ডোরেমনের নবিতার নামে নতুন প্রজাতির ডাইনোসরের নামকরণ
গড়পড়তা মানের একটি চরিত্র, ডোরেমন কার্টুনের নবিতা। জনপ্রিয় এই চরিত্রটির নেই তথাকথিত কোনো চাকচিক্য, স্কুল পড়ুয়া নবিতার পড়ালেখায় ব্যাপক অনীহা, যে কোনো সমস্যায় পড়লেই কেঁদে একাকার করে সাহায্য চাইতে ছুটে যায় তার বেস্টফ্রেন্ড ডোরেমনের কাছে।
বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা এ চরিত্রটির নামে এবার সম্প্রতি সন্ধান পাওয়া একটি নতুন প্রজাতির ডাইনোসরের নামকরণ করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে চীনের বিজ্ঞানীরা ঘোষণা দিয়েছেন, গত বছর সন্ধান পাওয়া নতুন প্রজাতির ডাইনোসরের নাম রাখা হচ্ছে ইউব্রোন্তেস নোবিতাই (Eubrontes nobitai)। ডোরেমন কার্টুনের নোবিতার নামানুসারেই নোবিতাই নামটি রাখা হয়েছে।
বেইজিং এর চায়না ইউনিভার্সিটি অব পেট্রোলিয়ামের জার্নাল অব প্যালেঅন্টোলজিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
ডাইনোসরটি সন্ধান পাওয়া দলের সদস্য সহযোগী অধ্যাপক শিং লিডা কিয়োডো নিউজকে বলেন, চীনে ১৯৮০'র দশকে যারা জন্মেছিলেন তাদের শৈশবের অবিচ্ছেদ্য অংশ এই কার্টুনটি। একারণেই এই নামকরণ।
তিনি ওই সংবাদ সংস্থাকে আরও জানান, কার্টুনটিতে ডাইনোসরের চিত্রায়ন ছিল অসাধারণ। তা দেখেই অনেক শিশু-কিশোর প্রাগৈতিহাসিক এই প্রাণিটি সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
তিনি আরও জানান, ফসিলটির একটি রেপ্লিকা টোকিও ন্যাশনাল মিউজিয়াম ও ফুজিকো কো লিমিটেডে পাঠানো হয়েছে। ফুজিকো কো লিমিটেডই কার্টুনটির প্রযোজনা কোম্পানি। আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে রেপ্লিকা প্রদর্শনীর পরিকল্পনা করছে জাদুঘরটি।
২০২০ সালের জুলাইতে বিজ্ঞানীদের দলটি দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের সিচুয়ান প্রদেশে বেশকিছু পদচিহ্ন খুঁজে পায়। তারা ধারণা করছিলেন ওই পদচিহ্ন ক্রিটেসিয়াস যুগের কোনো ডাইনোসরের। ক্রিটেসিয়াস যুগেই ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়ে যায়।
এই চিহ্নগুলো স্থানীয়দের কাছেও সুপরিচিত ছিল। তবে তারা ভাবতে পারেননি এর সঙ্গে ডাইনোসরের সম্পর্ক থাকতে পারে। ওই অঞ্চলটিকে ফসিল আবিষ্কারের হটস্পট বলা যায়, বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন ওই অঞ্চলের লোককাহিনীতেও এর উল্লেখ আছে।
ডাইনোসরের এই প্রজাতি তাদের কিছু চিহ্ন ফেলে যাওয়ায় এই প্রজাতিটিকে বিজ্ঞানীরা ইকনোস্পেসিস হিসেবেই অভিহিত করেছেন।
ডাইনোসরটির বৈজ্ঞানিক নামের প্রথমাংশ ইউব্রোন্তেসের অর্থ জীবাশ্মযুক্ত ডাইনোসরের পদাঙ্ক।
১৯৬৯ সালে প্রথম ডাইনোসর কার্টুন প্রচার শুরু হয়। তখন থেকেই সমগ্র এশিয়া জুড়ে পপ সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান জনপ্রিয় অংশ হিসেবে কার্টুনটি স্থান করে নেয়। আজ ৫২ বছর পরেও প্রায় সবখানেই কার্টুনটির চরিত্রগুলোর আদলে বানানো নানা ধরনের সৌখিন জিনিস চোখে পড়ে।
ডোরেমন হলো একটি রোবটিক বিড়াল। নবিতা ও তার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবন আরও সহজ ও সুন্দর করে তুলতে ডোরেমনকে ২২ শতাব্দী থেকে অতীতের পৃথিবীতে পাঠানো হয়।
ডোরেমন ও নবিতা দুটি চরিত্রই গড়পড়তা ধরনের চরিত্র। ডোরেমনের কাজের সময় যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য সে অতীতের পৃথিবীতে চলে আসে। অন্যদিকে নবিতা চরিত্রটি আর দশজন সাধারণ শিশুর চেয়ে বিভিন্ন কাজে দুর্বল হলেও তার দয়াশীলতা ও সাহসের জুড়ি মেলা ভার। অন্যান্য বন্ধুদের সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার করে বেড়ানো তাদের অন্যতম কাজ, এ নিয়েই আবর্তিত হয় কার্টুনটির গল্প।
- সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট