রেমডেসিভির মৃত্যুহার বা গুরুতর অসুস্থতা কোনোটাই রোধ করতে পারে না
কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসায় একাধিক দেশে ব্যবহার অনুমোদন পেয়েছে জিলিয়াড ফার্মার রেমডেসিভির ওষুধ। তবে এটি কোভিড আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুহার কমাতে পারে না, বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। এমনকি হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর অসুস্থদের সেরে ওঠার গতিও বাড়াতে পারে না ওষুধটি।
হু' তাদের নিজস্ব এক গবেষণার ভিত্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। তবে এখনও ওই ফলাফল পুনঃপর্যালোচনার মাধ্যমে ক্ষতিয়ে দেখা শেষ হয়নি।
ইতোপূর্বে, বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থাটি 'সলিডারিটি থেরাপিউট্যিকস' শীর্ষক এক ট্রায়াল শুরু করে। এর আওতায় রেমডেসিভির, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী হাইড্রোক্লোরোকুইন, এইচআইভি প্রতিরোধী ওষুধ লোপিনাভির/রিটোনাভির এবং ইন্টাফেরনের কোভিড বিরোধী কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়। প্রায় ৩০টি দেশের ১১,৩২৬ জন আক্রান্ত রোগীর মধ্যে এসব ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে।
সেই ট্রায়ালেরই মধ্যবর্তী ফল প্রকাশ করেছে হু। এ প্রসঙ্গে দেওয়া এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, ''রেমডেসিভির, হাইড্রোক্লোরোকুইন, এইচআইভি, লোপিনাভির/রিটোনাভির এবং ইন্টাফেরন প্রয়োগে রোগীদের অবস্থা উন্নতিতে খুব সামান্যই প্রভাব ফেলেছে। কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে তাও ঘটেনি। গুরুতর আক্রান্তদের ২৮ দিনের মধ্যে প্রাণ সংশয়ের ঝুঁকি থাকে। সেই মৃত্যুহার কমিয়ে আনা বা তাদের হাসপাতাল থেকে মুক্তি পাওয়ার মতো সুস্থতাও এনে দিতে পারনি ওষুধগুলো।''
মধ্যবর্তী ফলাফল সকলের জন্য উন্মুক্ত রেখেছে হু। medRxiv সাইটে গিয়ে যে কেউ তা দেখতে পারবেন।
এর আগে অবশ্য বার্তা সংস্থা রয়টার্স প্রকাশিত এক সংবাদে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে রেমডেসিভির গ্রহণের পর কোভিড রোগীদের সেরে ওঠার হার পাঁচদিন পর্যন্ত কমেছিল।
হু'র সাম্প্রতিক গবেষণা নিয়ে রেমডেসিভির প্রস্তুতকারক কোম্পানি জিলিয়াড সায়েন্সেস 'সন্দেহ পোষণ' করেছে।
এব্যাপারে জিলিয়াডের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, ''নতুন প্রাপ্ত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ নয়। ইতোমধ্যেই, শীর্ষ বিজ্ঞানীদের পর্যালোচনার আওতায় প্রকাশিত নানা স্বনামধন্য বৈজ্ঞানিক জার্নালে আমাদের বিস্তারিত গবেষণা সাফল্য তুলে ধরেছি। সেখানে নানা বয়স ও শারীরিক অবস্থার রোগীদের দেহে ওষুধটির কার্যকরি প্রভাব উঠে এসেছে।''
কোম্পানিটি রয়টার্সকে জানায়, ''গঠনমূলক বৈজ্ঞানিক আলোচনার জন্য নানা বিশেষজ্ঞের যে চুলচেরা বিশ্লেষণ দরকার নয়, সাম্প্রতিক সময়ের বৈশ্বিক ট্রায়ালটিতে তা করা হয়নি। তাই আমরা এর উপর আস্থা রাখতে পারছি না। তাছাড়া, পরীক্ষা পদ্ধতিতেও বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল।''
ইতোপূর্বে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করোনা চিকিৎসাতেও এটি ব্যবহার করা হয়েছিল, বলে রয়টার্স জানিয়েছে। গত মে'তে ওষুধটি জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের অনুমোদন দেয় মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)।
- সূত্র: রয়টার্স, স্ক্রল ডটইন