সাংবাদিকদের ফোনে আড়ি পেতেছিল ট্রাম্পের বিচার বিভাগ
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের একাধিক সাংবাদিকের ফোন কলে আড়ি পেতেছিল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস বা বিচার বিভাগ'। গেল শুক্রবার সংবাদপত্রটি এই তথ্য জানায়।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, তাদের তিনজন রিপোর্টার (যারা এখন আর এই সংবাদপত্রে কাজ করেন না) যারা ২০১৬ সালের নির্বাচনের সময় রাশিয়ার ভূমিকা নিয়ে কাজ করেছিলেন, তারা ৩ মে আইন বিভাগ থেকে একটি করে চিঠি পেয়েছেন।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, চিঠিতে সাংবাদিকদের বলা হয়েছে 'আইনি প্রক্রিয়া অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ২০১৭ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত নিম্নলিখিত ফোন নম্বরগুলোর সাথে সংযুক্ত টোলের রেকর্ড হাতে পেয়েছে।'
ওয়াশিংটন পোস্টের সাবেক এই তিন সাংবাদিক হলেন-এলেন নাকাশিমা, গ্রেগ মিলার এবং অ্যাডাম এনটুস। পত্রিকাটি আরো জানায় , সাড়ে তিন মাস সময় ধরে এই তিনজন সাংবাদিক তাদের কর্মক্ষেত্রে, বাড়িতে ও ব্যক্তিগত সেলফোনে যেসব নম্বর ব্যবহার করেছিলেন সেগুলো চিঠিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল। পোস্ট-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস (ডিওজি) সাংবাদিকদের ই-মেইল রেকর্ডও হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালিয়েছিল।
ওয়াশিংটন পোস্ট-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কার্যনির্বাহী সম্পাদক ক্যামেরন বার সিএনএন-কে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেন, 'সাংবাদিকদের যোগাযোগের মধ্যে সরকারের এই অনধিকার হস্তক্ষেপ নিয়ে তারা গভীরভাবে চিন্তিত।'
বিবৃতিতে ক্যামেরন আরো বলেন, 'বিচার বিভাগের উচিত অতিসত্ত্বর সাংবাদিকদের কাজের মধ্যে তাদের এই অনধিকার প্রবেশের কারণ দেখানো।'
তবে বিচার বিভাগ সিএনএনকে দেয়া বিবৃতিতে নিজেদের কাজের সাফাই গেয়েছে।
বিচার বিভাগ বলে, 'গোপন তথ্য প্রকাশ হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে অপরাধী তদন্তের অংশ হিসেবে গণমাধ্যমের গাইডলাইন মেনেই গণমাধ্যম কর্মীদের টেলিফোন টোল রেকর্ড ও ই-মেইল খতিয়ে দেখার অধিকার রাষ্ট্রের বিচার বিভাগের আছে। এই তদন্তের টার্গেট গণমাধ্যমের গ্রাহকরা নন। বরং যাদের কাছে রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত তথ্য আছে ও গণমাধ্যমকে সেসব তথ্য দিয়েছেন, কিন্তু তারা সেই গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারেনি তারা এর টার্গেট। অন্য উৎস থেকে তথ্য নিতে ব্যর্থ হওয়ার পরই গণমাধ্যমের ফোন কল রেকর্ড ঘাঁটতে হয়েছে আমাদের।'
এদিকে 'রিপোরটার্স কমিউনিটি ফর ফ্রিডম অফ দ্য প্রেস'-এর কার্যনির্বাহী পরিচালক ব্রুস ব্রাউন বলেন, 'যখনি সরকার গণমাধ্যমের নিজস্ব যোগাযোগে আড়ি পাতে, তখনি তারা প্রথম সংশোধনী আইন ভঙ্গ করে। কারণ সেখানে জনস্বার্থে গণমাধ্যমের অবাধ তথ্য চলাচলের কথা বলা হয়েছে।'
সূত্র: সিএনএন