ওয়েভার সনদ জটিলতা: সক্ষমতার ৫০ শতাংশ কার্গো নিয়ে দুই বিদেশি জাহাজের চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ
বাধ্যতামূলক ওয়েভার সনদ পেতে জটিলতার কারণে সক্ষমতার প্রায় ৫০ শতাংশ কার্গো নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করেছে দুটি বিদেশি পতাকাবাহী জাহাজ। অর্থাৎ, বাকি কার্গো পরিবহন করেনি জাহাজ দুটি।
ওইএল শাস্তা এবং এক্সপ্রেস ধলাগিরি নামের জাহাজ দুটি মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকালে কলম্বো বন্দরের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করে।
এর ফলে জাহাজগুলো কনটেইনার প্রতি ২৮০ থেকে ৩২০ ডলার ভাড়া লোকসানে পড়েছে।
নৌবাণিজ্য দপ্তর থেকে ওয়েভার সনদ না পাওয়ায় এই আর্থিক ক্ষতি হয় বলে জানিয়েছে জাহাজ দুটির স্থানীয় প্রতিনিধিরা।
উল্লেখিত এ জটিলতার কারণে প্রায়শই ক্ষতির মুখে পড়ছে বাংলাদেশে আসা-যাওয়া করা বিদেশি জাহাজগুলো। ফলে শিপিং কোম্পানিগুলোকে কার্গো না নিয়ে বন্দর ছাড়তে হয়, নাহলে বিলম্বের সম্মুখীন হয়ে জরিমানা দিতে হয়।
পানামার পতাকাবাহী ওইএল শাস্তা জাহাজের স্থানীয় প্রতিনিধি ক্রাউন ন্যাভিগেশন- এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর টিবিএসকে বলেন, চট্টগ্রাম-কলম্বো রুটে চলাচলকারী জাহাজটি শিডিউল অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৪ অক্টবর) সকালে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে গেছে। জাহাজটির কার্গো ধারণ সক্ষমতা ১,১০০ টিইইউ। কিন্তু, ওয়েভার সার্টিফিকেট না পাওয়ায় বন্দর কতৃপক্ষের মৌখিক অনুমতি স্বাপেক্ষে ৪৮০ টিইইউ পণ্যবাহী কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছাড়তে হয়েছে।
তিনি বলেন, 'এই অবস্থা চলতে থাকলে, মেইন লাইন অপারেটরগুলো চট্টগ্রাম বন্দরমুখী জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিতে পারে।'
ফিডার জাহাজ পরিচালনাকারীদের তথ্যমতে, লাইসেন্স পেতে দেরির কারণে চলতি মাসের প্রথম দিকে কার্গো রেখে চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করেছিলো অন্তত ৫টি জাহাজ। জানা যায়, পণ্য বোঝাই বা খালাস না করেই বন্দরের বহির্নোঙরে চলে যায় জাহাজগুলো।
বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ (স্বার্থরক্ষা) আইন, ২০১৯ অনুযায়ী, সমুদ্রপথে দেশের মোট বাণিজ্যের অন্তত ৫০ শতাংশ কার্গো দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহনের বিধান রয়েছে। স্থানীয় জাহাজে জায়গার সংকুলান নাহলে, বাকি কার্গো বহনে বিদেশি জাহাজের এজেন্টদের বাধ্যতামূলক ওয়েভার সনদ নিতে হবে।
বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ (স্বার্থরক্ষা) বিধিমালা ২০২৩ অনুযায়ী, কার্গো লোড করার আগে বিদেশি জাহাজের মালিক বা প্রতিনিধিদের নৌবাণিজ্য দপ্তরে এ সনদ পেতে অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
তবে ওয়ার্ল্ড শিপিং কাউন্সিল চলতি বছরের মে মাসে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়ে, চট্টগ্রাম বন্দরে ওয়েভার সনদ সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে বিধিমালার কিছু অংশ সশোধনের আহ্বান জানায়। সংস্থাটির মতে, এই বিধান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে ব্যাহত করছে।