নাইজেরিয়ার রাজকীয় বিয়ে: ব্যক্তিগত জেট, গ্লিটজ ও গ্ল্যামার
গত শনিবার (২১ আগস্ট) নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপতির ছেলে এবং দেশটির বিশিষ্ট একজন ধর্মীয় নেতা আদো বায়েরের মেয়ের বিয়ে হয়েছে দেশটির কানো শহরে। তাদের বিয়ে উপলক্ষ্যে উত্তর নাইজেরিয়ার এই শহরটিতে ব্যক্তিগত বিমানে করে জমায়েত হয়েছিলেন নাইজেরিয়া এবং পশ্চিম আফ্রিকার বিশিষ্ট সব ব্যক্তিবর্গ।
ইউসুফ বুহারির জহরা সঙ্গে নাসির বায়েরোর বিয়ে এ বছরে দেশটির অন্যতম বড় অনুষ্ঠান। বিয়েটি অনুষ্ঠিত হয়েছে কানো রাজ্যের বিচি শহরের আমিরের প্রাসাদে। কয়েক হাজার মানুষ বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
একজন ইতিহাসবিদ বিবিসিকে জানিয়েছেন, নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপতি পরিবার এবং রাজপরিবারের মধ্যে এই বিয়ের অনুষ্ঠান ছিলো নজিরবিহীন।
যুক্তরাজ্যের সারে বিশ্ববিদ্যালয়ে এই জুটির দেখা হয়। শনিবারে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার মাঝেই কনের বাবা নাসির আদো বায়েরেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচি শহরের আমিরাত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তার ভাইও কানো রাজ্যের আমিরাত এবং নাইজেরিয়ার অন্যতম বিশিষ্ট ইসলামী নেতা।
তবে, নবদম্পতি সেই অনুষ্ঠানে আসেননি।
বরের পরিবার কনেকে মোহরানা হিসেবে পাঁচ লক্ষ নাইরা (১২০০ ডলার, ৯০০ ইউরো) দিয়েছে, যা উত্তর নাইজেরিয়ায় গড় পরিমাণের চেয়ে প্রায় দশ গুণ বেশি।
বিবিসির নাইজেরিয়া প্রতিবেদকের তথ্য অনুযায়ী, কনের বিয়ের আগের ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল; কেউ কেউ তার পোশাককে "অনৈতিক" বলে সমালোচনা করে, কারণ তার কাঁধ উন্মুক্ত ছিল। তবে, অনেকেই আবার সেই সমালোচনার পাল্টা প্রতিবাদও করেছে।
যদিও কিছু প্রতিবেদনে বলা হয় অনুষ্ঠানে কমপক্ষে ১০০ টি বেসরকারি জেট বিমান বিমানবন্দরে অবতরণ করেছিলো, তবে বিমানবন্দরের একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, বিমানের সংখ্যা আসলে ৫০ টিরও কম ছিলো।
তবুও বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিয়ের আয়োজন সীমিত পরিসরে করা হয়েছে। অতিথিদের মধ্যে অনেকেই মাস্ক পরতে দেখা যায়।
বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ এবং সামরিক কর্মকর্তাদের প্রাসাদ পাহারা দেওয়াসহ কাছাকাছি কৌশলগত স্থানগুলোতেই অবস্থান করতে দেখা যায়।
বিয়ের অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন যোগাযোগমন্ত্রী ঈসা আলি পান্তামি। তিনি মন্ত্রী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একজন ইমামও। দেশের অনেক রাজনৈতিক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন প্রেসিডেন্ট মুহম্মদু বুহারির পূর্বসূরি গুডলাক জোনাথন, যাকে তিনি ২০১৫ সালের নির্বাচনে পরাজিত করেছিলেন।
বিদেশি অতিথিদের মধ্যে ছিলেন গাম্বিয়ার ফার্স্ট লেডি ফাতুমাতা বাহ ব্যারো এবং প্রতিবেশী নাইজারের সাবেক প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু ইসোফু।
- সূত্র: বিবিসি