‘জাল ফেলা হয়েছে, এখন গোটানো বাকি’: পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে গভর্নর
দেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ টাকা ফিরিয়ে আনা কঠিন হলেও এই অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রাথমিক কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
সোমবার (১১ নভেম্বর) সোনারগাঁও হোটেলে দৈনিক বণিক বার্তার উদ্যোগে আয়োজিত এক অর্থনৈতিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, 'দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে দেশ থেকে কয়েক লাখ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে, এটা ফিরে পাওয়া কঠিন ছিল। তবে জাল ফেলা হয়েছে, এখন গোটানো বাকি।'
'এরইমধ্যে আমরা দেশ ও দেশের বাইরে যোগাযোগ করেছি। আমাদের সহযোগিতার জন্য চলতি সপ্তাহে আমেরিকার প্রতিনিধি আসছে, যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি আসবে। বিশ্বব্যাংক আসবে, সিঙ্গাপুরের সঙ্গেও কথা হবে,' বলেন তিনি।
দেশের ব্যাংকিং খাতের অবস্থা সম্পর্কে আহসান এইচ মনসুর বলেন, বিগত সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাংক খাত। তবে এ খাতের সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে না।
তিনি বলেন, একটি ব্যাংকের ২৭ হাজার কোটি টাকার অ্যাসেট থেকে এক পরিবারই ২৩ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে।
পুরো ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠনে ২-৩ বছর সময় লাগতে পারে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, 'দ্রুত সংস্কার বা সমাধান চাইলে আমার চাকরি ছেড়ে দিতে হবে।'
আহসান এইচ মনসুর আশ্বস্ত করে বলেন, 'কোনো ব্যাংক বন্ধ হবে না, এটা বলতে পারি। দুর্বল ব্যাংকে টাকা তুলতে পারছে না, এ কারণে তাদের তারল্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সব সমাধানও হয়ে যাবে।'
তিনি জানান, ব্যাংকগুলোর সম্পদের গুণমান নির্ধারণে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে অডিট করার পরিকল্পনা রয়েছে।
গভর্ণর আরও বলেন, 'আমরা চাই না কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা শিল্প বন্ধ হয়ে যাক। কারণ, সেখানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। আবার কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হিসাবও জব্দ করা হয়নি, হবেও না।'
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন আহসান এইচ মনসুর। 'ঢাকায় মোট ব্যাংকিংয়ের ৫৯ শতাংশ, চট্টগ্রামে ১৭ শতাংশ; বাকিটা অন্য জায়গা। আমরা এটাকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমাদের এজেন্ট ব্যাংক বড় কাজ করছে, এমএফএস সেবা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে,' বলেন তিনি।