আরব বিশ্বের প্রথম আন্তঃগ্রহ মহাকাশযানের সফল উৎক্ষেপণ করেছে আমিরাত
মঙ্গলগ্রহের অভিমুখে নিজেদের 'হোপ প্রোব' শীর্ষক মহাকাশযান সফলতার সাথে উৎক্ষেপণ সম্পন্ন করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। খারাপ আবহাওয়ার কারণে নির্ধারিত সময়ের এক সপ্তাহ পর ,গত রোববার জাপানের তানেগাশিমা মহাকাশ কেন্দ্র থেকে মহাকাশযানটি সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়।
উৎক্ষেপণের পর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ছেড়ে উর্ধগামী মহাকাশযান থেকে তিনটি বুস্টার রকেট (গতিবর্ধনে সহায়ক) সঠিক সময়ে বিচ্ছিন্ন হয়। এবং তারপর যানটির সঙ্গে দুবাইয়ে অবস্থিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে।
এটি আরব বিশ্বের প্রথম আন্তঃগ্রহ মহাকাশ অভিযান। একইসঙ্গে, চলতি বছরের গ্রীষ্মে মঙ্গল অভিমুখে যে তিনটি আন্তর্জাতিক মিশন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে, এটি ছিল তাদের মধ্যে প্রথম।
আরবিতে মহাকাশযানটির মূল অংশ বা প্রোবের নাম রাখা হয়েছে 'আল আমাল'। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি নাগাদ আল আমাল মঙ্গলের কক্ষপথে পৌঁছাবে। লাল রঙ্গা গ্রহটির কক্ষপথে এক মঙ্গলবর্ষ (পৃথিবীর ৬৮৭ দিনের সমান) অবস্থান করে, গ্রহটির বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পৃথিবীতে পাঠাবে এটি।
সফল উৎক্ষেপণের পর হোপ মার্স মিশনের আনুষ্ঠানিক অ্যাকাউন্ট থেকে করা টুইটে বলা হয়, 'গভীর মহাশূন্যে অভিযান চালানোর বৈশ্বিক প্রচেষ্টার অংশ হতে পেরে আমরা গর্ব অনুভব করছি। মহাকাশের অজানা রহস্য জানতে মানবজাতি আজ পর্যন্ত যত অভিযান চালিয়েছে, হোপ প্রোব সেসব প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতার ফসল।''
চলতি গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনও মঙ্গল অভিযান চালাবে। নাসার প্রিজারভেন্স রোভার এবং চীনের তিয়ানওয়েন ১ যথাক্রমে চলতি বছরের জুলাই এবং আগস্টে উৎক্ষেপণ করা হবে। তবে আবহাওয়া এবং কারগরি কারণের উপর নির্ভর করবে উৎক্ষেপণের নির্দিস্ট তারিখ।
আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন; তিন দেশই এমন সময়ে মহাকাশ অভিযান চালাচ্ছে যখন সুর্যকে কেন্দ্রকে আবর্তনের সময় পৃথিবী এবং মঙ্গলের কক্ষপথে অবস্থান দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে কাছাকাছি রয়েছে। এরফলে যাত্রাপথ অনেকটাই কমেছে।
নাসা আমিরাতের অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে। প্রিজারভেন্স মিশনের আনুষ্ঠানিক টুইটার অ্যাকাউন্টে অভিনন্দন বার্তায় বলা হয়, ''মঙ্গলের পথে তোমার শুভজাত্রা কামনা করছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই আমরা দুজন মিলে মঙ্গলের রহস্য অনুসন্ধানে অংশ নেব। রোমাঞ্চকর এই অভিযানে অংশ নেওয়ার জন্য আমিও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।''