দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য একশ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের প্রতিশ্রুতি কোয়াডের
২০২২ সালের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য এক বিলিয়ন বা শতকোটি ডোজ করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারত।
২০০৭ সালে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের আগ্রাসী পররাষ্ট্র নীতি মোকাবিলার জন্য চারটি দেশ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত 'কোয়াড' (দ্য কোয়াড্রিলেটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ)-এর প্রথম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেন দেশগুলোর নেতারা।
এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের টিকা সরবরাহ করা হতে পারে দেশগুলোতে, যা উৎপাদন করা হবে ভারতে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা ভ্যাকসিনের সরবরাহই এই 'বিশাল যৌথ প্রতিশ্রুতি'র মূল লক্ষ্য।
ভার্চুয়াল সম্মেলনের পর মার্কিন জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, "ভারতীয় উৎপাদন, মার্কিন প্রযুক্তি, জাপানি ও আমেরিকান অর্থায়ন এবং অস্ট্রেলিয়ান রসদ সরবরাহের মধ্য দিয়ে ... [আমরা] এক বিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় জাতি সংস্থার (আসিয়ান) দেশগুলোর পাশাপাশি প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ছাড়িয়েও এ ভ্যাকসিন পৌঁছাবে বলে জানান তিনি।
আসিয়ান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দশটি রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্থা যা ৫০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইন সবাই এর সদস্য।
ভারতীয় সংস্থা বায়োলজিক্যাল লিমিটেড জনসন অ্যান্ড জনসন ভ্যাকসিনের অতিরিক্ত ডোজগুলো উৎপাদন করবে; শুক্রবার এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক অনুমোদন পেয়েছে।
এই বৈঠক শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইটারে লিখেছেন, "জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ার সহায়তায় ভারতে এই শক্তিশালী ভ্যাকসিনের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো হবে।"
মোদি আরও জানিয়েছেন এদিনের আলোচনায় ভ্যাকসিন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং উদীয়মান প্রযুক্তিও ছিল এজেন্ডার অংশ।
ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, "চারটি দেশ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন উৎপাদন ও বিতরণ জোরদার করার জন্য তাদের আর্থিক সংস্থান, উৎপাদন ক্ষমতা... এবং রসদ সরবরাহের পরিকল্পনায় সম্মত হয়েছে"।
বৈঠকের সভাপতিত্বকারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেন, "আমাদের এ অঞ্চলটি যে আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা পরিচালিত এবং এটি সর্বজনীন মূল্যবোধকে সমর্থন করে ও কারো ওপর চাপানো বা জবরদস্তি করার প্রক্রিয়া থেকে বিরত, সেটির প্রতিশ্রুতিই আমরা আজ নবায়ন করছি।"
বৈঠকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের প্রভাব বিস্তারকে মোকাবিলার ব্যাপারেও আলোচনা হয়।
ভার্চুয়াল এ আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা।
২০০৪ সালে সুনামি-পরবর্তী সময় যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের মধ্য দিয়ে এই চারটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মধ্যে সৌহার্দ্য গড়ে ওঠে।
- সূত্র: বিবিসি