ইসলামী ব্যাংকের সকল অবৈধ নিয়োগ বাতিলের দাবি
মতিঝিলে ইসলামী ব্যাংকের হেড অফিসের সামনে ব্যাংকটির গত সাত বছরের বঞ্চিত নেতারা জড়ো হয়েছেন। তখন তারা এতদিন বঞ্চনার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ইসলামী ব্যাংকের সিবিএ নেতা আনিসুর রহমান বলেন, "আপনারা শান্ত হন। দখলকৃত ইসলামী ব্যাংক খুব দ্রুত সময় ফিরে আসবে। ২০১৭ সালের পরে যত এক্সিকিউটিভ এসেছে আর এই ব্যাংকে ঢুকতে পারবে না। এটা এমডি মহোদয় সমর্থন দিয়েছেন; আমাকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছেন।"
সেখানে বলা হয়, ২০১৭ সালের পর থেকে সকল অবৈধ পরীক্ষাবিহীন নিয়োগ বাতিল করা হবে। একইসঙ্গে এই সময় যাদের অবৈধভাবে চাকরি বাতিল করা হয়েছে তাদের চাকরি পুনরায় দেয়া হবে। একইসাথে যারা গত সাত বছরে প্রমোশন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তাদের যথাযথ প্রমোশন ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
ইসলামী ব্যাংকের অপারেশন ইউংয়ের হেড এসএভিপি ড.কামাল উদ্দিন জসিম বলেন, "আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি ছাত্রদের মাধ্যমে। প্রজ্ঞার সঙ্গে এই অর্জন তুলে নিতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, "ইসলামী ব্যাংক বিশ্বের কাছে খুবই স্মরণীয়। আমাদের মর্যাদা পুনরায় ফিরে পেতে হবে, এটা আমরাই পারবো।"
এছাড়াও কামাল উদ্দিন বলেন, "মাননীয় এমডির সঙ্গে কথা হয়েছে। ২০১৭ সালের পর থেকে সকল অবৈধ নিয়োগ বাতিলের কাজ অলরেডি শুরু হয়ে গেছে।"
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, জামায়াতমুক্ত করতে ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়। ব্যাংকটিকে জামায়াতমুক্ত করা শুরু হয় ২০১৬ সালের জুন থেকে।
ওই বছরের ২ জুন ব্যাংকটির ৩৩তম বার্ষিক সাধারণ সভায় নতুন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ও স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি নতুন নতুন কোম্পানি তৈরি করে শেয়ারবাজার থেকে ব্যাংকটির শেয়ার কিনে নেয় চট্টগ্রামভিত্তিক একটি কোম্পানি। এসব কোম্পানির পক্ষে ব্যাংকটিতে বসানো হয় পরিচালক।
বর্তমানে ব্যাংকটির বেশির ভাগ পরিচালক চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি। মালিকানা বদলের পর ব্যাংকটির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল সাবেক সচিব আরস্তু খানকে, তিনি এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আরমাডা স্পিনিং মিলের পক্ষে নিযুক্ত পরিচালক ছিলেন।
ব্যাংকটির বিভিন্ন সিদ্ধান্ত মানতে না পারায় আরস্তু খান পদত্যাগ করেন। পরে একই প্রতিষ্ঠান থেকে পরিচালক করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সাবেক শিক্ষক নাজমুল হাসানকে। জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জামায়াতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ২০১১ সাল পর্যন্ত একরকম নির্বিঘ্নে ব্যাংকটি পরিচালনা করে আসছিল।
২০১১ সালের নভেম্বরে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি নতুন নিয়ম করে, তালিকাভুক্ত কোনো পরিচালক হতে হলে ওই পরিচালকের হাতে কোম্পানিটির ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে। এ বিধান করার পর ব্যাংকটিতে জামায়াতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র আধিপত্যে কিছুটা ভাটা পড়ে।
আর ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ২০১৭ সালে শেয়ারবাজার থেকে শেয়ার কিনে ব্যাংকটির মালিকানায় চলে আসে চট্টগ্রামভিত্তিক একটি গ্রুপ। এরপর ব্যাংকটিতে ঋণ অনিয়মের নানা ঘটনা শুরু হয়।