রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না, বাণিজ্য উপদেষ্টার আশ্বাস
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/03/sheikh_bashir-uddin_akij.png)
মার্চে শুরু হতে যাওয়া রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়বে না বলে আশ্বস্ত করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। রমজানে নিত্যপণ্যের কোনো সংকট হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে দৈনিক বণিক বার্তা আয়োজিত খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণবিষয়ক এক নীতিসংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, 'ভোগ্যপণ্য আমদানিতে বড় প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছিল এস আলম গ্রুপ। তাদের অনুপস্থিতিতে অংশীজনদের নিয়ে ব্যবস্থাপনা করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে বড় কোনো বিপত্তি এখনো হয়নি। আশাকরি রমজানে কোনো সমস্যা হবে না। আমি নিশ্চিত করতে চাই, বাজারে কোনো পণ্যের সংকট নেই।'
'খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক দাম: বাজার তত্ত্বাবধানের কৌশল অনুসন্ধান' শিরোনামে এই সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। সংলাপটি সঞ্চালনা করেন বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাজারে তেল, চিনি, ছোলা ও খেজুরের সংকট নেই। আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য বাড়বে না। দেশে আমদানি ব্যবস্থা ও মজুত যথেষ্ট আছে। ইনশাআল্লাহ রমজান উপলক্ষে কোনো সমস্যা হবে না। আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের যে দাম দেখছি, তাতে দেশে দাম কমার কথা। বাড়ার কোনো কারণ দেখি না। আমি আশা করি, আমি এ কাজটা করতে পারবো।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা প্রতিযোগিতা কমিশনকে পুরোপুরি স্বাধীন করে দিতে চাই। বাজারে যাতে প্রতিযোগিতাবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড না ঘটে। মন্ত্রণালয়ের সেখানে কোনো হস্তক্ষেপ যেন না থাকে, সেদিকে আগাতে চাই। স্বল্প নয়, দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা গ্রহণ করা আমাদের প্রয়োজন। ধান সংগ্রহে সরকারি সংগ্রহটা সীমিত করতে চাই। সরকারি সংগ্রহ আমদানিনির্ভর হওয়া উচিত। তাহলে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে এবং দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাবে
তিনি বলেন, আমাদের নীতিগুলো ধনিক শ্রেণিকে সুবিধা দেওয়ার জন্য হয়েছে। ভোক্তা বা সাধারণ মানুষকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব নীতি গ্রহণ হয় না। বিগত ১৫ বছর দেশে উল্লেখযোগ্য কোনো বিনিয়োগ হয়নি। যদি সেটি না হয় তাহলে কর্মসংস্থান কীভাবে হবে? আমরা কার কাছ থেকে কর আদায় করবো?
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ব্যাংকগুলোকে গত ১৫ বছরে ক্রিমিনাল ইনস্টিটিউট হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। ইসলামী ব্যাংককে ধ্বংস করা হয়েছে। ব্যাংক আইনে দুর্বৃত্তায়ন করা হয়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (টিসিবি) ধ্বংস করা হয়েছে ১৫ বছর ধরে। ১২ হাজার কোটি টাকার একটা অপারেশন করে মাত্র ১৪২ জন। উপকারভোগীদের সংখ্যা ১ কোটি। শুনতে ভালোই লাগছে। কিন্তু আমরা যখন প্রাথমিকভাবে যাচাই করেছি, দেখলাম ৪৩ লাখ ভুয়া। আওয়ামী লীগের আমলে একই বাড়িতে একাধিক কার্ড গেছে। যাঁরা দালানবাড়িতে থাকেন, তাঁদের হাতেও কার্ড আছে। এগুলো সংশোধন করা হবে।
তিনি বলেন, আমার ধারণা, টিসিবির উপকারভোগী এক্সট্রা লেভেলে যাচাই করলে আরো ২০-২৫ লাখ ভুয়া পাওয়া যাবে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা টিসিবির টেন্ডারে অংশ নেন না। আমি অনুরোধ করছি আপনারা অংশ নিন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, টিকে গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মাদ মুস্তাফা হায়দার চৌধুরী, সিটি গ্রুপের এমডি মোহাম্মদ হাসান, পোলট্রি খাতের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কাজী ফার্মসের পরিচালক কাজী জাহিন হাসান।