জাতি, বর্ণ নির্বিশেষে ৩০ হাজার ব্যক্তির দেহে প্রয়োগ করা হচ্ছে অ্যাস্ট্রোজেনেকার প্রার্থী ভ্যাকসিন
বিশ্বের তৃতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করেছে ব্রিটিশ ওষুধ কোম্পানি অ্যাস্ট্রোজেনেকা। যুক্তরাষ্ট্রেও শেষ পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
তাদের মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান মডার্না ও ফাইজার-বায়োএনটেক ইতোমধ্যেই তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করেছে।
অ্যাস্ট্রোজেনেকা জানায়, তারা বিভিন্ন জাতি, বর্ণ ও অঞ্চলের ৩০,০০০ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে সংশ্লিষ্ট করেছে ট্রায়ালের কাজে। অংশগ্রহণকারীদের চার সপ্তাহের ব্যবধানে দুইটি ডোজ দেয়া হবে। ইতোমধ্যেই যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকায় অ্যাস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে, জাপান ও রাশিয়ায়ও ট্রায়াল শুরু করার পরিকল্পনা চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রে চালানো ট্রায়ালের জন্য অর্থায়ন করছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ এর বায়োমেডিকেল অ্যাডভান্সড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ এলার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ এর পরিচালক ড. ফ্রান্সিস কলিন্স এক বিবৃতিতে বলেন, ' একাধিক ভ্যাকসিনের ট্রায়াল সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে মহামারি থেকে মুক্তির পথ দেখাবে, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ তাই বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে সাহায্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ট্রায়ালে সাফল্য আসার সম্ভাবনা বেশি এমন ভ্যাকসিনেই আমরা বিনিয়োগ করছি।'
অ্যাস্ট্রোজেনেকা জানায়, বিশ্বজুড়ে ৫০,০০০ স্বেচ্ছাসেবীর ওপর ট্রায়াল চালানোর পরিকল্পনা আছে তাদের৷ লাতিন আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকাও এর আওতাধীন।
ভ্যাকসিনটির পরীক্ষামূলক নাম AZD1222। শিম্পাঞ্জির শরীরের সাধারণ সর্দিকাশি তৈরি করে এমন একটি ভাইরাসের জিনগত পরিবর্তন করে এই টিকাটি তৈরি করা হয়। অ্যাস্ট্রোজেনেকা ভ্যাকসিনটির লাইসেন্স নেওয়ার আগে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে তৈরি করা হয় ভ্যাকসিনটি।
প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে জানায়, ভ্যাকসিন অনুমোদন পাওয়ার পর কয়েক বিলিয়ন ডোজ উৎপাদন করার জন্য সরকার এবং অন্যান্য সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করবে তারা।
গত সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দেশগুলোকে দ্রুতগতিতে ভ্যাকসিন অনুমোদনের ব্যাপারে সতর্ক করেছে৷
চীন ও রাশিয়া লেট-স্টেজ ক্লিনিকাল ট্রায়াল শেষ হবার আগেই ভ্যাকসিন বাজারে ছাড়ার কথা জানায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশনের কমিশনার ড. স্টিফেন হান জানান, যুক্তরাষ্ট্র ট্রায়ালের ব্যাপারে পর্যাপ্ত তথ্য পেলে, ট্রায়াল শেষ হবার আগে অনুমোদন দিতে পারে।
অ্যাস্ট্রোজেনেকা ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক নীতি ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা প্রয়োজনীয় সব নিয়ম মেনেই এগুবে।
মডার্না ও ফাইজার-বায়োএনটেক এখনো ৩০,০০০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ করছে।