তবে এবার ডিমের দাম বেড়ে প্রতিপিস ১৫ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। যদিও সরকার প্রতিপিস ডিমের দাম নির্ধারণ করেছে ১২ টাকা।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এস এম রেজাউল করিম বলেন, খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম প্রতিপিস ১২ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়, যেহেতু প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ প্রায় ১০ টাকা ৫০ পয়সা।
এদিকে ডিম উৎপাদনকারীরা জানান, মহামারির আগে দেশে ডিমের দৈনিক উৎপাদন ছিল প্রায় ৫ কোটি পিস। কিন্তু মহামারি চলাকালীন দীর্ঘ লোকসানে অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রি সেন্ট্রাল কাউন্সিল জানিয়েছে, অনেক লেয়ার ফার্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে দৈনিক ডিমের উৎপাদন ৪ কোটি পিসের নিচে নেমে এসেছে।
চাহিদা ও সরবরাহের এই পার্থক্যকে পুঁজি করে এক দল অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা করছে বলে অভিযোগ বাজার সংশ্লিষ্টদের। এমনকি কোনো কোনো কৃষকও বেশি দামে ডিম বিক্রি করছেন বলে জানান তারা।
ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু লুৎফি ফজলে রহিম খান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে একটা বড় অমিল রয়েছে, কারণ আমরা জানি না আমাদের প্রকৃত চাহিদা কী। অনেক সময় দাম বেশি হলে উৎপাদন বাড়ে এবং যখন উৎপাদন বেশি হয়, তখন আবার দাম কমে যায়।"
"কিন্তু বর্তমানে ডিমের উৎপাদন খরচ বেশি হওয়া সত্ত্বেও প্রতিটি ডিমের খুচরা মূল্য ১৩ টাকার বেশি হওয়া অযৌক্তিক," যোগ করেন তিনি।
উৎপাদকদের মতে, বিভিন্ন উপকরণের দাম বাড়ায় ফিডের দাম বেড়েছে, এতে বেড়েছে উৎপাদন খরচও।
তাই খরচ কমাতে ফিড উৎপাদনের বিকল্প উপাদান শুল্কমুক্ত উপায়ে আমদানি করতে চান ব্যবসায়ীরা।