আসছে পঞ্চম বিনিয়োগ সুকুক, বিদেশি মুদ্রা ব্যবহার করে অংশ নিতে পারবেন প্রবাসীরা
আগামী মার্চে পঞ্চম বাংলাদেশ সরকারি বিনিয়োগ সুকুক (বিজিআইএস) চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এটি ব্যাংক ও ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
এই সুকুকে নিবাসী ব্যক্তিদের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিরা (এনআরবি) বিনিয়োগ করতে পারবেন। প্রবাসীরা স্থানীয় মুদ্রা বা বিদেশি মুদ্রা উভয় মাধ্যমেই বিনিয়োগ করতে পারবেন। বিনিয়োগকৃত অর্থ এবং অর্জিত মুনাফা ইচ্ছা করলে দেশে ফেরত নেওয়ার সুবিধাও থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। এতে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের মার্চে 'পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতুনির্মাণ প্রকল্প ২য় পর্যায় (সিআইবিআরআর-২)' শীর্ষক প্রকল্পের বিপরীতে ৩ হাজার কোটি টাকার সামাজিক প্রভাবযুক্ত সার্বভৌম সুকুক, বিজিআইএস-৫ ইস্যু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে বলেন, "অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে টেকনিক্যাল কমিটি বৃহস্পতিবার বিজিআইএস-৫ সুকুকের কাঠামো চূড়ান্ত করেছে। এটি শীঘ্রই ইস্যু করা হবে।
তিনি বলেন, "এই সুকুকের কাঠামো বিশেষভাবে ব্যতিক্রমী, কারণ এটি ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারী ও প্রবাসীদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। এই লক্ষ্যভিত্তিক পরিকল্পনা সুকুক বিনিয়োগের পরিধি বাড়ানোর কৌশলগত প্রচেষ্টার প্রতিফলন। এটি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরিতে এবং এই গুরুত্বপূর্ণ জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে সহায়ক হবে।"
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সুকুকের মোট মূল্যের ৭০ শতাংশ বরাদ্দ করা হবে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য।
অন্য ১০% বরাদ্দ করা হবে প্রচলিত ব্যাংকের ইসলামি শাখা ও উইন্ডোগুলোর জন্য। বাকি ২০ শতাংশ বরাদ্দ থাকবে ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারী, প্রভিডেন্ট ফান্ড, ডিপোজিট ইনসুরেন্স স্কিম এবং অন্যান্য খাতের জন্য।
তবে, এই শ্রেণিগুলোর মধ্যে প্রয়োজনীয় সাবস্ক্রিপশন পূরণ না হলে অবশিষ্ট সুকুক অনুপাতিকভাবে পুনর্বণ্টন করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, স্থানীয় ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীরা তাদের স্থানীয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে পারবেন। প্রবাসী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে কার্যরত যে কোনো ব্যাংকের নন-রেসিডেন্ট বিদেশি মুদ্রা অ্যাকাউন্ট বা নন-রেসিডেন্ট টাকার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অংশ নিতে পারবেন।
এছাড়া, প্রবাসীরা চাইলে তাদের বিনিয়োগকৃত মূলধন এবং অর্জিত মুনাফা নিজ দেশে ফেরত নিতে পারবেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সিআইবিআরআর-২ প্রকল্পের আওতায় এই সুকুক ইস্যু করা হবে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য, গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ উন্নত করা, প্রকল্প এলাকার সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন করা, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা, কৃষি ও অ-কৃষি পণ্য পরিবহনে খরচ কমানো এবং স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।