আফগানিস্তান থেকে বিপদগ্রস্ত দোভাষীদের সরিয়ে নেবে যুক্তরাষ্ট্র
আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাবাহিনীর অবস্থানকালে যেসব আফগান দোভাষী তাদের হয়ে কাজ করেছেন এবং এই মুহূর্তে জীবনের ঝুঁকিতে আছেন, তাদের ওই দেশ থেকে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে 'অপারেশন অ্যালিস রিফিউজি'র কাজ শুরু হবে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সকল মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সমগ্র আফগানিস্তানের অধিকাংশ এলাকার দখল নিয়েছে তালেবান।
এক সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেন, 'তারা খুব সাহসী মানুষ। গত কয়েক বছরে তারা যে ভূমিকা পালন করেছেন, আমরা সেটই মূল্যায়ন করতে চাই।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে ২৫০০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হবে। ভিসা প্রক্রিয়ার সময়টাতে তাদেরকে সামরিক বাহিনীর আওতাধীন স্থানে থাকতে দেওয়া হবে; তবে সেটা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র কিংবা তৃতীয় বিশ্বের কোনো দেশেও হতে পারে।
২০০১ সাল থেকে আফগানিস্তান যুদ্ধের সময় মার্কিন সেনাবাহিনীর হয়ে কিংবা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে কাজ করেছেন, এমন মানুষদের জন্য এই 'বিশেষ অভিবাসী ভিসা প্রোগ্রাম' চালু করা হয়েছে।
আফগানিস্তানজুড়ে তালেবান আগ্রাসনে ইরান, তাজিকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের সাথে একাধিক সীমান্ত ক্রসিং দখলে নেওয়ার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানমালের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
গত বুধবার তালেবান যোদ্ধারা কান্দাহারের নিকটবর্তী প্রধান ক্রসিং- স্পিন বোলডাক ক্রসিংয়ে নিজেদের পতাকা উড়িয়েছে বলে জানা যায়।
তালেবানদের আক্রমণে আফগান সামরিক বাহিনী পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। ২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা পাঠানোর মূল হোতা, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ সতর্ক করেছেন, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পরিণাম হবে 'অবিশ্বাস্যরকম খারাপ'।
চলতি সপ্তাহে জার্মান সম্প্রচারক প্রতিষ্ঠান ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বুশ বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষকে একটি নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে মার্কিন আক্রমণ আসার আগ পর্যন্ত আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ ছিল তালেবানের হাতে। এ সময় তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সাংস্কৃতিক নিপীড়ণের অভিযোগ ওঠে।
অভিযুক্তদের জনসম্মুখে হত্যা করা, টেলিভিশন, গান ও চলচ্চিত্র নিষিদ্ধ করা এবং ১০ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করা ইত্যাদি নানা রকম শাস্তি চাপিয়ে দিত তারা।
-
সূত্র: বিবিসি