ফুডপান্ডা এশিয়ার বেশিরভাগ বাজারে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশে কি হবে?
ফুডপান্ডার বার্লিন-ভিত্তিক মূল প্রতিষ্ঠান 'ডেলিভারি হিরো' সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া,মিয়ানমার, ফিলিপাইন এবং থাইল্যান্ডে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বিক্রির জন্য সম্ভাব্য ক্রেতাদের সাথে আলোচনা করছে। প্রতিষ্ঠানটির উদ্ধৃতি দিয়ে বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
তবে এই তালিকায় নেই বাংলাদেশ, হংকং, তাই্ওয়ান ও পাকিস্তানের নাম। কেন এই তালিকায় বাংলাদেশ নেই এবং এখানে কোম্পানির ভবিষ্যৎ কি; সে বিষয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করেনি ফুডপান্ডা বাংলাদেশ।
কিছু বিশ্লেষক বলছেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে বিপুল পরিমাণ লোকসানের কারণে ক্রেতারা হয়তো আকৃষ্ট হচ্ছেন না। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, উবারইটস, সহজ ফুডস ও হাংরি নাকির মতো ফুডপান্ডাও হয়তো বাংলাদেশে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে।
তিনটি কোম্পানি বন্ধ হওয়ার পর ফুড ডেলিভারি ব্যবসায় বাংলাদেশে ফুডপান্ডার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হলো পাঠাও। আর তাদের মুদি মাল সরবরাহ ব্যবসায় প্রতিদ্বন্দ্বী হলো 'চালডাল'।
তবে কিছু প্রযুক্তি বিশ্লেষক বলছেন, কম প্রতিযোগিতার মধ্যে একসময় লাভজনক হয়ে উঠবে; এমন সম্ভবনায় ডেলিভারি হিরো হয়তো এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ, পাকিস্তান, তাইওয়ান ও হংকং এর বাজার নিয়ে ভরসা করছে।
কারণ ডেলিভারি হিরো যেসব এশিয়ান বাজার থেকে প্রস্থান করতে চাইছে, সেগুলোয় প্রতিযোগিতা বেশি এবং মুনাফা কম।
করোনা মহমারির মধ্যে বাংলাদেশের সব জেলা শহরে ব্যবসা কার্যক্রম শুরু করে ফুডপান্ডা। ৫০,০০০ বেশি রেস্তোঁরা ও খুচরা ব্যবসা এই ডিজিটাল সেবায় যুক্ত হয়। ফুডপান্ডায় নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্স রাইডারের সংখ্যা এক লাখেরও বেশি। তবে এ অবস্থানে আসতে বিপুল অর্থ খরচ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
ডেলিভারি হিরোর বার্ষিক বিবৃতি অনুসারে, ২০১৬-২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ফুডপান্ডা এবং এর অন্যান্য ব্যবসায়িক শাখাগুলি ৭৪ মিলিয়ন পাউন্ড তথা প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা ক্রমযোজিত লোকসান গুনেছে।
তারমধ্যে ২০২২ সাল ছিল ব্যবসার জন্য সবচেয়ে বৈরি বছর। মোট লোকসানের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই হয়েছে এ বছরে।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে। ফলে ভোক্তাদের ব্যয় ক্ষমতা কমেছে। একই সময়ে বিশ্বব্যাপী সুদের হার বেড়ে গেছে। এ কারণে প্রযুক্তি খাতে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল হিসেবে আসা ব্যাপক বিনিয়োগও সীমিত হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা আগের মতো ঝুঁকি নিয়ে চান না।
বাংলাদেশে এখন ফুড ডেলিভারির অর্ডার সংখ্যাও প্রায় অর্ধেকে নেমেছে।
রয়টার্স মতে, অন্যান্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলির মতো, ডেলিভারি হিরো বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনে প্রবৃদ্ধি বজায় রেখে মুনাফা অর্জনের দিকে মনোনিবেশ করেছিল।
ডেলিভারি হিরোর তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কর, সুদ ও স্থাবর, অস্থাবর সম্পদের মূল্যমান নির্ধারণের আগ পর্যন্ত সংস্থাটি সামঞ্জস্যপূর্ণ মুনাফায় পৌঁছেছে। যেখানে গত বছরের একই সময়ে লোকসান হয় ৩২৩ মিলিয়ন ইউরো।