গ্রেপ্তারের আগে এনএলডি মুখপাত্রের সাথে কথোপকথন
গত বছরের ৮ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে প্রেসিডেন্ট উইন মিং, অং সান সু চি এবং ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি'র (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের আটক করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী (তাতমাদাও)।
তাদের আটকের পরই এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থার ঘোষণা দেয় সশস্ত্র বাহিনী। জরুরি অবস্থা জারি থাকাকালীন দেশটির ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার ইন-চিফ সেনাবাহিনীর সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের হাতে। অস্থায়ীভাবে ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইউ মিন্ট সোয়েকে।
ভোট অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের কাজের জন্য ইউনিয়ন ইলেকশন কমিশন (ইউইসি) পুনর্গঠন করার ঘোষণাও দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী জানিয়েছে পুনরায় নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।
গ্রেপ্তারের আগে বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যতে কী হতে পারে এনিয়ে মিয়ানমার টাইমসের সাথে কথা বলেছেন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির মুখপাত্র ইউ মিও নয়েন্ট। মিও নয়েন্টের সাথে মিয়ানমার টাইমসের কথোপকথন তুলে ধরা হলো।
- আজ সকালের ঘটনার ব্যাপারে বলুন।
নয়েন্ট: নায় পি-তাও থেকে প্রেসিডেন্ট উইন মিং ও রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি-কে আটক করা হয়েছে। শান হ্লাতোর চিফ মিনিস্টার, কায়াহ ও আয়েয়ারওয়াদির নেতাদেরও আটক করা হয়েছে। বোগালে ও লাবুট্টা অব আয়েয়ারওয়াদির সংসদ সদস্যদের আটক করা হয়েছে এমন খবরও পেয়েছি আমরা।
- আপনি এখন কী ভাবছেন?
নয়েন্ট: আমাকেও আটক করা হতে পারে। কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির দুজন সদস্য ইউ থেইন ও এবং ইউ হান থার মিন্ট-কে ইতোমধ্যে আটক করা হয়েছে।
- বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাপারে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী?
নয়েন্ট: আমরা যদি সম্পূর্ণভাবে বিদ্যমান আইন মেনে চলতাম তাহলে এমনটা হতো না। তবে এটি পরিষ্কার যে, অভ্যুত্থান কখনোই সঠিক পন্থা নয়।
- এটি কি সামরিক অভ্যুত্থান?
নয়েন্ট: সংশ্লিষ্ট সকলের অনুমতি ছাড়া আমরা একে এখনই অভ্যুত্থান হিসেবে শ্রেণীকরণ করতে পারছি না। প্রেসিডেন্টের অনুমতি ছাড়া অভ্যুত্থানএ ঘোষণা দেওয়া যায় না।
- সংবিধান কি বিলুপ্ত হয়েছে?
নয়েন্ট: লিপিবদ্ধ প্রশাসন ও বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদেরও যদি আটক করা হয়, তখন বলা যায় সংবিধান বিলুপ্ত হয়েছে।
- সামনে কী অপেক্ষা করছে?
নয়েন্ট: এমন ঘটনা প্রত্যাশিত নয়, তবে আমরা সবসময়ই জানতাম যে কোনো সময়ে এধরণের পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল। মিয়ানমারের শাসনপত্রে কিছুটা জটিলতা আছে। আমরা বিশ্বাস করি আইন অনুসরণ করেই আমরা সিস্টেমের পরিবর্তন করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবো। কিন্তু কেউ যদি আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করে বা নিজের মতো করে আইনের ব্যাখ্যা দাঁড় করায়- সে দায়ভার তার ওপরেই বর্তায়।
- নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ সমাধানের ব্যাপারে এনএলডি ও তাতমাদাওয়ের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি?
নয়েন্ট: আলোচনা হয়েছিল, কিন্তু আমি এব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানিনা। ভুল ভোটার তালিকার অভিযোগ নিয়েই জটিলতা সৃষ্টি হয় এবং এর প্রেক্ষিতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতমাদাও। আমাদের শাসনপত্র ও আইনানুযায়ী নির্বাচন কমিশন সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। তবে তাতমাদাও বোধহয় এব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আরও বিশদ ব্যাখ্যা চায়।
- সূত্র: মিয়ানমার টাইমস