তালেবানকে মার্কিন ও আফগান নাগরিকদের ‘হত্যা তালিকা’ হস্তান্তরের বিষয়ে ব্লিংকেনের অস্বীকৃতি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তালেবানকে আমেরিকান এবং আফগান বাস্তুচ্যুতদের নামের একটি তালিকা দিয়েছে বলে উঠে আসে সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে। এ তালিকাটি তালেবানরা তাদের প্রতিশোধের জন্য "হত্যা তালিকা" হিসাবে ব্যবহার করতে পারে বলে পলিটিকো'কে জানান নাম না জানা একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা।
তবে, তালিকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। গত রোববার (২৯ আগস্ট) এনবিসির চাক টডের সাথে সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
ব্লিংকেন বলেন, তালেবানকে সে সকল ব্যক্তিদের তালিকা দেওয়া হয় যাদের পূর্বশর্ত কাগজপত্র বা ভ্রমণের সঠিক নথিপত্র নেই। তালেবানরা যাতে তাদের পরিচয় যাচাই করতে পারে এবং কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে চেকপয়েন্টগুলো দিয়ে তাদেরকে যেতে দেয়, সে উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয় এ তালিকা।
তিনি আরও বলেন, "দেশ ত্যাগের ক্ষেত্রে আপনাকে একটি ম্যানিফেস্ট দেখাতে হবে। এ অবস্থায় যাদের কাছে প্রয়োজনীয় নথি নেই তাদের তালিকা বা তারা যে সকল বাসে রয়েছে সেটির তালিকা প্রকাশ করতে হবে আপনাকে। এর মাধ্যমে তালেবানকে আশ্বস্ত করা যাবে যে, এ সকল মানুষকে আমরা ফিরিয়ে আনতে চাইছি।"
"আমরা যে কাউকে আরও বিপদে ফেলব, এই ধারণাটি ভুল," যোগ করেন তিনি।
তবে, বিমানবন্দরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৬৯ জন আফগান এবং ১৩ জন মার্কিন সেনা নিহতের ঘটনার পরেও বিমানবন্দরের আশেপাশে নিরাপত্তা প্রদানের জন্য তালেবানের উপর নির্ভর করছে আমেরিকান প্রশাসন।
এছাড়া ব্লিংকেন জানিয়েছেন, ১৫ আগস্ট তালেবানরা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটি থেকে ৫,৫০০ জন মার্কিন নাগরিককে সরিয়ে নিয়েছে আমেরিকা। তবে এখনো সেখানে প্রায় ৩৫০ জন আমেরিকান রয়েছে বলে অনুমান করছে পররাষ্ট্র দপ্তর।
প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে জো বাইডেন বলেন, "বোমা হামলার ঘটনা তালেবান ও আইএসআইএসের সম্মিলিত যোগসাজশে হয়েছে, সেরকম কোনো তথ্য-প্রমাণ আমাদের কোনো কমান্ডার এখন পর্যন্ত আমাকে দেয়নি।"
"তালেবানকে কেউ বিশ্বাস করে না; আমরা কেবল তাদের বিভিন্ন স্বার্থের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন কাজ করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি," বলে যোগ করেন তিনি।
এদিকে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, বৃহস্পতিবারের বোমা হামলার পর কাবুলে আরেকটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে শুক্রবার জানানো হয়।
প্রতিরক্ষা বিভাগ আরও জানায়, আফগানিস্তান থেকে সর্বমোট ১ লাখ ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষকে ইতোমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশটি থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নেওয়ার সময়সীমা ৩১ আগস্ট নির্ধারিত হওয়ায় সেখানে থাকা বাকি লোকদেরকে নিয়ে আসার জন্য দু'দিনেরও কম সময় রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে।
- সূত্র: ইনসাইডার