কোন মোটরসাইকেলের দাম কমতে পারে?
আরও মূল্য সংযোজন উৎসাহিত করতে সরকার স্থানীয় কারখানায় তৈরি করা ২৫০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেলের আমদানি করা ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে শুল্ক মওকুফের এ প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
তবে শিল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানীয়ভাবে তৈরি হলেও সব মডেলের মোটরসাইকেল এ শুল্কছাড় সুবিধা পাবে না।
তারা বলেন, এ শুল্ক সুবিধা কতটুকু পাওয়া যাবে, তা নির্ভর করবে স্থানীয় মূল্য সংযোজনের পরিমাণের ওপর।
সর্বশেষ এসআরও (স্ট্যাচ্যুটরি রেগুলেটরি অর্ডার) অনুসারে, শুল্কহ্রাস সুবিধা পেতে হলে ২৫০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল মডেলগুলো স্থানীয়ভাবে ক্যাটাগরি-১ হিসেবে উৎপাদন করতে হবে। ক্যাটাগরি-১ মোটরসাইকেলের ফ্রেম ও সুইং আর্ম তৈরি করতে হয় ফ্ল্যাট বা টিউব আকৃতির ইস্পাত থেকে এবং ওয়েল্ডও করতে হয় স্থানীয়ভাবে।
বর্তমানে দেশের ক্যাটাগরি-১-এর জনপ্রিয় মোটরসাইকেল উৎপাদনকারীদের মধ্যে রয়েছে রানার, হিরো, টিভিএস, বাজাজ, হোন্ডা ও সুজুকি।
তবে এসব প্রতিষ্ঠানের সব মডেলের মোটরসাইকেল ক্যাটাগরি-১-এর অন্তর্ভুক্ত নয়। কোম্পানিগুলো বিক্রির পরিমাণ ও শুল্ক সুবিধার ওপর ভিত্তি করে স্থানীয় মূল্য সংযোজনের পরিমাণ ঠিক করে। এটি এমনভাবে করা হয়, যাতে তাদের বিনিয়োগ লাভজনক থাকে।
সাধারণত যেসব মডেল বেশি বিক্রি হয়, দেশে সেগুলোর মূল্য সংযোজন হয় সবচেয়ে বেশি। এছাড়া যতটুকু প্রণোদনা পাওয়া যায়, তার সঙ্গে সমন্বয় করেও মূল্য সংযোজন বাড়ায় কোম্পানিগুলো।
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন আমদানি করা হয় দুটি আকারে—পূর্ব-সংযোজিত বা কমপ্লিটলি বিল্ট ইউনিট (সিবিইউ) ইঞ্জিন এবং কমপ্লিটলি নকড ডাউন (সিকেডি) ইঞ্জিন। সিকেডি ইঞ্জিন স্থানীয়ভাবে সংযোজিত হয়।
ক্যাটাগরি-১ মডেলের ২৫০ সিসি পর্যন্ত সিকেডি ইঞ্জিনের ওপর ৩ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। আর ক্যাটাগরি-১ মডেলের একই ক্ষমতার সিবিইউ ইঞ্জিন মডেলের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে।
অন্যদিকে ক্যাটাগরি-১ মডেলের ২৫০ সিসির বেশি সিকেডি ইঞ্জিনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। আর উচ্চ ক্ষমতার ক্যাটাগরি-২ সিকেডি ইঞ্জিনের ওপর দিতে হবে ২৫ শতাংশ শুল্ক।
সাধারণত কমিউটার মোটরসাইকেলের মোট খরচের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই হয় ইঞ্জিনের পেছনে। আর যেসব ক্যাটাগরি-১ মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী আমদানি করা ইঞ্জিন স্থানীয়ভাবে সংযোজন করে, তাদের মোটরসাইকেলের খরচ ও দাম প্রায় ২ শতাংশ কমতে পারে বলে জানিয়েছেন শিল্পসংশ্লিষ্টরা। অবশ্য স্থানীয় মুদ্রা টাকার মান না কমলেই কেবল এ খরচ ও দাম কমবে বলে জানান তারা।