ইনস্টাগ্রামে হঠাৎ দুবাইয়ের 'নিখোঁজ' রাজকুমারী লতিফার ছবি
গত কয়েক মাস ধরে যার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি- দুবাই শাসকের সেই কন্যা প্রিন্সেস লতিফার একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে দেখা গেছে। এ সপ্তাহে দুইটি পাবলিক ইনস্টাগ্রাম আইডি থেকে প্রকাশিত ছবিতে প্রিন্সেস লতিফার দেখা মেলে।
প্রিন্সেস লতিফা হলেন দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের ২৫ ছেলেমেয়ের একজন।
২০১৮ সালের ফেব্রয়ারি মাসে পারিবারিক বিধিনিষেধ ভাঙার চেষ্টায় পালাতে গিয়ে তিনি ভারত মহাসাগরে এক নৌকায় ধরা পড়েন এবং কমান্ডোরা তাকে দুবাইয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
শেখ আমিরাতকে চাকচিক্যময় এক নগর মনে হলেও, আমিরাতের নারীদের জন্য দেশটির আইন ও রীতিনীতি তাদের জীবনকে সীমাবদ্ধ করে দুঃসহ করে তোলে।
"আমার গাড়ি চালানোর অনুমতি নেই, দুবাই ভ্রমণ বা দুবাই ত্যাগের অনুমতিও নেই আমার," পালিয়ে যাওয়ার আগে রেকর্ড করা একটি ভিডিওতে বলেছিলেন লতিফা।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে, লতিফা যখন নয় মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত চাপের মুখে পড়েছিল। জাতিসংঘ লতিফার জীবিত থাকার প্রমাণ পেশের অনুরোধ জানায়। অন্যথায় লতিফা মারা গেছেন এমন উদ্বেগকে সত্য ধরে নিয়ে সামনে এগুনোর কথা জানানো হয়।
তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও দুবাই সরকার বারবার জানিয়েছে লতিফা তার পরিবারের ভালোবাসায় নিরাপদেই আছেন।
এ বছর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে বিবিসির প্যানোরমা অনুষ্ঠানে লতিফার একটি গোপন ভিডিও বিবৃতি প্রচারিত হয়েছিল। সেখানে প্রিন্সেস লতিফা তার পিতার বিরুদ্ধে তাকে জিম্মি করে রাখার অভিযোগ এনেছিলেন; নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কার কথাও জানান তিনি।
এদিকে বিবিসি ইন্সটাগ্রামের ছবিটির সত্যতা যাচাই করতে পারে নি এবং এরপর আর কোন তথ্যও সরবরাহ করা হয়নি। তবে লতিফার এক বন্ধু নিশ্চিত করেছেন যে ছবিতে প্রিন্সেস লতিফাকেই দেখা গেছে।
বিবিসির মতে, এভাবে ছবিটির উপস্থিতি কোন এলোমেলো ঘটনা বা দুর্ঘটনা নয়, বরং ছবিটি যদি সত্য হয় তাহলে প্রিন্সেস লতিফা যে এখনও বেঁচে আছেন এটি হবে তার একটি প্রমাণ।
ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ওই ছবিতে দেখা যায়, 'নিখোঁজ' প্রিন্সেস লতিফা দুবাইয়ের একটি শপিংমলে তার দুই বন্ধুর সঙ্গে বসে আছেন। প্রিন্সেস লতিফার পরিচিত কয়েকজন জানিয়েছেন যে তারা প্রিন্সেস এবং তার সাথে থাকা অন্যদের চিনতে পারছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লতিফার পাশে থাকা সে দুই নারীর একাউন্ট থেকেই ছবিটি পোস্ট করা হয়, তাদের একজন ছবিটির নিচে মন্তব্যের ঘরে লেখেন, 'শপিংমলে বন্ধুদের সাথে কাটানো চমৎকার একটি সন্ধ্যা'।
ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত ছবিটিতে প্রিন্সেস লতিফার পেছনে গত ১৩ই মে মুক্তি পাওয়া 'ডেমন স্লেয়ার: মুগেন ট্রেন' নামক একটি সিনেমার বিজ্ঞাপন দেখা গেছে।
এক বিবৃতিতে 'ফ্রি লতিফা ক্যাম্পেইন গ্রুপ'র সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড হাই বলেছেন, "আমরা নিশ্চিত যে আমাদের প্রচারাভিযানের ফলে সম্ভাব্য উল্লেখযোগ্য ও ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। আমরা এখন আর কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছি না, উপযুক্ত সময়ে আমাদের পক্ষ হতে বিবৃতি প্রদান করা হবে"।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও তাতে সাড়া দেয়নি সংযুক্ত আরব আমিরাতের লন্ডন দূতাবাস।
জাতিসংঘও ছবিটির বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তবে বিবিসিকে তারা জানায় যে, তারা লতিফার বেঁচে থাকার সুস্পষ্ট প্রমাণের অপেক্ষায় আছে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতই তা সরবরাহ করবে।
- সূত্র- বিবিসি