রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর চাপ দিতে জার্মানির প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে ফিরিয়ে নেবার সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে মিয়ানমারের ওপর চাপ দিতে জার্মানির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জার্মান সফররত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাসকে তাঁর এ আহ্বানের কথা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়।
শুক্রবার বার্লিনে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মোমেন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত নৃশংসতার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে জার্মানির সহযোগিতা চেয়েছেন।
বৈঠককালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাবিত চার দফা তুলে ধরেন। রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যেকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের জনতাত্ত্বিক সুবিধা এবং সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) জন্য আকর্ষণীয় বিনিয়োগ সুবিধা গ্রহণের জন্য জার্মান উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য জার্মান উন্নয়ন সহযোগিতা এবং দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান ব্যবসায়িক সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা হয়। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন।
হাইকো মাস অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অর্জনের প্রশংসা করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন জার্মানির ইকোনমিক কো-অপারেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রী ড. গ্রেড মুয়েলারের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠককালে মোমেন গ্রামীণ উন্নয়ন, প্রাথমিক শিক্ষা, বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলার মতো খাতে বাংলাদেশকে জার্মানির উন্নয়ন সহযোগিতার প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানা নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব উল্লেখ করে মোমেন বলেন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশ অসামান্য উন্নয়ন অর্জন করেছে।
বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি টেক্সটাইল পণ্যের ব্যাপারে পরিবেশ ও সামাজিক সচেতনতা উদ্যোগ হিসেবে জার্মানির ‘গ্রিন বাটন’ ইনশিয়েটিভে বিজিএমইএ-এর যোগদানের আগ্রহের কথা জানান।
মুয়েলার ‘গ্রিন বাটন’ স্কিমে যোগদানের ব্যাপারে বাংলাদেশের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জার্মান বিভিএমডব্লিউ-এর প্রেসিডেন্ট এবং ওয়ার্ল্ড এসএমই-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর মারিও ওহোভেন এবং জার্মান সরকারের গবেষণা ইনস্টিটিউট ফ্রেডরিক এভার্ট- স্টিফটাং (এফইএস)-এর মহাসচিব ড. রোল্যান্ড স্মিডটের সঙ্গে একই দিনে বৈঠকে মিলিত হন।
মোমেন অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারে এবং রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির জন্য চারটি ইউরোপিয়ান দেশ, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি এবং গ্রীসে দু’সপ্তাহের সফরে রয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগামীকাল ফ্রান্সের উদ্দেশে বার্লিন ত্যাগ করবেন।