এক সপ্তাহের বেশি বিরতির পর ফের শুরু বিদেশি ঋণ পরিশোধ কার্যক্রম
এক সপ্তাহেরও বেশি সময় বিরতির পর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প এবং তেল, গ্যাস ও সার সরকারি ক্রয় বাবদ বিদেশি ঋণের মূল ও সুদ পরিশোধ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র।
ইআরডির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আটকে থাকা বৈদেশিক ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করতে সোমবার (১২ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে অর্থ বিভাগের ইআরডিকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে তার আগে কোন তারিখে কোন ঋণের সুদ–আসল পরিশোধ করতে হবে, তার একটি তালিকা ইআরডি অর্থ বিভাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠায়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি, অসহযোগ আন্দোলন এবং আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ইস্যুতে প্রায় ১০ দিন ধরে বৈদেশিক ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করা যায়নি। এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশে এবারই প্রথম বলে জানান ইআরডি কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না শর্তে ইআরডির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা টিবিএসকে জানান, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ কখনও ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি। এবারই প্রথম এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে বৈদেশিক ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ সম্ভব হয়নি।
ইআরডি সূত্র জানায়, বাংলাদেশকে প্রতিদিনই কোনো না কোনো ঋণের আসল বা সুদ পরিশোধ করতে হয়। সরকারি কোনো বন্ধের সময়ও ঋণ পরিশোদের কার্যক্রম বন্ধ থাকে না।
জানা গেছে, উন্নয়ন প্রকল্পের বা বাজেট সহায়তা ঋণের সুদ ও আসল মিলিয়ে প্রতিদিন গতে ১০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হয় বাংলাদেশকে। এছাড়া, তেল ও এলএনজি বা সার কেনার জন্য বাংলাদেশ যে ঋণ নেওয়া হয়, সেসব বাবদ প্রতিদিন গড়ে ২৫-২৬ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হয়।
ইআরডি সূত্রে আরও জানা গেছে, বর্তমানে বৈদেশিক ঋণের প্রায় ৩০০ প্রকল্প চলমান রয়েছে। এসব ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে। এছাড়া, বিভিন্ন ঋণের আসলও পরিশোধ করতে হচ্ছে। এরমধ্যে ৩০ বছর আগে নেওয়া ঋণও রয়েছে।
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিভিন্ন প্রকল্প ঋণ এবং বাজেট সহায়তা ঋণের আসল ও সুদ বাবদ ৩.৩৫৭ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ হয়েছে। এরমধ্যে আসল ছিল ২.০০৯ বিলিয়ন এবং সুদ ছিল ১.৩৪৭ বিলিয়ন ডলার।
ইআরডি অনুমান, চলতি অর্থবছরে প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। কারণ এই সময়ে বেশ কিছু বড় প্রকল্প ঋণের আসল পরিশোধ শুরু হবে।